মস্কোতে আবারও ড্রোন হামলা
রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে আবারও ড্রোন হামলার ঘটনা ঘটেছে। রাতের আঁধারে হওয়া এই হামলার সময় একটি ড্রোন শহরের একটি ভবনে আঘাত করে। এছাড়া হামলা চালাতে আসা আরও দুটি ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি করেছে রাশিয়া।
অন্যদিকে, রুশ ভূখণ্ডের অভ্যন্তরে হামলা চালানোকে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন করে না বলে জানিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর। বুধবার (২৩ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মস্কোর প্রাণকেন্দ্রে একটি নির্মাণাধীন ভবনে ড্রোন আঘাত করেছে বলে শহরের মেয়র সের্গেই সোবিয়ানিন জানিয়েছেন। এছাড়া মস্কো অঞ্চলের মোজাইস্ক এবং খিমকি জেলায় আকাশ প্রতিরক্ষা বাহিনী দুটি ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করেছে বলে জানিয়েছে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
এই ঘটনায় হতাহতের কোনও খবর পাওয়া যায়নি এবং কারা এই হামলা চালিয়েছে তাও ‘স্পষ্ট নয়’। অবশ্য রাশিয়ান কর্মকর্তারা এটিকে ‘সন্ত্রাসী হামলা চালানোর জন্য কিয়েভ সরকারের আরেকটি প্রচেষ্টা’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মস্কো সিটি কমপ্লেক্সের নির্মাণাধীন ভবনে যে ড্রোনটি আঘাত করেছে সেটি ইলেকট্রনিক ওয়্যারফেয়্যারের মাধ্যমে দমন করা হয় এবং পরে সেটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ভবনটিতে আঘাত করে।
এদিকে ড্রোন ভূপাতিত করার খবরের প্রতিক্রিয়ায় মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, রাশিয়ার ভেতরে ড্রোন হামলা চালাতে কাউকে উৎসাহিত করেনি যুক্তরাষ্ট্র।
এছাড়াও পূর্ব ইউক্রেনীয় শহর লিম্যানের কাছে রাশিয়ার গোলাবর্ষণে তিনজন বয়স্ক লোক নিহত হয়েছেন বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। ইউক্রেনের সীমান্ত থেকে প্রায় ৫০০ কিমি (৩১০ মাইল) দূরে অবস্থিত মস্কো এবং এর আশপাশের শহরতলি চলতি বছর বেশ কয়েক দফায় ড্রোন হামলা শিকার হয়েছে। যদিও যুদ্ধ শুরুর পর থেকে মস্কো ও আশপাশের এলাকা খুব কমই ইউক্রেনীয় হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়েছিল।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ইউক্রেন সীমান্তের কাছে অবস্থিত রাশিয়ান শহরগুলোসহ ক্রেমলিনে ড্রোন হামলার ঘটনা ঘটেছে এবং বুধবারের এই হামলাটি সেটিরই সর্বশেষ উদাহরণ। রাশিয়া অবশ্য এই ধরনের হামলার জন্য বরাবরই ইউক্রেনকে দায়ী করে আসছে।
এছাড়া গত মে মাসে ক্রেমলিনে ড্রোন হামলার চেষ্টা হয়। সেই ঘটনায়ও ইউক্রেনকে অভিযুক্ত করেছিল রাশিয়া। রুশ প্রশাসন বলেছিল, প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে হত্যার চেষ্টা চালাতেই ওই হামলার প্রচেষ্টা চালানো হয়। তবে ক্রেমলিনে ড্রোন হামলা চালানোর বিষয়টি অস্বীকার করে ইউক্রেন।
দিন দু’য়েক আগে এক প্রতিবেদনে রয়টার্স জানায়, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে রাশিয়ার রাজধানীতে ড্রোন হামলা ক্রমশ সাধারণ বিষয় হয়ে উঠেছে। রাশিয়ান জনগণের মধ্যে ড্রোন হামলা কী প্রভাব ফেলবে তা অবশ্য স্পষ্ট নয়। জনমত জরিপ ইঙ্গিত দেয়, ইউক্রেনে রাশিয়ান সামরিক অভিযানের প্রতি সমর্থন এখনও অনেক বেশি এবং এর হার প্রায় ৭৫ শতাংশ।
যদিও রাশিয়ায় এই জরিপ কতটা সঠিক তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।