সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার গালা ইউনিয়নের মার্জান গ্রামের ৫ বছর বয়সী শিশু ফাতেমার কানের ১ আনা ওজনের কানের দুল কেড়ে নিতেই হত্যা করেছে প্রতিবেশি মামা নজরুল ইসলাম।
এ তথ্য নিশ্চিত করে শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টায় সংবাদ সম্মেলনে সিরাজগঞ্জ সহকারী পুলিশ সুপার (শাহজাদপুর সার্কেল) মোঃ কামরুজ্জামান জানান, গত ৩১ জুলাই সকাল ১০টার দিকে ফাতেমাকে (৫) আখ খেতে দিবে বলে ডেকে নিয়ে যায় প্রতিবেশি নজরুল। এর ঘন্টাখানেক পর নজরুল শরীরের কাপড়-চোপড় ভেজা অবস্থায় দুই খন্ড আখ হাতে নিয়ে ফাতেমাদের বাড়ীতে এসে ফাতেমার সন্ধান করে এবং বলে যে ফাতেমা তার সাথে যায় নাই। এরপর সবাই মিলে ফাতেমার সন্ধান করতে থাকে এবং এলাকায় মাইকিং করে’।
এরপর গত ২ আগস্ট বেলা অনুমান সাড়ে ৩টার সময় জনৈক ছবেদ সরদারের স্ত্রী ডলি বেগম ফাতেমার বাড়ীতে আসিয়া বলে যে, শিয়ালে একটি পা নিয়া চরার মধ্যে দিয়া যাইতেছে। পরে থানা পুলিশকে সংবাদ দিলে শাহজাদপুর থানা পুলিশ ঐদিন সন্ধ্যা সোয়া ৬টর দিকে মার্জান গ্রামের জনৈক রাজেম সরকারের ডেমা ঘাসের ক্ষেত থেকে ফাতেমার অর্ধ গলা পচা, হাড়, মাংশ বাহির হওয়া, ডান পা শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে। ঘটনাটি এলাকায় ব্যপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে।
এ ঘটনায় মৃত ফাতেমার মা মোছাঃ নুরজাহান (৩০) শাহজাদপুর থানায় ৩ আগস্ট এজাহার দায়ের করেন।
মামলা দায়েরের পর ঐদিন রাতেই সিরাজগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মোঃ আরিফুর রহমান মন্ডল, বিপিএম (বার), পিপিএম (বার) এর দিক নির্দেশনায় এবং শাহজাদপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ কামরুজ্জামান, পিপিএম-সেবা ও শাহজাদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে শাহজাদপুর থানার ইন্সপেক্টর অপারেশন মোঃ আবু সাঈদ ও এসআই শারফুল ইসলামের নেতৃত্ত্বে শাহজাদপুর থানা পুলিশের একটি টিম উপজেলার হাবিবুল্লাহ নগর ইউনিয়নের ইসলামপুর ডায়া মোড় এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মোঃ নজরুল ইসলামকে (২৫) আটক করে। নজরুল গালা ইউনিয়নের মার্জান গ্রামের মোঃ আবেদ আলীর পুত্র।
পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা স্বীকার করে মোঃ নজরুল ইসলাম জানিয়েছে, সে ঢাকায় রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করত। ৪/৫ বছর পূর্বে সে তার নিজ গ্রাম থেকে চলে এসে বাদীর বাড়ীর কাছে জমি কিনে বাড়ী করে। সে দুইটি বিবাহ করেছিল এবং তার দুই স্ত্রীই তাকে তালাক দিয়ে চলে গেছে। সে শিশু মোছাঃ ফাতেমা খাতুনকে মাঝেমধ্যে সদাই (ছোট বাচ্চাদের লোভনীয় খাবার) কিনে দিত। সেই কারনে প্রায়ই শিশু ফাতেমা খাতুন আসামী নজরুল ইসলামের বাড়ীতে যাইতো এবং ফাতেমা তাকে মামা ডাকত’।
সে ১০/১৫ দিন আগে ঢাকা থেকে বাড়ি আসে এবং সুনির্দিষ্ট কোন পেশা না থাকায় সে দেনাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। এমতাবস্থায় সে শিশু ফাতেমার কানে স্বর্ণের দুল দেখে তা নেয়ার পরিকল্পনা করে। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী সে গত ৩১ জুলাই সকাল ১০টার দিকে শিশু ফাতেমাকে ঘাসের ক্ষেতে নিয়ে যায়’। এরপর সে ভয় দেখিয়ে তার কানের দুল খুলে নেয়। এসময় শিশু ফাতেমা চিৎকার দিলে সে গলা চেপে ধরে শিশু ফাতেমাকে হত্যা করে লাশ ফেলে রেখে বাসায় আসে এবং স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে থাকে।
✍️এই নিবন্ধটি সাময়িকীর সুন্দর এবং সহজ জমা ফর্ম ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে। আপনার লেখা জমাদিন!