হন্ডুরাসে নারীদের কারাগারে দাঙ্গায় নিহত অন্তত ৪১
মধ্য আমেরিকার দেশ হন্ডুরাসে নারীদের একটি কারাগারে দাঙ্গায় অন্তত ৪১ জন নিহত হয়েছে। মঙ্গলবার কারাগারের ভেতরে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী অপরাধী দলের মধ্যে সংঘর্ষের পর এক পক্ষ একটি সেলে আগুন ধরিয়ে দেয় বলে জানা গেছে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগুনে অধিকাংশ মৃত্যুর ঘটনা ঘটলেও গুলিতেও কিছু বন্দির মৃত্যু হয়েছে। হন্ডুরাসের উপনিরাপত্তামন্ত্রী জুলিসা ভিয়ানুয়েভা কারাগারটিতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন এবং সহিংসতা দমনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
দমকলকর্মী, পুলিশ ও সামরিক বাহিনীকে ‘অবিলম্বে হস্তক্ষেপ’ করারও অনুমতি দিয়েছেন তিনি। “মানুষের প্রাণহানি সহ্য করা হবে না,” বলেছেন তিনি।
বিবিসি জানিয়েছে, নিহতরা সবাই হন্ডুরাসের রাজধানী তেগুচিগালপা থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরের কারাগারটির কয়েদি কিনা তা পরিষ্কার হয়নি। কারাগারটির ধারণক্ষমতা প্রায় ৯০০ জন। আহত আরও বেশ কয়েকজন বন্দিকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
বন্দিদের পরিবারের সদস্যদের প্রতিনিধিত্বকারী সমিতির সভাপতি দিলমা অর্দোনিস বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, মঙ্গলবার ভোররাতের দিকে কারাগারের ভেতরে দুটি প্রতিদ্বন্দ্বী অপরাধী গোষ্ঠী বারিও ১৮ এবং মারা সালভাত্রুচা (এমএস-১৩) এর মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়।
এরপর তাদের মধ্যে দাঙ্গা হয় বলে স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে। সহিংসতায় কারাগারটির একটি অংশ ‘সম্পূর্ণ ধ্বংস’ হয়ে গেছে বলে অর্দোনিস গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসা বিভিন্ন ভিডিওতে কারাগারটি থেকে প্রচুর ধোঁয়া উঠতে দেখা গেছে।
হন্ডুরাসের প্রেসিডেন্ট সিওমারা কাস্ত্রো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বলেছেন, ‘নারীর অবিশ্বাস্য এই হত্যাকাণ্ডে’ তিনি স্তম্ভিত হয়েছেন আর এর প্রতিক্রিয়ায় ‘কঠোর ব্যবস্থা’ গ্রহণ করবেন।
ভিয়ানুয়েভা জানিয়েছেন, ‘কারাগারে সংগঠিত অপরাধের সঙেগ্ জড়িত সবাইকে’ বিচারের মুখোমুখি করার জন্য তদন্ত শুরু করা হবে।
হন্ডুরাস দুর্নীতি ও অপরাধী দলগুলোর সহিংসতার জন্য পরিচিত। সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতেও এসব অপরাধ ছড়িয়ে পড়েছে আর তাতে দেশজুড়ে হত্যাকাণ্ডের হার বেড়ে গেছে।
প্রতিবেশী এল সালভাদর ও গুয়াতেমালার পাশাপাশি হন্ডুরাস দক্ষিণ আমেরিকা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে কোকেন চোরাচালানের অন্যতম প্রধান রুট। হন্ডুরাসে প্রাণঘাতী কারাদাঙ্গার ইতিহাস আছে যা প্রায়ই সংগঠিত অপরাধের সঙ্গে সম্পর্কিত।
২০১৯ সালে দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় বন্দর শহর তেলার কারাগারে অপরাধী দলগুলোর সহিংসতায় অন্তত ১৮ জন নিহত হয়েছিল।