গাজার আল-শিফা হাসপাতালে ২ নবজাতকের মৃত্যু, ঝুঁকিতে আরো বহু প্রাণ
গাজার সর্ববৃহৎ হাসপাতাল আল-শিফা। যেখানে হাজার হাজার আহত এবং গৃহহীন ফিলিস্তিনি আশ্রয় নিয়েছে। সেই হাসপাতালটি অবরুদ্ধ করে রেখেছে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী। বিদ্যুৎ ও জ্বলানি সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় হাসপাতালটির কার্যক্রম সম্পূর্ণরূপে অচল হয়ে আছে।
হাসপাতালের নিও-নেটাল ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (এনআইসিইউ) ৩৯ থেকে ৪৫টি শিশুর চিকিৎসা চলছিল বলে জানিয়েছে হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
সংখ্যা নিশ্চিত হওয়া না গেলও সেখানে যে কয়েক ডজন নবজাতক শিশুর চিকিৎসা চলছিল যে বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই বলে জানিয়েছে বিবিসি। হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যে শিশুদের জীবনপ্রদীপ এখন নিভু নিভু।
চিকিৎসকদের একটি গ্রুপ সামাজিক যোগাযাগ মাধ্যম এক্স এ ধারাবাহিক পোস্টে আল-শিফা হাসপাতালের ভেতরের অবস্থা জানিয়ে যাচ্ছেন বলে জানায় বিবিসি।
এনজিও ফিজিশিয়ান্স ফর হিউম্যান রাইটস-ইসরায়েল (পিএইচআর-আই) এক্স এ তাদের পোস্টে জানায়, ইসরায়েলের হামলায় আল-শিফা হাসপাতালে বিদ্যুৎ সরবরাহ করার শেষ জেনারেটরটিও ধ্বংস হয়ে গেছে। তাই সেখানে এনআইসিইউ পুরোপুরি অচল হয়ে পড়েছে। যার ফলে কয়েক ডজন নবজাতকের জীবন হুমকিতে পড়েছে।
গ্রুপটি তাদের পোস্টে আরো বলেছে, “সেখানে ধ্বংস এবং হত্যা অকল্পনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। গাজার প্রধান হাসপাতালে বিদ্যুৎ, পানি এবং অক্সিজেন নেই।
“আমরা এই মুহূর্তে আল-শিফায় যে চিত্র দেখতে পাচ্ছি সেটাকে আর মানবিক বিপর্যয় বলা যাচ্ছে না—বরং এটি একটি সম্মিলিত মৃত্যুদণ্ড।”
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী অবশ্য আল-শিফা হাসপাতালকে তাদের হামলার লক্ষ্যবস্তু বানানোর কথা অস্বীকার করেছে। তবে বলেছে, হাসপাতালের চারপাশে লড়াই চলছে।
স্থানীয় সময় শনিবার বিকালে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, “হাসপাতালে গোলাগুলি হচ্ছে না এবং সেটিকে অবরুদ্ধ করেও রাখা হয়নি।
“তবে হাসপাতালের চারপাশে হামাস জঙ্গিদের সঙ্গে আইডিএফ বাহিনীর লড়াই চলছে।”
বিবিসি জানায়, ইসরায়েলি বাহিনী ভার্চুয়ালি হাসপাতালটি ঘিরে রেখেছে। তবে ইসরায়েলের সেনা কর্মকর্তা কর্নেল মোজে তেত্রো দাবি করেছেন, তারা হাসপাতালের পূর্ব দিক খোলা রেখেছেন। যেখান দিয়ে হাসপাতালের ভেতরের কেউ চাইলে বেরিয়ে যেতে পারেন।
“তাকে নিরাপদে বেরিয়ে যেতে আমরা সহায়তা করবো।”
বিবিসির খবরে বলা হয়, ইসরায়েল যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতাল এবং তার চারপাশ খালি করে ফেলতে চাইছে। এজন্য তারা নানাভাবে চাপ দিচ্ছে। এরইমধ্যে হাসপাতাল প্রাঙ্গনে আশ্রয় নেওয়া বহু বেসামরিক মানুষ ওই এলাকা ছেড়ে চলে গেছেন বলে শোনা যাচ্ছে।