লেবাননে ফিলিস্তিনি শরণার্থী ক্যাম্প সশস্ত্র সংঘাতে রণক্ষেত্র
লেবাননে ফিলিস্তিনি শরণার্থী ক্যাম্পে ফাতাহ ও তার বিরোধীদের মধ্যে সশস্ত্র সংঘাত তৃতীয় দিনে গড়িয়েছে। দুপক্ষের মুখোমুখি লড়াইয়ে কমান্ডারসহ এখন পর্যন্ত ৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আহত অর্ধশত।
লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দর নগরী সিডনের কাছে ‘আইন আল হেলওয়েহ’ নামের ফিলিস্তিনের সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবিরে এ ঘটনা চলছে। ফিলিস্তিন ও লেবানিজ কর্তৃপক্ষ সংঘাত থামাতে মধ্যস্থতার চেষ্টা করলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। পরিস্থিতি গুরুতর হওয়ায় আশপাশের এলাকায় লোকজনের চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে লেবাননের সেনাবাহিনী।
সেখানে থাকা আল জাজিরার প্রতিনিধি জেনিয়া খদর জানান, ‘সংঘর্ষের তীব্রতা আরও বেড়েছে। সত্যিই মানবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। অনেক পরিবার ক্যাম্প থেকে কোনও মতে পালিয়েছে। এখনও অনেকে ভেতরে আটকা পড়েছে। কারণ, বের হওয়াটা বিপজ্জনক। কেউ কেউ মসজিদে আশ্রয় নিয়েছেন।’
দুই পক্ষের লড়াইয়ে শরণার্থী ক্যাম্পে সাময়িকভাবে সব ধরনের সহায়তা কার্যক্রম স্থগিত করেছে জাতিসংঘ।
ঘটনার সূত্রপাত, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের ফাতাহ আন্দোলন ও প্রতিদ্বন্দ্বী ইসলামপন্থি দলগুলোর মধ্যে এ সংঘর্ষ। শনিবার একজন অজ্ঞাত বন্দুকধারী মাহমুদ খলিল নামে সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যকে হত্যা করতে এসেছিল। কিন্তু তাকে না পেয়ে তার সঙ্গীকে গুলি করে মারে।
পরের দিন রবিবার সংঘর্ষ শুরু হয়ে যায় ক্যাম্পে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা জানান, প্রতিশোধ নিতে যোদ্ধারা ফাতাহ দলের সামরিক জেনারেল আবু আশরাফ আল-আরমুশি ও তিনজনকে গুলি করে হত্যা করে। এরপরই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।
লেবাননের আইনপ্রণেতা ওসামা সাদ সোমবার বিকেলে লেবাননের কর্মকর্তা, নিরাপত্তা বাহিনী ও ফিলিস্তিনি দলগুলোর মধ্যে বৈঠকের পর যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন। তারপরও লড়াই থামেনি।
জাতিসংঘের পরিসংখ্যানে জানা গেছে, বৃহত্তর এই ক্যাম্পে ৫৫ হাজার লোকের বসবাস। ১৯৪৮ সালে নাকবা বিপর্যয়ের সময় বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের জায়গায় হয়েছিল এখানে।
সূত্র: আল জাজিরা