কঙ্গোতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনবিরোধী বিক্ষোভ, নিহত ৭
মধ্য আফ্রিকার দেশ ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোতে (ডিআর কঙ্গো) জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনবিরোধী বিক্ষোভে কমপক্ষে ৭ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ছয়জন বিক্ষোভকারী এবং একজন পুলিশ সদস্য।
বুধবার (৩০ আগস্ট) আফ্রিকার এই দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় শহর গোমায় সহিংস বিক্ষোভ ও প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুধবার পূর্ব কঙ্গোলিজ শহর গোমায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন এবং অন্যান্য বিদেশি সংস্থার বিরুদ্ধে আয়োজিত বিক্ষোভ হিংসাত্মক হয়ে ওঠার পর কমপক্ষে ছয়জন বিক্ষোভকারী এবং একজন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন বলে কঙ্গোর সেনাবাহিনী জানিয়েছে।
কঙ্গোতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনটি মনুস্কো নামে পরিচিত। জাতিসংঘের এই মিশনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সহিংসতার বিরুদ্ধে বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে। মূলত বছরের পর বছর ধরে চলে আসা এই সহিংসতার কারণে বুধবার দেশটির ওই শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
রয়টার্স বলছে, ২০২২ সাল থেকে জাতিসংঘের মনুস্কো মিশন দেশটির নাগরিকদের প্রতিবাদের সম্মুখীন হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, শান্তিরক্ষীরা বহু বছরের মিলিশিয়া সহিংসতার বিরুদ্ধে বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে।
প্রতিবাদ-বিক্ষোভের আয়োজকরা অবশ্য বুধবারের এই বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণভাবে করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ছবিগুলোতে দেখা গেছে, বেসামরিক পোশাকে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া নারী ও পুরুষরা লাঠি ও পাথর দিয়ে একজন পুলিশকে মাটিতে ফেলে মারধর করছেন।
রয়টার্স অবশ্য স্বাধীনভাবে এসব ছবি ও ফুটেজ যাচাই করতে পারেনি।
কঙ্গোলিজ সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, সহিংসতায় ছয় বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন এবং ১৫৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অবশ্য জাতিসংঘের একটি সূত্র জানিয়েছে, এদিনের বিক্ষোভ-সহিংসতায় অন্তত আটজন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে দুই সেনা ও একজন পুলিশ সদস্য রয়েছেন।
এর আগে ২০২২ সালের জুলাই মাসে মনুস্কো তথা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশন বিরোধী বিক্ষোভের ফলে গোমা এবং বুটেম্বো শহরে ১৫ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। নিহতদের মধ্যে তিনজন শান্তিরক্ষীও ছিলেন।
রয়টার্স বলছে, বছরের পর বছর ধরে চলা বিদ্রোহী সংঘাত এবং একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগ কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলে মানবিক সংকট ব্যাপকভাবে বাড়িয়েছে। জাতিসংঘের পরিসংখ্যান অনুসারে, নর্থ কিভু প্রদেশ এবং পার্শ্ববর্তী প্রদেশগুলোতে প্রায় ৫৫ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।