ধেয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়ের’ তাণ্ডবে ভারতে নিহত ৭
ভারতে ধেয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয় মোকাবেলায় পশ্চিম উপকূল থেকে কর্তৃপক্ষ লোকজনকে সরিয়ে নিতে শুরু করার মধ্যেই এ ঝড় আগাম তাণ্ডব শুরু করে দিয়েছে।
মুম্বাইয়ে উত্তাল সমুদ্রে ডুবে গেছে ৪ বালক। ওদিকে, গুজরাটে গাছ উপড়ে পড়ে দেয়াল ধসে নিহত হয়েছে আরও তিনজন।
প্রচণ্ড শক্তি নিয়ে ঘূর্ণিঝড়টি ভারতের গুজরাট রাজ্য এবং প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলের দিকে ধেয়ে যাওয়ার দুইদিন আগে থেকেই লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে।
আরব সাগরে সৃষ্ট এ ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়’ অতিপ্রবল ঝড়ে রূপ নিয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায়ই গুজরাটের মান্দবি এবং পাকিস্তানের করাচিতে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১২৫ থেকে ১৩৫ কিলোমিটার বাতাসের গতিবেগ নিয়ে ঝড় আছড়ে পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
ঝড়টি গতি বাড়িয়ে ঘন্টায় ১৫০ কিলোমিটার বেগেও ধেয়ে আসতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে ভারতের আবহাওয়া দপ্তর।
মুম্বাইয়ের এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, “সোমবার সন্ধ্যায় জুহু সৈকতে ৪ বালক ডুবে গেছে। এ পর্যন্ত আমরা দুইজনের লাশ খুঁজে পেয়েছি। বাকী দুইজনের লাশ উদ্ধারের জন্য খোঁজ চলছে।”
আরব সাগরের উত্তাল ঢেউ এর সঙ্গে প্রবল বৃষ্টি এবং ঝড়ো বাতাস গুজরাটের উপকূলীয় এলাকাগুলোর ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে। এতে গাছ উপড়ে পড়ে দেয়াল ধসে কুচ এবং রাজকোট জেলায় তিনজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
রাজ্য সরকার বলেছে, গুজরাটের উপকূল অঞ্চলে ৮ টি জেলা ঝড়ের তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। ফলে ওইসব এলাকায় মাছ ধরার কাজ শুক্রবার পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয়েছে। স্কুলগুলোতে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
গুজরাটে বহু অফশোর তেল কোম্পানি এবং বড় বড় বন্দর আছে। সেগুলোর বেশিরভাগই কাজ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছে।
ঝড় মোকাবেলা এবং উদ্ধারকাজের জন্য জাতীয় বিপর্যয় মোকাবেলা বাহিনীর ২১ টি এবং রাজ্য বিপর্যয় মোকাবেলা বাহিনীর ১৩ টি দলের সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে গুজরাট সরকার।
রাজ্যের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা কামাল দায়ানি বলেছেন, আমরা এরই মধ্যে উপকূলীয় এলাকাগুলো থেকে লোকজনকে সরিয়ে নিতে শুরু করেছি। এ পর্যন্ত ৭ হাজারের বেশি মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এ সংখ্যা ৫০ থেকে ৬০ হাজার ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ঝড়ের কারণে ভারতের গুজরাটের দুইটি বৃহত্তম বন্দর কান্দলা এবং মুন্দ্রার কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে রাজ্য সরকার। বেদি, নবলক্ষ্মী, পরবান্দর, ওখাসহ আরও কয়েকটি বন্দরের কাজও বন্ধ হয়ে গেছে।