ইংল্যান্ডকে হারিয়ে মেয়েদের বিশ্বকাপ জিতল স্পেন
১৩ মিনিটের যোগ করা সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরও চলল খেলা। স্পেনের অপেক্ষার যেন আর শেষ হয় না! অবশেষে রেফারির শেষ বাঁশি বাজতেই ডাগআউট থেকে মাঠে ছুটে গেলেন বেঞ্চের খেলোয়াড়রা। সতীর্থদের সঙ্গে তারা মেতে উঠলেন আনন্দ উৎসবে। স্বপ্নের পথচলায় ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে হারিয়ে মেয়েদের বিশ্বকাপ জিতল স্পেন।
সিডনির স্টেডিয়াম অস্ট্রেলিয়ায় প্রায় ৭৬ হাজার দর্শকের উপস্থিতিতে রোববারের ফাইনালে ১-০ গোলে জিতেছে স্পেন। ব্যবধান গড়ে দেওয়া গোলটি করেছেন অধিনায়ক ওলগা কারমনা।
এবারের আগে দুবার বিশ্বকাপে অংশ নিয়ে কখনও নকআউট পর্বের ম্যাচ জয়ের অভিজ্ঞতাও ছিল না স্পেনের। ওই দুই আসর মিলিয়ে সাত ম্যাচে তাদের জয়ই ছিল স্রেফ একটি। গতবার শেষ ষোলোয় খেলা ছিল তাদের সেরা সাফল্য। সেই দলই এবার সাত ম্যাচের ছয়টি জিতে অবিশ্বাস্যভাবে মাথায় পরল বিশ্ব জয়ের মুকুট।
ইংল্যান্ডের আরেকটি বিশ্বকাপ জয়ের অপেক্ষা বাড়ল আরও। ১৯৬৬ সালে ছেলেদের বিশ্বকাপ জয়ের পর এবারই প্রথম বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছিল ইংল্যান্ডের কোনো দল। গত বছর ইউরো জয়ের অভিজ্ঞতা নিয়েও বিশ্ব মঞ্চে পেরে উঠল না দেশটির মেয়েরা।
শিরোপা লড়াইয়ে ষোড়শ মিনিটে এগিয়ে যেতে পারত ইংল্যান্ড। ১৫ গজ দূর থেকে ম্যানচেস্টার সিটির ফরোয়ার্ড লরেন হেম্পের শট ক্রসবারে লাগে।
স্পেন এগিয়ে যায় ২৯তম মিনিটে। সতীর্থের পাস বক্সে পেয়ে নিচু কোনাকুনি শটে গোলটি করেন কারমনা।
বিরতির আগে দ্বিগুণ হতে পারত স্পেনের ব্যবধান, কিন্তু সালমা পারাইয়েলোর শট লাগে পোস্টে।
দ্বিতীয়ার্ধে পেনাল্টি পেয়েও ব্যবধান বাড়াতে পারেনি স্প্যানিশরা। ৬৯তম মিনিটে অভিজ্ঞ এটাকিং মিডফিল্ডার জেনিফার এরমোসোর দুর্বল স্পট কিক ঠেকিয়ে দেন ইংল্যান্ডের গোলরক্ষক।
ম্যাচে ফিরতে মরিয়া ইংল্যান্ড চাপ বাড়ায় শেষ দিকে, তবে কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা পায়নি তারা কিছুতেই। উৎসবে মাতে স্পেন।
১০ মাস আগেও মাঠের বাইরের নানা সমস্যায় বিপর্যস্ত ছিল স্পেন দল। কোচ বদলের দাবিতে বিদ্রোহ করে বসেন খেলোয়াড়রা। এমনকি জাতীয় দলের হয়ে খেলা বন্ধ করার হুমকি দেন ১৫ ফুটবলার। সেই দলটিই এখন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন! যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, জাপান ও নরওয়ের পর পঞ্চম দল হিসেবে মেয়েদের বিশ্বকাপ জিতল স্পেন।
টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার গোল্ডেন বল জিতেছেন চ্যাম্পিয়ন স্পেনের মিডফিল্ডার আইতানা বনমাতি। সেরা গোলরক্ষকের পুরস্কার গোল্ডেন গ্লাভস পেয়েছেন ইংল্যান্ডের ম্যারি এরাপ্স।