পাল্টা আক্রমণে গতি আনতে আরও অস্ত্র চায় ইউক্রেন
পূর্বাঞ্চলীয় রণক্ষেত্রে ইউক্রেনের সাম্প্রতিক সাফল্যের পরও দেশটির সেনারা বলছেন, রাশিয়ার বিরুদ্ধে তাদের পাল্টা আক্রমণে গতি আনতে আরও পশ্চিমা অস্ত্রের প্রয়োজন। বাখমুত রণক্ষেত্রে লড়াইরত কিয়েভের কয়েক জন সেনাদের সঙ্গে কথা বলে তৈরি করা এক প্রতিবেদনে এমন পরিস্থিতি তুলে ধরেছে রয়টার্স।
সম্প্রতি কিয়েভ দাবি করেছে, বাখমুতের দক্ষিণে দুটি গ্রাম তারা রুশ বাহিনীর কাছ থেকে পুনরুদ্ধার করেছে। এই সাফল্য মে মাস থেকে রাশিয়ার দখলে থাকা শহরটি মুক্ত করতে সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা করবে।
তবে বাখমুতের কাছাকাছি বাংকারে থাকা ইউক্রেনীয় সেনারা বলছেন, তাদেরকে সোভিয়েত আমলের গ্রাদ মাল্টিপল রকেট লঞ্চারের ওপর নির্ভর করতে হবে। তারা আশা করছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নির্মিত হিমার্স রকেট লঞ্চারের মতো অস্ত্র পাওয়ার।
ডেনিস নামের এক সেনা বলেন, পরিস্থিতি আরও ভালো হতো যদি আমাদের হিমার্স থাকত। অথবা অন্তত চেক নির্মিত ভ্যাম্পায়ারের মতো অস্ত্র পেলেও হয়।
কয়েক শ’ কোটি ডলার মূল্যের অস্ত্র ইউক্রেনকে দিয়েছে পশ্চিমারা। কিয়েভের সেনাদের একাংশ ভ্যাম্পায়ার ও হিমার্স ব্যবহার করছে।
তবে ডেনিস বলছেন, রুশ সেনাদের বিতাড়িত করতে আরও অস্ত্রের প্রয়োজন। আমাদের জয়ী হতে হবে এবং মস্কোকে পুড়িয়ে দিতে হবে। আমাদের আরও অস্ত্র লাগবে। ভালো অস্ত্র, নির্ভুল আঘাতে সক্ষম অস্ত্র।
রণক্ষেত্রের সম্মুখভাগে থাকা ইউক্রেনীয় সেনারা বলেছেন, যুদ্ধের শুরুর তুলনায় এখন তারা বেশি আশাবাদী।
ইভান নামের সেনা বলেন, সবচেয়ে খারাপ সময় ছিল যখন আমরা ভেবেছিলাম তারা আমাদের বাড়িতে আসবে।
প্রায় চার মাস ধরে চলমান পাল্টা আক্রমণের ধীরগতির সমালোচনা করেছেন কয়েকজন পশ্চিমা কর্মকর্তারা। কিন্তু ইউক্রেনীয় সেনারা ইঙ্গিত দিচ্ছেন বাখমুতের দক্ষিণে দুটি গ্রাম দখলের পর আত্মবিশ্বাস বাড়ছে।
আন্দ্রিভকা ও ক্লিশ্চিভকা গ্রাম হারানোর কথা স্বীকার করেনি রাশিয়া। বাখমুতকে ইউক্রেনীয় শহর দখলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে মনে করে মস্কো। কিয়েভ যদি শহরটি পুনরুদ্ধার করতে পারে তাহলে এটি হবে তাদের জন্য প্রতীকী অর্থে গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য।
ভ্লাদিস্লাভ নামের অপর এক সেনা বলেন, ক্লিশ্চিভকা পুনরুদ্ধারের দুই দিন পর এটি শান্ত। সম্ভবত রুশ সেনারা নতুন অবস্থান নিয়েছে। অথবা নতুন অবস্থান গড়ে তুলছে। কিন্তু গত দুই সপ্তাহ ধরে এখানে কোনও শান্ত পরিস্থিতি ছিল না।
তিনি বলেছেন, রাশিয়ার যুদ্ধবিমান তাদের অভিযান কঠিন করে তুলছে এবং আক্রমণকারী ড্রোনকে অনেক সময় হামলার আগে শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না।
অত্যাধুনিক পশ্চিমা অস্ত্র পৌঁছানোর আগ পর্যন্ত সেনাদের সোভিয়েত আমলের গ্রাদ লঞ্চারের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। ১৯৬০ দশকে অস্ত্রটি প্রথম সেনাবাহিনীতে মোতায়েন করা হয়েছিল।
৩০ বছর বয়সী ভ্লাদিস্লাভ বলেন, এটি একটি শক্তিশালী অস্ত্র। আক্রমণের সময় যেখানে মানুষ, সরঞ্জাম রয়েছে সেখানে এটি কার্যকর।