টি-টোয়েন্টিতে আফগানিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করল বাংলাদেশ

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
7 মিনিটে পড়ুন

টি-টোয়েন্টিতে আফগানিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করল বাংলাদেশ

সিলেটে বাংলাদেশি পেসাররা আগুন ঝরানোর পরই বৃষ্টির আগমন! তাতে মিনিট শতেক নষ্ট হয়েছে, ম্যাচের দৈর্ঘ্য কমেছে ৩ ওভার। বৃষ্টি শেষে খেলা শুরু হলে তাসের ঘরের মতো ভেঙে যায় আফগান মিডল অর্ডার! নাসুম-সাকিবের ঘূর্ণিতে সফরকারী ব্যাটারদের রীতিমতো ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি অবস্থা! শেষ পর্যন্ত ওমরজাই-জানাতের ব্যাটে লড়াই করার পুঁজি পায় তারা।

ছোট লক্ষ্য তাড়ায় উড়ন্ত শুরু করে বাংলাদেশ। কিন্তু মাঝে এক বলের ব্যবধানে দুই ওপেনার সাজঘরে ফিরলে রান রেটে তার প্রভাব পরে। তবে সাকিবের সাবলীল ব্যাটিংয়ে জয় পেতে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি স্বাগতিকদের।

আজ (১৬ জুলাই) টস হেরে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগে ব্যাটিং করতে নেমে ১৭ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১১৬ রান তুলেছিল আফগানিস্তান। যেখানে ২১ বলে ২৫ রান করেছেন ওমরজাই। আর বাংলাদেশের হয়ে ৩৩ রানে ৩ উইকেট শিকার করে ইনিংসের সেরা বোলার ছিলেন তাসকিন।

জবাবে খেলতে নেমে ১৬ ওভার ১ বলে ৪ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৫ রান করেছেন লিটন। এই জয়ে ২-০ ব্যবধানে আফগানিস্তানকে সিরিজ হারাল বাংলাদেশ। তাদের বিপক্ষে বাংলাদেশের এটিই প্রথম দ্বিপাক্ষিক টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়।

- বিজ্ঞাপন -

ডিএলএস মেথডে ১১৯ রানের লক্ষ্য পায় বাংলাদেশ। সেই লক্ষ্য তাড়ায় তৃতীয় বলেই চার মেরে শুরু করেন লিটন দাস। ফজল হক ফারুকির পরের বলে মারেন আরও একটি। অভিষিক্ত ওয়াফাদার মোমান্দকে তো স্বাগত জানান চারের হ্যাটট্রিক দিয়ে। দুই ওভারে লিটনের ৫ চারে উড়ন্ত সূচনা পায় বাংলাদেশ। তাতে ৫ ওভারেই দলীয় অর্ধশতক পূর্ণ করে বাংলাদেশ।

টি-টোয়েন্টিতে আফগানিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করল বাংলাদেশ
জয়সূচক রান আসে শামীমের ব্যাটে। ছবি টুইটার

পাওয়ার প্লের পর কিছুটা হলেও রানের লাগাম টেনে ধরে সফরকারীরা। তাতে চাপ বাড়ে স্বাগতিক ব্যাটারদের ওপর। সেই চাপেই যেন উইকেট দেন লিটন। নবম ওভারের প্রথম বলটি অফ স্টাম্পের অনেকটাই বাইরে ফুল লেন্থে করেছিলেন মুজিব। সেখানে জায়গা করে একট্রা কভারে ড্রাইভ করতে গিয়ে কভারে ধরা পড়েন লিটন। সাজঘরে ফেরার আগে এই ওপেনারের ব্যাট থেকে এসেছে ৩৬ বলে ৩৫ রান।

লিটন আউট হওয়ার এক বল পর ফিরেছেন আফিফও। মুজিবকে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি। এর আগে আগে ২০ বলে ২৪ রান করেছেন তিনি।

এরপর শান্তও দ্রুত ফেরেন। দুই ওভারের মধ্যে ফিরে যান টপ-অর্ডারের তিন ব্যাটার। আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের ইয়র্কার ধরনের ডেলিভারি ক্রস ব্যাটে খেলতে গিয়ে পায়ে লেগে বোল্ড হন নাজমুল হোসেন শান্ত। ৬ বলে ৪ রান করেছেন বাঁহাতি এই ব্যাটার।

ইনিংসের ১৫তম ওভারের ঘটনা। প্রথম বলে ডাবলস। এরপর ফ্লিক করে ছক্কা। হৃদয় অবশ্য থামলেন ওমরজাইয়ের তৃতীয় বলে। ডাউন দ্য গ্রাউণ্ডে এসে মিড অফের ওপর দিয়ে মারতে চাইলেও তাকে পার করাতে পারেননি হৃদয়। ১৭ বলে ১৯ রান করে হৃদয় ফিরলে উইকেটে আসেন শামিম পাটুয়ারী। সাকিব-শামিম যখন উইকেটে তখন শেষ ওভারে বাংলাদেশের প্রয়োজন ৪ রান।

- বিজ্ঞাপন -
টি-টোয়েন্টিতে আফগানিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করল বাংলাদেশ
ট্রফি হাতে সাকিব। ছবি টুইটার

প্রথম ম্যাচে শেষ ওভারে করিম জানাতের হ্যাটট্রিক ছড়িয়েছিল রোমাঞ্চ। এবার আর তেমন কিছু হলো না। ওয়াফাদেরের প্রথম বলেই মিডউইকেট দিয়ে চার মেরেছেন শামীম, ৫ বলে বাকি থাকতে ৬ উইকেটের জয় নিশ্চিত হয়েছে তাতেই। এ জয়ে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতল বাংলাদেশ। তৃতীয় বার এসে আফগানিস্তানকে প্রথমবার দ্বিপাক্ষিক আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি সিরিজে হারাল বাংলাদেশ।

এর আগে টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে ইনিংসের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক মেজাজে ছিলেন রহমানুল্লাহ গুরবাজ। ইনিংসের চতুর্থ বলে ডাউন দ্য উইকেট এগিয়ে এসে তাসকিনকে ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন এই ওপেনার। পরের বলে শর্ট লেংথ থেকে আবার তুলে মেরেছিলেন গুরবাজ, এবার বল ওঠে খাড়া ওপরে। অফ সাইড থেকে আরও তিন জন ফিল্ডার ছুটে আসতে চাইলেও তাসকিন না করে দেন, নিজের বলে নিজেই ধরেছেন ক্যাচ।

গুরবাজকে ফিরিয়ে একটা মাইলফলকও স্পর্শ করেছেন তাসকিন। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে উইকেটের ফিফটি পূর্ণ করেছেন এই পেসার। তার আগে এই মাইলফলক স্পর্শ করেছেন বাংলাদেশের আরও দুই বোলার। এই তালিকায় আছেন সাকিব ও মুস্তাফিজ।

- বিজ্ঞাপন -

প্রথম ওভারে তাসকিনকে তেড়ে-ফুরে খেলতে গিয়ে উইকেট বিলিয়ে এসেছিলেন গুরবাজ। পরের ওভারে আবারও এই পেসারের ওপর চড়াও হন আফগান ব্যাটাররা। এবার চার হাঁকিয়ে তাসকিনের ওভার শুরু করেন জাজাই। কিন্তু এই ওপেনারও তাড়া-হুড়া করে নিজের বিপদই ডেকে এনেছেন বৈকি। ওভারের চতুর্থ বলটি অফ স্টাম্পের বাইরে গুডলেংথ থেকে লাফিয়ে ওঠে, হজরতউল্লাহ জাজাই খেলবেন না ছাড়বেন করতে গিয়ে খোঁচা দিলেন। উইকেটের পেছনে বাকি কাজটি করেছেন লিটন দাস। তাতে নিজের টানা দুই ওভারে দুই ওপেনারকে ফেরান তাসকিন।

টি-টোয়েন্টিতে আফগানিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করল বাংলাদেশ
উইকেট পাওয়ার পর তাসকিনের উল্লাস। ছবি টুইটার

পাওয়ার প্লে শেষ হলেও এই চাপের বৃত্ত ভাঙতে পারেনি সফরকারী ব্যাটাররা। তাদের এমন চাপে রেখে যখন ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় বাংলাদেশ, ঠিক তখনই বৃষ্টির হানা। মিনিট ত্রিশেক পর থামে বৃষ্টি। এরপর দুই দফায় আম্পায়াররা মাঠ পর্যবেক্ষণ করার পর ওভার কাটার সিদ্ধান্ত নেন। ১৭ ওভারে নেমে আসা ম্যাচ পুনরায় শুরু হয় ৮-১৫ মিনিটে।

বৃষ্টির পর নবম ওভারে প্রথমবার বোলিংয়ে আসেন নাসুম। তার এই ওভারে দুইবার জীবন পান নবি। চতুর্থ বলে কভারে ক্যাচ ফেলেছেন সাকিব। পরের বলেই আবারও এই ব্যাটারকে পরাস্ত করেন নাসুম। নবির ব্যাটের কানা ছুঁয়ে বল উইকেটের পেছনে গেলেও তা গ্লাভসে জমাতে ব্যর্থ হন লিটন। টানা দুই বলে দুই জীবন পেয়েও বেশিদূর এগোতে পারলেন না এই অলরাউন্ডার। পরের ওভারে মুস্তাফিজের লেগ স্টাম্পের বাইরের শর্ট বলে ব্যাট চালিয়ে টাইমিং করতে পারেননি, এজ হয়ে উইকেটের পেছনে ধরা পড়েছেন এই অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার।

১১তম ওভার সাকিব শুরু করেছিলেন উইকেট দিয়ে, শেষও করলেন উইকেট দিয়ে। প্রথম বলে সাকিবকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে লং অনে আফিফের হাতে ধরা পড়েন ইব্রাহিম জাদরান। আর শেষ বলে নজিবুল্লাহ জাদরানকে বোল্ড করেছেন সাকিব। অফ স্টাম্পের বাইরের গুড ল্যান্থের বলে কাট করতে গিয়ে স্টাম্প উপড়ে গেছে তার। এভাবে বল স্টাম্পে আঘাত হানবে তা কিছুতেই যেন বিশ্বাস করতে পারছিলেন না এই ব্যাটার। পরে আম্পায়ারের রিভিওতে দেখা যায়, বলের আঘাতেই স্টাম্প ভেঙেছে।

বৃষ্টির পর দ্রুত ৩ উইকেট হারালেও আজমতউল্লাহ ওমরজাই ও করিম জানাতের জুটি একটা লাফ দেওয়ার চেষ্টা করছিল, সর্বশেষ ম্যাচে যেটি করেছিল নবি ও ওমরজাইয়ের জুটি। তবে শেষ দিকে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত ১৭ ওভারে আফগানিস্তান তুলে ১১৬ রান।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!