ভারতের মহারাষ্ট্রে বাস দুর্ঘটনায় আগুনে পুড়ে মৃত্যু ২৬ জনের
ভারতের মহারাষ্ট্রে একটি দ্রুতগতির বাস দুর্ঘটনার কবলে পড়ার পরে সেটিতে আগুন ধরে যায়। আগুনে ঝলসে এখনও পর্যন্ত ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার রাত প্রায় দুটো নাগাদ ওই ঘটনা বুলঢানা জেলার একটি দ্রুতগতির মহাসড়কে ঘটেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। আহত অবস্থায় সাত জন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। বাসটিতে ৩৩ জন যাত্রী ছিলেন।
বুলঢানা জেলার পুলিশ সুপার সুনীল কাড়াসণে বিবিসিকে জানিয়েছেন ওই বেসরকারি বাসটি নাগপুর থেকে সমৃদ্ধি মহাসড়ক দিয়ে পুণের দিকে যাচ্ছিল।
কীভাবে হল দুর্ঘটনা?
দুর্ঘটনার শিকার বাসটির জীবিত যাত্রীদের কাছ থেকে জানা গেছে যে সিন্ধখেড় রাজা নামের একটি জায়গায় বাসটির টায়ার ফেটে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারায়।
একটি স্তম্ভের সঙ্গে ধাক্কা লেগে এরপর বাসটি উল্টে যায় আর বাসের ডিজেল ট্যাঙ্কে আগুন লেগে বিস্ফোরণ ঘটে।
বিবিসি মারাঠির সংবাদদাতারা জানাচ্ছেন বাসটির সামনের দিকে যাত্রীরা প্রায় সবাই আগুনে ঝলসে মারা গেছেন।
কয়েকজন পিছনের দিকের জানলার কাঁচ ভেঙ্গে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হন।
বেঁচে যাওয়া এক যাত্রীর বয়ান
বেঁচে যাওয়া এক যাত্রী বিবিসিকে জানিয়েছেন, “আমার ছত্রপতি সম্ভাজী নগর স্টপে নামার কথা ছিল। তখনও প্রায় এক ঘণ্টা বাকি ছিল আমার স্টপ আসতে। কিন্তু আমি প্রস্তুত হচ্ছিলাম নামার।
“হঠাৎই বাসটা উল্টে যায়। আমি আর আমার বন্ধু নীচে পড়ে যাই। আমার আগের আসনের কয়েকজনকে দেখি কাঁচ ভেঙ্গে বাইরে বেরুনোর চেষ্টা করছে। আমিও তাদের মতোই জানলা দিয়ে বাইরে লাফ মারি,” জানিয়েছেন ওই বাসযাত্রী।
তার কথায়, “বাস উল্টে যেতেই আগুন ধরে গিয়েছিল। ধীরে ধীরে পুরো বাসটাতেই আগুন ধরে যায়। ভেতর থেকে অন্য যাত্রীদের চিৎকার শুনতে পাচ্ছিলাম, কিন্তু আমাদের কিছুই করার ছিল না।“
মৃতদেহগুলির ডিএনএ পরীক্ষা হবে
দুর্ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যেই পুলিশ এবং দমকল কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। তারপরে নিহতদের দেহগুলি বার করে আনা হয়।
বুলঢাণার জেলাশাসক এইচপি তুম্মুঢ় সংবাদ সংস্থা এএনআইকে জানিয়েছেন, “মৃতদেহগুলির শনাক্তকরণের প্রক্রিয়া চলছে। ডিএনএ পরীক্ষা করার পরে সেগুলি পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে।“
মহাসড়ক নির্মানে ত্রুটির অভিযোগ
মৃতদের এবং তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করে, মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিণ্ডে পাঁচ লক্ষ টাকা করে সহায়তার ঘোষণা করেছেন। ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে টুইট করে জানিয়েছেন মি. শিণ্ডে।
অন্যদিকে মহারাষ্ট্রের এনসিপি নেতা অজিত পাওয়ার নিহতদের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেও প্রশ্ন তুলেছেন ওই সমৃদ্ধি মহাসড়কের নির্মাণ নিয়েই।
তিনি বলছেন , “সমৃদ্ধি হাইওয়ের শুরু থেকেই একাধিক দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয়েছে। বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। সমৃদ্ধি হাইওয়েতে নির্মাণের ত্রুটির কারণেই যে বারবার দুর্ঘটনা হচ্ছে, সেটা প্রমাণিত।“