মিয়ানমারে বিদ্রোহীদের গুলিতে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত
মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে সংঘর্ষে সেনাবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর এবারই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন সামরিক জান্তার জন্য ঘটনাকে আরেকটি ধাক্কা বলে বর্ণনা করেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
মিয়ানমার সেনাবাহিনী এবং কারেন ন্যাশনালিটিজ ডিফেন্স ফোর্সের (কেএনডিএফ) মধ্যে লড়াইয়ের সময় গত শনিবার থাইল্যান্ডের সীমান্তের কাছে পূর্ব মিয়ানমারের কায়া রাজ্যের ওপর বিধ্বস্ত হয় এই যুদ্ধবিমান। কেএনডিএফ দাবি করেছে, তারা গুলি করে যুদ্ধবিমানটিকে বিধ্বস্ত করেছে।
জান্তার মুখপাত্র জাও মিন তুন রাষ্ট্রায়ত্ত প্রচারমাধ্যম এমআরটিভিকে বলেন, প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে যুদ্ধবিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে এবং পাইলটরা নিরাপদে বেরিয়ে গেছে। পাইলটেরা সেনাবাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল বলেও দাবি করেন তিনি।
যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনাটি ঘটেছে এমন এক সময়, যখন মিয়ানমার সামরিক বাহিনী একাধিক ফ্রন্টে বিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করছে। জাতিগত সংখ্যালঘু বাহিনী এবং জান্তাবিরোধী মিলিশিয়ারা বিদ্রোহ শুরু করেছে। নিরাপত্তা বিশ্লেষকেরা বলছেন, বিরোধী মিলিশিয়া এবং জাতিগত সংখ্যালঘু বাহিনীর মধ্যে অভূতপূর্ব সমন্বয় দেখা যাচ্ছে।
সেনাসমর্থিত মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট মিন্ট সোয়ে গত সপ্তাহে বলেন, কার্যকরভাবে বিদ্রোহ দমনে ব্যর্থতার কারণে মিয়ানমার যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।
চীনের সীমান্তবর্তী উত্তর-পূর্ব অঞ্চল শান রাজ্যে সংঘাতে অন্তত ৫০ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। সেখানে বাণিজ্য পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। গত মাসে তিনটি জাতিগত সংখ্যালঘু বিদ্রোহী গোষ্ঠী জান্তা-বিরোধী অভিযান শুরু করার পর থেকে বেশ কয়েকটি শহর দখল করে নিয়েছে। সংঘাত বন্ধের জন্য সব পক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে চীন।
বিদ্রোহী জোট দাবি করেছে, তারা ১০০টিরও বেশি সেনা ঘাঁটি দখল করেছে। শান রাজ্যের পশ্চিমে মধ্য মিয়ানমারের সাগাইং অঞ্চলের শহরেও হামলা চালানো হয়।
ভিয়েতনাম এবং থাইল্যান্ডের নাগরিকসহ শত শত বিদেশি কর্মী এই সহিংসতার মাঝে আটকা পড়ে আছে। অনেকেই মানব পাচারের শিকার হয়েছেন বলেও জানান হয় রয়টার্সের প্রতিবেদনে।
থাই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত শনিবার বলেছে, পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে তাদের ২০০ জন নাগরিককে যত দ্রুত সম্ভব মিয়ানমার থকে সরিয়ে নেওয়া হবে।