পাকিস্তানে সামরিক বাহিনীর সাথে টিটিপির সংঘর্ষে চার সৈন্যসহ নিহত ১৬
পাকিস্তানের নিষিদ্ধ ঘোষিত সশস্ত্র জঙ্গিগোষ্ঠী তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের (টিটিপি) সাথে দেশটির সামরিক বাহিনীর ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর চার সৈন্য ও টিটিপির ১২ যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। আফগানিস্তানের সীমান্ত লাগোয়া পাকিস্তানের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় সীমান্ত এলাকায় সেনাবাহিনীর সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হওয়ার দায় স্বীকার করেছে টিটিপি।
বুধবার এক বিবৃতিতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী বলেছে, ‘অত্যাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত সন্ত্রাসীদের’ বড় একটি দল উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের চিত্রাল জেলার দুটি সামরিক তল্লাশি চৌকিতে হামলা চালিয়েছে। সামরিক বাহিনীর পাল্টা প্রতিরোধের সময় উভয়পক্ষের মধ্যে তীব্র গুলি বিনিময় হয়েছে।
প্রতিবেশি আফগানিস্তানের কুনার ও নুরিস্তান প্রদেশ থেকে একযোগে সমন্বয় করে টিটিপির সদস্যরা এই হামলা চালিয়েছেন বলে বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়েছে। ওই এলাকায় এখনও জঙ্গিদের বিরুদ্ধে চিরুনি অভিযান চলছে।
‘আরও হামলার আশঙ্কায় পাকিস্তানের তল্লাশি চৌকিগুলোতে হাই-অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন শাসকগোষ্ঠী তালেবানের প্রশাসন ‘তাদের দায়বদ্ধতা পালন এবং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সহিংস কর্মকাণ্ডের জন্য সন্ত্রাসীদের আফগান মাটি ব্যবহার করতে দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।’
চিত্রালের সরকারি কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরাকে বলেছেন, ওই এলাকায় এখনও উত্তেজনা বিরাজ করছে।
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার সকালেও সীমান্তের ওপার থেকে কিছু গুলি এবং তিনটি মর্টারের গোলা ছোড়া হয়েছে বলে আমাদের জানানো হয়েছে। তবে এতে কোনও হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
পাকিস্তানের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের চিত্রাল জেলার পার্বত্য অঞ্চল সাধারণত শীতকালে বরফে ঢাকা থাকে। এই অঞ্চলে কঠিন ভূকাঠামোর কারণে আন্তঃসীমান্ত চলাচল প্রায় অসম্ভব। কেবল চলতি বছরেই খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে বিভিন্ন মাত্রার তিন শতাধিক হামলার ঘটনা ঘটেছে।
আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন তালেবানের সাথে আদর্শিক মিল রয়েছে পাকিস্তানের নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন টিটিপির। দেশটির সামরিক তল্লাশি চৌকিতে হামলা চালানোর দায় স্বীকার করে বিবৃতি দিয়েছে সংগঠনটি। তবে আফগানিস্তানের মাটি ব্যবহার করে পাকিস্তানে হামলা চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছে এই জঙ্গিগোষ্ঠী।
সূত্র: আল জাজিরা।