নাইজারের দুইপক্ষের সঙ্গে পশ্চিম আফ্রিকার জোট ইকোয়াস প্রতিনিধির বৈঠক
পশ্চিম আফ্রিকার প্রধান আঞ্চলিক ব্লক ইকোনোমিক কমিউনিটি অব ওয়েস্ট আফ্রিকান স্টেটস- ইকোয়াস এর একটি প্রতিনিধি দল শনিবার নাইজারের উৎখাত হওয়া প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজোম এবং বর্তমান জান্তা নেতৃত্বের প্রধান জেনারেল আব্দুরহমানে চিয়ানির সঙ্গে বৈঠক করেছেন বলে জানিয়েছেন নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্টের একজন মুখপাত্র।
গত ২৬ জুলাই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বাজোমকে উৎখাত করে নাইজারের ক্ষমতা দখল করে দেশটির সামরিক বাহিনী। ইকোয়াস থেকে আলোচনার মাধ্যমে নাইজারের এই সংকটের কূটনৈতিক সামাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।
এর আগে ইকোয়াস থেকে জান্তা বাহিনীকে প্রেসিডেন্ট বাজোমের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। বলা হয়েছিল, ক্ষমতা হস্তান্তর করা না হলে নাইজারের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে প্রয়োজনে দেশটিতে সামরিক হস্তক্ষেপ করা হবে।
যদিও চিয়ানি নেতৃত্বাধীন বাহিনী ইকোয়াসের ওই আল্টিমেটামকে পুরোপুরি উপেক্ষা করে উল্টো বলেছে, যেকোনো ধরণের সামরিক হস্তক্ষেপ মোকাবেলায় তারা পুরোপুরি প্রস্তুত আছে।
গত শুক্রবার ইকোয়াস থেকে পুনরায় সামরিক হস্তক্ষেপের হুমকি দেওয়া হয়। বলা হয়, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের শেষ চেষ্টা হিসেবে তারা তা করবে।
জান্তা নেতৃত্ব এবার ইকোয়াসের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে বসায় ধারণা করা হচ্ছে, খুব সম্ভবত এবারের হুঁশিয়ারিতে খানিকটা কাজ হয়েছে।
শনিবার ইকোয়াসের প্রতিনিধিদল নিয়ামি বিমানবন্দরে জান্তা বাহিনীর নিয়োগ দেওয়া প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে বলে জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইকোয়াস সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা।
ইকোয়াসের এই প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন নাইজেরিয়ার সাবেক সেনাপ্রধান আব্দুলসালামি আবুবকর। আরো ছিলেন ইকোয়াস কমিশনের প্রেসিডেন্ট ওমর তুরাই।
নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র আব্দুলআজিজ আব্দুল আজিজ বাজোমের সঙ্গে ইকোয়াস প্রতিনিধিদলের বৈঠকের একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স (সাবেক টুইটার) এ পোস্ট করে লেখেন, “নাইজারে জান্তা বাহিনীর প্রধান জেনারেল আব্দুরহমানে চিয়ানির সঙ্গে বৈঠকের পর ইকোয়াস প্রতিনিধিদল আজ (শনিবার) সন্ধ্যায় প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজোমের সঙ্গেও দেখা করেছে।”
তবে এই আলোচনায় কী সিদ্ধান্ত হয়েছে সে বিষয়ে তিনি কোনো তথ্য দেননি। অভ্যুত্থানের শুরুতেই বাজোম বন্দি হন এবং এখনো বন্দিই আছেন।
এদিকে, শনিবার সন্ধ্যায় টেলিভিশনে এক ভাষণে জেনারেল চিয়ানি বলেন, জান্তা নেতৃত্ব বা ‘নাইজারের জনগণ কেউই যুদ্ধ চায় না এবং আলোচনার দরজা এখনো খোলাই আছে’।
তবে যদি সামরিক হস্তক্ষেপ করা হয় তবে তা প্রতিহত করতে জান্তা বাহিনী প্রস্তুত আছে বলে দৃঢ়তার সঙ্গে পুনর্ব্যক্ত করেন এই নেতা। বলেন, “যদি আমাদের বিরুদ্ধে কোনো আগ্রাসন চালানো হয় তবে সেটা পার্কে হাঁটাহাঁটি করার মত সহজ বিষয় হবে না; যেমনটা কেউ কেউ মনে করছেন।”
শনিবারের ভাষণে চিয়ানি এটাও বলেছেন, জান্তা বাহিনী তাদের নিজস্ব এজেন্ডা অনুসরণ করছে এবং গণতন্ত্রে ফিরে যাওয়ার বিষয়ে পরামর্শের জন্য একটি জাতীয় সংলাপ শুরু করবে।
“এবং এসব করতে তিন বছরের বেশি সময় নেওয়া হবে না।”