মিয়ানমারের জান্তা সরকারি কর্মচারীদের হাতে অস্ত্র তুলে দিচ্ছে
সরকারি বেসামরিক কর্মচারীদের হাতে অস্ত্র তুলে দিচ্ছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারের জান্তা সরকার। এ লক্ষ্যে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় শান প্রদেশে সরকারি কর্মচারীদের তালিকাও তৈরি করছে দেশটি।
মূলত তথাকথিত পিপলস মিলিশিয়া বা জনগণের মিলিশিয়া গঠনের জন্য এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি। মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম দ্য ইরাবতী।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের সরকার তথাকথিত জনগণের মিলিশিয়া গঠনের জন্য দক্ষিণাঞ্চলীয় শান প্রদেশে সরকারি কর্মচারীদের তালিকা তৈরি করছে। স্বাস্থ্য ও শিক্ষা বিভাগে কর্মরত কর্মচারীরাও এই তালিকায় স্থান পাচ্ছেন।
দ্য ইরাবতী বলছে, শান প্রদেশের নিরাপত্তা ও সীমান্ত বিষয়ক মন্ত্রী কর্নেল সিন উইনের আদেশে ১৭ আগস্টের মধ্যে তাউংগি ও কালাও জেলা এবং স্ব-শাসিত পা-ও ও দানু অঞ্চলে পুলিশ কর্মকর্তাদের বাদ দিয়ে এই তালিকা করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
আদেশে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা দপ্তরের কর্মীসহ বেসামরিক কর্মচারীদের সামরিক বাহিনীর ইস্টার্ন কমান্ডের অধীনে সহায়ক বাহিনী হিসাবে ব্যবহার করা হবে এবং মিলিশিয়া ব্যাটালিয়নের আকার অনুযায়ী দায়িত্ব বরাদ্দ করা হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি জান্তা সূত্র জানিয়েছে: ‘দক্ষিণাঞ্চলীয় শান প্রদেশ এবং কায়াহ প্রদেশে সেনাবাহিনীর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সরকারি সেনা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে, তাই সরকারি কর্মচারীদের মিলিশিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা করছে জান্তা।’
সামরিক বাহিনী ত্যাগকারী এক ব্যক্তি বলেছেন: ‘বিরোধীদের হামলায় সেনাবাহিনী হতাহতের শিকার হয়েছে এবং নতুন সেনা নিয়োগ করার মতো খুব কম লোকই খুঁজে পাচ্ছে তারা।’
তিনি আরও বলেন, ‘কিন্তু আমি মনে করি না যে, সরকারি কর্মচারীদের হাতে অস্ত্র দিয়ে কাজ হবে। আমি মনে করি, এটি শুধুমাত্র কাগজেই দেখানো যেতে পারে এবং শুধুমাত্র তখনই এমন পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হতে পারে, যখন কর্মচারীরা এই বিষয়ে ইচ্ছুক হয়।’
২০২১ সালের ফেব্রয়ারি মাসের শুরুতে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সুচির নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। এরপর গণতন্ত্রের দাবিতে দেশজুড়ে লড়াইরত প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোর সাথে প্রতিদিনের সংঘর্ষে নিয়মিতভাবেই ব্যাপক হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির শিকার হচ্ছে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী।
এই পরিস্থিতিতে যুদ্ধ করার জন্য জান্তা সরকার চোর এবং অন্যান্য ছোটখাটো অপরাধীদেরও নিয়োগ করেছে। কিন্তু তাদের অনেকেই আবার প্রশিক্ষণের সময় পালিয়ে গেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।