কেপটাউনে ট্যাক্সি ধর্মঘটে সহিংসতা, নিহত ৫
দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউনে ট্যাক্সি ধর্মঘটকে কেন্দ্র করে সহিংস বিক্ষোভে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ৪০ বছর বয়সী একজন ব্রিটিশ নাগরিক রয়েছেন।
বুধবার (৯ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের অংশ হিসেবে সপ্তাহব্যাপী এই ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছিল। ট্যাক্সি চালক ও মালিকরা জানিয়েছেন, ছোটখাটো অপরাধের জন্য তাদের যানবাহনকে টার্গেট করা হচ্ছে এবং জব্দ করা হচ্ছে।
যেসব আইন লঙ্ঘনের জন্য ট্যক্সিকে টার্গেট করা হচ্ছে তার মধ্যে সিটবেল্ট না পরা এবং সড়কের জরুরি লেনে অবৈধভাবে গাড়ি চালানোর বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে বলে চালকরা জানিয়েছেন। তারা দাবি করেছেন, অন্যরা একই কাজ করলেও শুধুমাত্র জরিমানার সম্মুখীন হয়েছে।
বিবিসি বলছে, কেপটাউনের মিনিবাস ট্যাক্সি অপারেটররাও হতাশা প্রকাশ করছেন যে, রাস্তায় চলাচলের উপযুক্ত নয় বলে দাবি করে সরকার তাদের ট্যাক্সিগুলোকে আটক করছে।
এই পরিস্থিতিতে কেপটাউন সিটির হাতে আটক মিনিবাস ট্যাক্সিগুলোকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে মঙ্গলবার নির্দেশ দিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার পরিবহন মন্ত্রী সিন্দিসিওয়ে চিকুঙ্গা। তিনি বলেছেন, শহর কর্তৃপক্ষের ব্যবহৃত আইনটি ‘ভুলভাবে কার্যকর এবং প্রয়োগ করা হয়েছে’।
দক্ষিণ আফ্রিকার পুলিশ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ৩ আগস্ট থেকে ধর্মঘট শুরু হওয়ার পর থেকে ১২০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তারা লুটপাট, পাথর নিক্ষেপ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা সম্পর্কে জানত।
এদিকে বিক্ষোভে নিহতদের মধ্যে একজন পুলিশ কর্মকর্তা রয়েছেন বলে দক্ষিণ আফ্রিকার পুলিশমন্ত্রী ভেকি সেল নিশ্চিত করেছেন। মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় সেল কেপটাউন সরকার এবং ট্যাক্সি অপারেটরদের মধ্যে সহযোগিতার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ধর্মঘটে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে এমন শিশুও রয়েছে যারা আর স্কুলে যেতে পারছে না। তার ভাষায়, ‘মানুষকে অবশ্যই তাদের অহংকার বাদ দিতে হবে, ঐকবদ্ধ হয়ে এই সমস্যার সমাধান করতে হবে।’
এদিকে চলমান এই ট্যক্সি ধর্মঘটকে দক্ষিণ আফ্রিকা সফররত পর্যটকদের জন্য উচ্চ নিরাপত্তা হুমকি হিসাবে তালিকাভুক্ত করে দেশটিতে ভ্রমণে সতর্কতা জারি করেছে যুক্তরাজ্য।
পৃথক প্রতিবেদনে রয়টার্স জানিয়েছে, গত সপ্তাহে পুলিশ যানবাহন আটক করা শুরু করার পরে শহরের বিভিন্ন অংশে বিক্ষিপ্ত সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। সেসময় বিক্ষুব্ধ বিক্ষোভকারীরা বাস ও গাড়িতে আগুন দেয় এবং পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর নিক্ষেপ করে।
পুলিশমন্ত্রী ভেকি সেল মঙ্গলবারের মিডিয়া ব্রিফিংয়ে বলেন, নিহতদের মধ্যে ৪০ বছর বয়সী একজন ব্রিটিশ নাগরিকও রয়েছেন এবং তাকে গত বৃহস্পতিবার গুলি করে হত্যা করা হয়। বিক্ষোভে হত্যা এবং সহিংসতার তদন্ত করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।