এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান খুঁজতে সাধারণ মানুষের সাহায্য চাইল মার্কিন সেনারা

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
5 মিনিটে পড়ুন

এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান খুঁজতে সাধারণ মানুষের সাহায্য চাইল মার্কিন সেনারা

মার্কিন সেনাবাহিনীর একটি এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান মাঝ আকাশে হারিয়ে যাওয়ার পর সেটিকে খুঁজে বের করতে সে দেশের সামরিক বাহিনী সাধারণ মানুষের সাহায্য চেয়েছে। যুদ্ধবিমানটি হারিয়ে যাওয়ার আগে সেটির পাইলট আকাশে ‘ইজেক্ট’ করে এয়ারক্র্যাফট থেকে বাইরে বেরিয়ে এসেছিলেন। যুদ্ধবিমানটি তখন দক্ষিণাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্য সাউথ ক্যারোলাইনার আকাশে উড়ছিল। ঘটনাটি ছিল রবিবার বিকেলের।

ওই বিমানের পাইলটের নাম প্রকাশ করা হয়নি। তবে তিনি ইজেক্ট করে নিরাপদেই প্যারাশুটে করে অবতরণ করেছিলেন বলে জানানো হয়েছে। তিনি এখন স্থিতিশীল অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

যুদ্ধবিমানটির সঙ্গে ঠিক কী ঘটেছিল তা এখনো স্পষ্ট নয়।

তবে কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, সেটি একটি ‘মিসহ্যাপ’ বা দুর্ঘটনায় পড়েছিল। তারা আরো জানিয়েছেন, চার্লসটন শহরের উত্তর দিকে যে দুটো বড় লেক রয়েছে, এফ-৩৫বি লাইটনিং টু জেটটিকে খোঁজার জন্য এখন মূলত সেখানেই মনোনিবেশ করা হচ্ছে।

- বিজ্ঞাপন -

যুদ্ধবিমানের সর্বশেষ অবস্থান যা জানা গেছে, তার ভিত্তিতেই এখন লেক মৌলট্রি ও লেক ম্যারিওনে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল এভিয়েশন রেগুলেটরদের সহায়তায় ব্যাপক তল্লাশি চালানো হচ্ছে।

জয়েন্ট বেস চার্লসটন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে (টুইটার) একটি অ্যাপিল পোস্ট করে লিখেছে, ‘আমাদের ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিমগুলো এখনো ওই এফ-৩৫টি খোঁজার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান খুঁজতে সাধারণ মানুষের সাহায্য চাইল মার্কিন সেনারা
মার্কিন সেনাবাহিনীর একটি এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান মাঝ আকাশে হারিয়ে যাওয়ার পর সেটিকে খুঁজে বের করতে সে দেশের সামরিক বাহিনী সাধারণ মানুষের সাহায্য চেয়েছে। ছবি এপি

খোঁজার চেষ্টা যখন চলছে, তখন সাধারণ মানুষকেও অনুরোধ করা হচ্ছে এই কাজে সামরিক ও বেসামরিক কর্তৃ‍পক্ষের সঙ্গে সহযোগিতা করতে।’ যুদ্ধবিমানটির উদ্ধার কাজে আসতে পারে, এমন কোনো তথ্য কারো কাছে থাকলে তাকে অপারেশনস সেন্টারের সঙ্গে যোগাযোগ করতেও আহ্বান জানানো হয়েছে।

মেরিন কোরের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ঘটনাটি সম্পর্কে তারা এখনো অবধি যা জানে তা ‘খুবই সীমিত’ এবং এ ব্যাপারে আরো তথ্য আহরণের চেষ্টা করা হচ্ছে।

ঠিক ওই সময় আর একটি এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানও চার্লসটনের কাছের আকাশ উড়ছিল, তবে সেটি কিন্তু নিরাপদেই তার বেসে ফিরে এসেছে। মার্কিন সামরিক মুখপাত্র মেজর মেলানি স্যালিয়ান্স অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) কাছে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

- বিজ্ঞাপন -
এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান খুঁজতে সাধারণ মানুষের সাহায্য চাইল মার্কিন সেনারা
ছবি বিবিসি

বিশ্বে সবচেয়ে ব্যয়বহুল অস্ত্রসম্ভার

এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানগুলোকে বিশ্বের সবচেয়ে আধুনিক ও উন্নত মানের যুদ্ধবিমানগুলোর অন্যতম বলে গণ্য করা হয়। লকহিড মার্টিনের নির্মিত এই ফাইটার জেটগুলোর এক একটার দাম পড়ে প্রায় আট কোটি মার্কিন ডলার করে।

সারা বিশ্বে এই শ্রেণির যুদ্ধবিমানের মধ্যে এফ-৩৫ আকারে যেমন সবচেয়ে বড়, তেমনি এটি বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ওয়েপেন্স প্রগ্রামও বটে।

২০১৮ সালে সাউথ ক্যারোলাইনা অঙ্গরাজ্যে একটি দুর্ঘটনার পর মার্কিন সেনাবাহিনী তাদের পুরো এফ-৩৫ ফ্লিটকেই ‘গ্রাউন্ড’ করে দিয়েছিল, মানে পুরো বহরটাকেই বসিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তবে তা সত্ত্বেও পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ মোট তিন হাজারের মতো এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান কিনেছে বা কেনার অর্ডার দিয়েছে।

- বিজ্ঞাপন -

মার্কিন বিমান ও নৌবাহিনী তো বটেই, এ ছাড়াও আরো অন্তত ১০-১২টি দেশ তাদের বাহিনীতে এফ-৩৫-কে যুক্ত করেছে। এর মধ্যে রয়েছে ব্রিটেন, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, তুরস্ক, নরওয়ে, ডেনমার্ক, অস্ট্রেলিয়া, ইসরায়েল, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া

বিবিসির প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক জোনাথন মার্কাসের কথায়, ‘ষাট বা সত্তরের দশকে যেমন ম্যাকডানেল ডগলাস ফ্যান্টম কিংবা আরো পরে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান ওয়াশিংটনের মিত্র দেশগুলোর বিমানবাহিনীতে অবধারিতভাবে থাকত, এখন ঠিক সেটাই করছে এফ-৩৫।’

এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান খুঁজতে সাধারণ মানুষের সাহায্য চাইল মার্কিন সেনারা
যুদ্ধবিমানটি হারিয়ে যাওয়ার আগে সেটির পাইলট আকাশে ‘ইজেক্ট’ করে এয়ারক্র্যাফট থেকে বাইরে বেরিয়ে এসেছিলেন। ছবি এপি

এফ-৩৫ দিয়ে ইসরায়েলের হুঁশিয়ারি

তবে পূর্বসূরিদের সঙ্গে এফ-৩৫-৩র মিল ওখানেই শেষ। এফ-৩৫ আসলে এমন একটি অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান, যাকে ‘পঞ্চম প্রজন্মের’ এয়ারক্র্যাফট বলে ডাকা হয়। এর কমব্যাট সিস্টেমেও নতুন নতুন বৈশিষ্ট্য ও ক্ষমতা প্রতিনিয়ত যোগ করা সম্ভব।

২০১৮ সালে ইসরায়েল প্রথম ঘোষণা করেছিল, তারা এফ-৩৫-কে ‘কমব্যাট মিশনে’ বা যুদ্ধে ব্যবহার করেছে। এর আগেই ইসরায়েল মোট ৫০টি এফ-৩৫ কেনার অর্ডার দিয়েছিল। সেই বছর ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী একটি ছবি প্রকাশ করে, যাতে দেখা যায়, তাদের একটি এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান লেবাননের রাজধানী বৈরুতের খুব কাছে আকাশে উড়ছে।

অনেক পর্যবেক্ষকই সেই ছবিটিকে প্ররোচনামূলক বলে বর্ণনা করেছিলেন। তারা মনে করেছিলেন, ওই ছবিটি আসলে ছিল ইরান ও তাদের মিত্রদের প্রতি ইসরায়েলের একটা প্রচ্ছন্ন বার্তা—যে ওই অঞ্চলে ইরানের প্রভাব খর্ব করার চেষ্টায় ইসরায়েল এফ-৩৫ ব্যবহারেও দ্বিধা করবে না।

সূত্র : বিবিসি

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

বিষয়:
এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!