ভারতের মণিপুরে আবারও সংঘর্ষ-গুলির লড়াই, হতাহত ৯
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুর আবারও অশান্ত হয়ে উঠেছে। রাজ্যটির বিবদমান দুই গোষ্ঠী কুকি ও মেইতেইদের মধ্যে ফের সংঘাত ছড়িয়েছে। সংঘর্ষে দুইজন মারা গেছেন এবং সাতজন আহত হয়েছেন। কুকি-অধ্যুষিত চূড়াচাঁদপুর ও মেইতেই-প্রধান বিষ্ণুপুরের সীমানায় খইরেনতাক গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে।
পুলিশ দাবি করেছে, নারানসেনার কাছে ওই গ্রামে গুলির লড়াই হয়। তাতেই দুইজন মারা গেছেন। সাতজন আহত হয়েছেন। পরে পুলিশ ও আসাম রাইফেলস এবং কম্যান্ডোরা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
ট্রাইবাল লিডার্স ফোরামের দাবি, সকাল দশটার দিকে গ্রামে আক্রমণ চালানো হয়। গ্রামরক্ষী বাহিনী মোতায়েন ছিল। তারাও গুলি চালাতে থাকে। গ্রামরক্ষী বাহিনীর একজন মারা যান। এরপরই ওই এলাকাজুড়ে ব্যাপক গুলির লড়াই চলতে থাকে। বেশ কিছুক্ষণ ধরে ওই লড়াই চলে।
এর আগে পাহাড়ের নিচের এলাকায় একজন কৃষককে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। তিনি তখন জমিতে চাষ করছিলেন। তার বুকে গুলি লেগেছে এবং অবস্থা আশঙ্কাজনক।
মণিপুরে কুকি এবং মেইতেইদের মধ্যে বিরোধ চলছে। চার মাস ধরে রাজ্যটির পরিস্থিতি খুবই উত্তেজনাপূর্ণ। প্রায় ১৫০ মানুষ সেখানে মারা গেছেন। মেইতেই এলাকায় কুকিদের এবং কুকি এলাকায় মেইতেইদের যে বাড়ি ছিল প্রায় সব জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে।
দুই পক্ষের হাতেই প্রচুর অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র রয়েছে। প্রায়ই আক্রমণ ও পাল্টা আক্রমণের ঘটনা ঘটছে। পাহাড়ের বিভিন্ন জায়গায় আসাম রাইফেলস ব্যারিকেড করে রেখেছে। তাছাড়া কুকি মেয়েরাও দিনরাত রাস্তায় বসে থেকে প্রহরা দেন।
আবার মেইতেই এলাকায় একই কাজ করেন মেইতেই নারীরা। সেখানেও মণিপুর পুলিশের ব্যারিকেড আছে।
মণিপুর বিধানসভার বাজেট অধিবেশন হয়েছিল ফেব্রুয়ারি-মার্চে। তারপর ৩ মে থেকে কুকি ও মেইতেইদের সংঘর্ষ শুরু হয়। এর মধ্যে বিধানসভার অধিবেশন আর বসেনি। মঙ্গলবার বিধানসভার একদিনের জরুরি অধিবেশন ডাকা হয়েছিল।
অধিবেশন শুরু হতেই কংগ্রেস ও বিজেপি বিধায়কদের মধ্যে তর্কাতর্কি শুরু হয়। প্রবল হট্টগোল হয়। তার মধ্যেই তিনটি প্রস্তাব পাস হয়। একটি প্রস্তাবে বলা হয়, সহিংসতা ছেড়ে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে হবে।
কুকিদের দশজন বিধায়ক আছেন। তারা কেউই অধিবেশনে যোগ দেননি। তারা জানিয়ে দেন, ইম্ফলে আসতে তারা নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন। তাই, তারা অধিবেশনে যোগ দিতে পারবেন না। এছাড়া তারা এই একদিনের অধিবেশনের পক্ষে নয় বলেও জানিয়ে দিয়েছেন।
কংগ্রেসও একই দাবি জানিয়ে বলে, অন্তত পাঁচদিনের অধিবেশন করতে হবে। তবে তাদের দাবি মানা হয়নি।