ওয়াগনার প্রধান প্রিগোজিনকে হত্যার নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ মিথ্যা: রাশিয়া
ভাড়াটে সেনাদল ওয়াগনার প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোজিনকে হত্যার নির্দেশ দেওয়ার যে অভিযোগ রাশিয়ার বিরুদ্ধে উঠেছে তা অস্বীকার করেছে ক্রেমলিন।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বাসভবন ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, ক্রেমলিন প্রিগোজিনকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিল এমন অভিযোগ ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা’।
শুক্রবার বিবিসি সাংবাদিকদের এক কনফারেন্স কলের সময় পেসকভ একথা বলেন। তিনি বলেন, “বিমান বিধ্বস্ত হওয়া এবং যাত্রীদের মারা যাওয়ার ঘটনা নিয়ে নানা জল্পনা চলছে।”
“আর পশ্চিমাদের ক্ষেত্রে এ সমস্ত জল্পনা অবশ্যই একটি নির্দিষ্ট দৃষ্টিকোণ থেকেই হচ্ছে। এগুলো সবই পুরোপুরি মিথ্যা। আমরা যখন এ বিষয়ে কথা বলছি, তখন অবশ্যই আমাদের প্রকৃত ঘটনাটাই বলা উচিত।”
“এ মুহূর্তে আসলেই কী ঘটেছে সে সম্পর্কে আমরা বেশিকিছু জানি না। সরকারি তদন্তের মধ্য দিয়ে প্রকৃত ঘটনাটি স্পষ্ট করে জানা দরকার, যেটি এখন চলছে,” বলেন তিনি।
গত বুধবার রাশিয়ায় প্রিগোজিনকে বহনকারী বিমান বিধ্বস্তের পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের করা মন্তব্যেরও সমালোচনা করেছে ক্রেমলিন।
প্রিগোজিনের খবরে বিস্মিত নন জানিয়ে বাইডেন বলেছিলেন, “রাশিয়ায় খুব বেশি ঘটনা ঘটে না, যার পেছনে পুতিন নেই। যদিও আমি জানি না, আসলে সেখানে কী ঘটেছে।
রাশিয়ার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকভ শুক্রবার তাস বার্তা সংস্থায় বলেছেন, বাইডেনের এমন মন্তব্য মেনে নেওয়া যায় না।
বুধবার মস্কো থেকে সেন্ট পিটার্সবার্গ যাওয়ার পথে বিধ্বস্ত বিমানটির দশ আরোহীর সবাই মারা গেছেন বলে রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছিল। ওই ফ্লাইটের যাত্রী তালিকায় ওয়াগনারের প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোজিনের নামও ছিল।
ইউক্রেইন যুদ্ধে রাশিয়ার হয়ে ভাড়া খাটা ওয়াগনার বাহিনী গত জুনে প্রিগোজিনের নেতৃত্বে মস্কোর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল, যা শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়। এ বিদ্রোহের কারণে পুতিনের সঙ্গে প্রিগোজিনের সম্পর্ক খারাপ হয়েছিল।
এ পরিস্থিতিতে প্রিগেজিনকে বহনকারী বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। রুশ প্রতিরক্ষা বাহিনী মস্কোর উত্তরে তিভিয়ের অঞ্চলে বিমানটিকে গুলি করে ভূপাতিত করেছে বলে ওয়াগনার সংশ্লিষ্ট টেলিগ্রাম চ্যানেল গ্রে জোনে দাবি করা হয়েছে।
প্রিগোজিনের মৃত্যু নিয়ে বিশ্বজুড়ে রীতিমত হইচই পড়ে গেছে। যদিও তিনি সত্যিই মারা গেছেন কি না, তা নিয়ে সামান্য হলেও সংশয় এখনো রয়ে গেছে।
যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষামন্ত্রণালয় বলেছে, বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় প্রিগোজিন মারা যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। তবে তিনি যে বিমানে ছিলেন তেমন অকাট্য কোনও প্রমাণ এখনও নেই।