উত্তরপশ্চিম ভারতে বন্যা-ভূমিধসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৪৫
ভারতের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলের রাজ্যগুলোতে ছয় দিন আগে শুরু হওয়ার টানা বৃষ্টির তীব্রতা কমলেও থামার আভাস পাওয়া যায়নি। ব্যাপক বৃষ্টিতে হড়কা বান, বন্যা, ভূমিধস ও দুর্ঘটনায় এখানে মৃতের সংখ্যা ১৪৫ জনে দাঁড়িয়েছে।
প্রাকৃতিক এ দুর্যোগে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হিমাচল প্রদেশ ও উত্তরাখণ্ড রাজ্য। হিমাচলে এ পর্যন্ত ৯১ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ক্ষয়ক্ষতি কয়েক হাজার কোটি রুপি ছাড়িয়ে গেছে বলে খবর ভারতীয় গণমাধ্যমের।
উত্তরাখণ্ডে ১৬ জন, হরিয়ানায় ১৬ জন, উত্তর প্রদেশে ১৪ জন এবং পাঞ্জাবে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে।
এসব রাজ্যে আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে ভারতের আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি) । উত্তরাখণ্ডে ১৭ জুলাই পর্যন্ত ভারি বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে বলে জানিয়েছে তারা। ১৬ জুলাই বৃষ্টির সম্ভাবনা বাড়তে পারে জানিয়ে রাজ্যটির বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে বলেছে তারা।
হিমাচল ও উত্তরাখণ্ডে পানির তোড় বেশ কয়েকটি সড়ক ধসে পড়ায় এবং ভূমিধসে অনেকগুলো সড়ক বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এই দুই রাজ্যে বহু পর্যটক আটকা পড়েছেন। তবে ইতোমধ্যে অনেককে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
আইএমডির আবহাওয়া বিজ্ঞানী সুরেন্দ্র পাল বলেছেন, “ইতোমধ্যে প্রচুর বৃষ্টি হওয়ায় মাটি অত্যন্ত নরম হয়ে পড়েছে আর এর জলধারণ ক্ষমতা কমে গেছে। এতে পাহাড়ি এলাকাগুলোতে বন্যা ও ধসের সম্ভাবনা আরও বেড়েছে।”
জুন থেকে শুরু হওয়া এবারের বর্ষা মৌসুমে ভারতের উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্যগুলো রেকর্ড বৃষ্টিপাত দেখেছে। হিমাচল ও পাঞ্জাব প্রদেশে এ সময়ের গড়ের তুলনায় যথাক্রমে ১০০ ও ৭০ শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।
এদিকে টানা বর্ষণে যমুনা নদীর পানি বেড়ে সৃষ্ট বন্যায় ভারতের সুপ্রিম কোর্টসহ রাজধানী দিল্লির বেশকিছু এলাকা ডুবে জনজীবনে ব্যাপক ভোগান্তি তৈরি হয়েছে।
উপচে পড়া যমুনার পানিতে রাজধানীর রাস্তা-ঘাট তলিয়ে যাওয়ায় স্কুল-কলেজ, শশ্মান এমনকি পানি শোধনাগারও বন্ধ ঘোষণা করেছে দিল্লি সরকার। রাজধানীর কিছু এলাকায় খাবার পানির সংকট ও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকতে পারে বলে সতর্ক করেছে কর্তৃপক্ষ।
পরিস্থিতি মোকাবেলায় দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল ভারতীয় সেনাবাহিনীর সহায়তা চেয়েছেন।
দিল্লির পাশ দিয়ে বয়ে চলা যমুনার পানি বৃহস্পতিবার রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছালেও শুক্রবার সকাল থেকে ধীরে ধীরে কমছে বলে এনডিটিভি জানিয়েছে।