সেনেগালে অভিবাসীবাহী নৌকাডুবি, মৃত কমপক্ষে ১৫
পশ্চিম আফ্রিকার দেশ সেনেগালে অভিবাসী ও শরণার্থীদের বহনকারী একটি নৌকা ডুবে কমপক্ষে ১৫ জন মারা গেছেন। সোমবার (২৪ জুলাই) রাজধানী ডাকার উপকূলে ওই নৌকাটি ডুবে যায়।
সম্প্রতি পশ্চিম আফ্রিকা উপকূল থেকে ইউরোপ অভিমুখে অবৈধ অভিবাসীদের বিপজ্জনক সমুদ্র যাত্রা বেড়েছে এবং তেমনই একটি ঘটনায় সর্বশেষ এই ট্র্যাজেডি দেখল বিশ্ব। মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজধানী ডাকার উপকূলে অভিবাসী ও শরণার্থীদের বহনকারী একটি নৌকা ডুবে যাওয়ার পর অন্তত ১৫ জন মারা গেছে বলে সেনেগালের প্রেসিডেন্ট ম্যাকি স্যাল জানিয়েছেন।
টুইটারে তিনি বলেছেন, ‘ডাকারের উপকূলে একটি পিরোগ (লম্বা কাঠের নৌকা) ডুবে যাওয়ার পরে প্রায় পনেরো জন সেনেগালিজ নাগরিকের মৃত্যুর ঘটনায় আমি গভীর দুঃখ প্রকাশ করছি। নিহতদের পরিবার এবং প্রিয়জনদের প্রতি আমার আন্তরিক সমবেদনা।’
আল জাজিরা বলছে, ডাকারের পার্শ্ববর্তী ওউকাম এলাকায় মৃতদেহগুলো পাওয়া গেছে। সেখানকার ডেপুটি মেয়র এনডেই টপ গুয়ে বলেছেন, সোমবার সকালে মৃতদেহগুলো খুঁজে পায় নৌবাহিনী সদস্যরা। ভুক্তভোগীরা যে ধরনের নৌকায় ছিল তার কারণে তারা অভিবাসী বলে মনে করা হচ্ছে।
যদিও ডাকারের পার্শ্ববর্তী ওউকাম এলাকায় এবারই প্রথমবারের মতো মৃতদেহ ভেসে এসেছে, তবে এনডেই টপ বলছেন, সেনেগালে সমুদ্রে অভিবাসীদের মৃত্যু খুবই সাধারণ বিষয় হয়ে উঠছে। তার ভাষায়, ‘এটিই প্রথমবার নয়, অগণিত বার হয়েছে। সরকারকে পাল্টা ব্যবস্থা নিতে হবে।’
বাবাকার ডায়ালো নামে ওউকামের একজন জেলে বলেন, সমুদ্রের তীরে আসার পর বহু মানুষকে উদ্ধার প্রচেষ্টায় সাহায্য করার চেষ্টা করতে দেখেছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘তীরে কমপক্ষে ১২টি মৃতদেহ ছিল। দুই ব্যক্তি জীবিত উদ্ধার হয়েছেন। বেশ কয়েক ঘণ্টা পর মৃতদেহগুলো তীরে আনা হয়।
ডায়ালো আরও বলেন, ‘তারা এখনও মৃতদেহ উদ্ধার করছে, কিন্তু পানি পরিষ্কার নয়। কোথায় মৃতদেহ খুঁজে পাওয়া যেতে পারে আমরা সে বিষয়ে তাদের ইঙ্গিত দিয়েছি। আমরা এখানে থাকি, এবং বিপদের ক্ষেত্রে আমরাই তাদের বলতে পারি মৃতদেহ কোথায় খুঁজতে হবে। সম্ভবত এখনও আরও মৃতদেহ আছে।’
আল জাজিরা বলছে, অগ্নিনির্বাপক ও ডুবুরিদের একটি দল সোমবার স্থানীয় সময় বিকেলেও ওই এলাকায় মৃতদেহের সন্ধান করছিল।
মূলত সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পশ্চিম আফ্রিকা উপকূল থেকে স্পেনের ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জ অভিমুখে অবৈধ অভিবাসীদের বিপজ্জনক চলাচল অনেক বেড়ে গেছে। অভিবাসন প্রত্যাশীরা যেসব নৌকা বা নৌযানে সমুদ্র পাড়ি দেন, সেগুলোর ইঞ্জিন অনেক সময় ত্রুটিপূর্ণ থাকে।
এছাড়া ধারণক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত যাত্রী বহন করাও এসব নৌযানের ক্ষেত্রে খুব সাধারণ ব্যাপার। ফলে বিপজ্জনকভাবে সমুদ্র পাড়ি দিতে গিয়ে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অভিবাসন প্রত্যাশীরা মৃত্যুমুখে পতিত হন।
অবশ্য বিপজ্জনক সমুদ্র যাত্রার বিষয়ে অভিবাসীদের নিরুৎসাহিত করার চেষ্টা চালানো হলেও তাতে খুব বেশি ফল মেলেনি।