কারাগারে শিক্ষানবিস আইনজীবীকে নির্যাতনের বিচার চেয়ে জাস্টিসমেকার্স বাংলাদেশের বিবৃতি
ঢাকার কাশিমপুর কারাগারে কারাকর্মচারীদের অংশগ্রহণ ও প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় সরকারী দলের অঙ্গসংগঠন যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত নেতৃ দ্বারা শিক্ষানবীশ আইনজীবী রুনা লায়লাকে গত ১৯ শে জুন শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের ঘটনায় মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান জাস্টিসমেকার্স বাংলাদেশ গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছে ।
এ ঘটনায় হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতির নেতৃত্বে বিচার বিভাগীয় কমিটি গঠন করে দ্রুত সুষ্ঠ তদন্ত পুর্বক দায়ী কারা কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের চিহ্নিত করে বিভাগীয় ও ফৌজদারী আইনে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহনের আহবান জানিয়েছে জাস্টিসমেকার্স বাংলাদেশ।
বিবৃতিতে বলা হয় বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত খবর ও নির্ভরযোগ্য সুত্রে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায় যে, একটি মামলায় হাজতি আসামি হিসেবে শিক্ষানবিশ আইনজীবী রুনা লায়লা’কে গত ১৬ জুন কাশিমপুর মহিলা কারাগারে আনা হয়। কারাগারের সাধারণ ওয়ার্ডে নেওয়ার পর রুনার দেহ তল্লাশি করে কর্তব্যরত মেট্রন তার কাছে ৭ হাজার ৪০০ টাকা পান। সেই টাকা কেড়ে নেওয়ার জন্য কারাগারের হাজতি শামীমা নূর পাপিয়াসহ তার সহযোগীরা সিসি ক্যামেরা নেই এমন স্থানে তাকে নিয়ে যায়। টাকা দিতে অস্বীকার করলে তারা জোর করে সেই টাকা নিয়ে যায়।
পরর্বতীতে গত ১৯শে জুন পাপিয়া ও তার সহযোগীরা শিকল দিয়ে হাত-পা বেঁধে তাকে অমানবিকভাবে মারধর করে। তাকে জামা কাপরখুলে নগ্ন করে এবং নর্দমার ময়লা দূর্গন্ধযুক্ত পানি পান করতে বাধ্য করে। তাকে না মারার জন্য পাপিয়ার হাত-পায়ে ধরেছে শিক্ষা নবীশ আইনজীবী। কিন্তু তারা আরও বেশি করে মেরেছে। কারাগারের ভেতর তাকে কোনো ধরনের চিকিৎসার সুযোগও দেওয়া হয়নি।
প্রথম দিন থেকেই তাকে ওই কারাগারের হাজতি যুব মহিলা লীগ নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়া, চিফ কারারক্ষী শামীমা, মেট্রন (সুবেদার) ফাতেমা, মহিলা কারারক্ষী হাফিজা, সাহিদা, পাপীয়ার সঙ্গী ও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি রক্সি, হাজতি আন্দনিকা, অবন্তিকা, সোনালী ও নাজমা কিল, ঘুসি, লাথি ও চড়-থাপ্পর মারতে থাকে। তার ব্যবহৃত কানের দুল ও স্বর্ণের চুরি খুলে নেন। তিনি প্রতিবাদ করলে তারা নির্যাতনের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেন।
জাস্টিসমেকার্স বাংলাদেশ এর প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব ও বিশিষ্ট মানবাধিকার আইনজীবী অ্যাডভোকেট শাহানূর ইসলাম উক্ত ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে ঘটনার সাথে জড়িত আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহীনির সদস্য সহ অন্যান্যদের বরখাস্ত ও গ্রেফরতারপূর্বক বিভাগীয় ও ফৌজদারি আইনে সোপর্দ করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের জোর দাবী জানিয়েছেন।
পাশাপাশি ভুক্তভোগী শিক্ষানবীশ আইনজীবীকে উপযুক্ত চিকিৎসা প্রদান এবং তাকে ও তার পরিবারের পূর্ণ নিরাপত্তা প্রদানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জোর দাবী জানিয়েছেন অ্যাডভোকেট শাহানূর ইসলাম।
অ্যাডভোকেট শাহানূর ইসলাম মনে করেন, কারাগারের মত নিরাপদ স্থানে কারাকর্মচারীর অংশগ্রহণ ও প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় সরকারী দলের অঙ্গসংগঠন যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত নেতৃ ও তাঁর সহযোগীদের দ্বারা শিক্ষানবীশ আইনজীবী রুনা লায়লাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের ঘটনা মৌলিক মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
তাছাড়া, নির্যাতন শেষে ভুক্তভোগিকে উপযুক্ত চিকিৎসা প্রদান না করে কারাকর্তৃপক্ষ শুধু দায়িত্বে অবহেলা করেনি, ভোক্তভোগীর মানবাধিকারও লঙ্ঘন করেছে এবং উল্লেখিত ঘটনা কারাকর্তৃপক্ষের অগোচরে ঘটা সম্ভব নয় বিধায় কারাকর্তৃপক্ষ উক্ত ঘটনার দায় কোন ভাবেই এড়িয়ে যেতে পারেন না বলে অ্যাডভোকেট শাহানূর ইসলাম মনে করেন।