কারাবন্দি থেকে গৃহবন্দি সু চি
মিয়ানমারের জান্তা সরকার ঘরে-বাইরে সমালোচনার মুখে ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী অং সান সু চিকে জেল থেকে সরিয়ে গৃহবন্দি করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
কারাসূত্রে বিবিসি বার্মিজ-ভাষার খবরে বলা হয়েছে, সোমবার সু চিকে কারাগার থেকে রাজধানী নেপিদোর একটি সরকারি ভবনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। নির্জন কারাকক্ষে সু চি কাটিয়েছেন একবছর।
তবে তাকে কারাগার থেকে সরিয়ে নেওয়ার খবরটি ঠিক কিনা তা নিশ্চিত করে জানাতে পারেননি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র।
মিয়ানমারে ২০২১ সালে সেনা অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর একের পর এক অভিযোগের বিচার শেষে সু চিকে মোট ৩৩ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। প্রথমে তাকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছিল, গত বছর তাকে রাজধানী নেপিদোর একটি কারাগারের নির্জন কক্ষে স্থানান্তর করা হয়।
দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে তার অবস্থার সম্পর্কে কিছুই জানা যায়নি। তিনি অসুস্থ বলে গুঞ্জন শোনা গিয়েছিল। তবে সেনাবাহিনী সে খবর অস্বীকার করেছে।
মিয়ানমারের স্বাধীনতার নায়ক জেনারেল অং সানের মেয়ে সু চি সামরিক স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রপন্থি আন্দোলনের কাণ্ডারি হয়ে উঠেছিলেন। আরও অনেককে সঙ্গে নিয়ে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি (এনএলডি), কিন্তু ১৯৮৯ সালেই তাকে গৃহবন্দি করা হয়।
ফিরে আসতে পারবেন না, এই ভয়ে দেশ না ছাড়া সু চি শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেলেও তা নিতে নিজে যাননি। তার হয়ে তার ছেলে সেসময় পুরস্কার গ্রহণ করেন। সু চির স্বামী ১৯৯৯ সালে ক্যান্সারে ভুগে মারা যান, এর মধ্যে মিয়ানমারের নেত্রী তাকে আর দেখতেও যেতে পারেননি।
২০১০ সালে সু চি মুক্তি পাওয়ার পর মিয়ানমার এবং গোটা বিশ্বেই তা সাড়া ফেলেছিল। ২৫ বছরে মিয়ানমারে প্রথম অবাধ নির্বাচনে এনএলডি ব্যাপক ব্যবধানে জয়লাভ করলে ২০১৫ সালে সু চি দেশটির ‘ডি ফ্যাক্টো’ নেতায় পরিণত হন।
কিন্তু পরে মিয়ানমারে গণহত্যার অভিযোগের বিরুদ্ধে সুচি জাতিসংঘ ন্যায়বিচার আদালতে (আইসিজে) নিজ দেশের পক্ষ সমর্থন করে সমালোচনার শিকার হয়েছিলেন। ২০২১ সালের অভ্যুত্থানে সু চি ক্ষমতাচ্যুত হলেও মিয়ানমারে এখনও তিনি বেশ জনপ্রিয়।