এক দশক পর ঢাকায় জামায়াতে ইসলামীর সমাবেশ

সাময়িকী ডেস্ক
সাময়িকী ডেস্ক
5 মিনিটে পড়ুন

এক দশক পর ঢাকায় জামায়াতে ইসলামীর সমাবেশ

বাংলাদেশের ঢাকায় এক দশকের বেশি সময় পর সমাবেশ করেছে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ, যেখানে তাদের নিবন্ধন ফিরিয়ে দেয়ার দাবি করা হয়েছে। সেই সঙ্গে দলের তিন দফা দাবি তুলে ধরা হয়েছে।

ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশনে ওই সমাবেশে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি শফিকুল ইসলাম মাসুম বলেছেন, “বাংলাদেশ জামাতে ইসলামীর যে নিবন্ধন ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে তা ফিরিয়ে দিতে হবে।”

২০১৩ সালের পহেলা অগাস্ট জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল ও অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্ট। ২০১৮ সালের আটই ডিসেম্বর দলটির নিবন্ধন বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। নিবন্ধন না থাকায় সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে পারেনি দলটি।

জামায়াতে ইসলামীর এই সভায় দলের তিন দফা দাবি তুলে ধরা হয়।

- বিজ্ঞাপন -

ঢাকা মহানগরের নায়েবে আমির হেলালউদ্দিন, “তিনটি দাবিতে মিলিত হয়েছি সমাবেশে। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি রোধ করতে হবে, জামায়াতের নেতাদের মুক্তি দিতে হবে ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে।”

তাদের দাবি, গত ১৪ বছরে তাদের নেতাকর্মীদের ওপর দেড় লক্ষাধিক মামলা করা হয়েছে এবং প্রায় ১৪ হাজার নেতাকর্মী কারাগারে রয়েছে।

এক দশক পর ঢাকায় জামায়াতে ইসলামীর সমাবেশ
জামায়াতে ইসলামীর সমাবেশ থেকে তিন দফা দাবি তুলে ধরা হয়েছে। ছবি সংগৃহীত

জামায়াতের নেতারা ইঙ্গিত দিয়েছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে তারা যৌথ আন্দোলন শুরু করতে পারেন।

কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মোবারক হোসেন বলেন, “কেয়ারটেকার সরকারের দাবিতে ভবিষ্যতে যুগপৎ আন্দোলন, যৌথ আন্দোলন শুরু হতে পারে। আন্দোলন ছাড়া এই সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরানো যাবে না।”

সমাবেশ স্থল থেকে বিবিসির সংবাদদাতা নাগিব বাহার জানাচ্ছেন, সমাবেশে জামায়াতে ইসলামীর বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী অংশ নিয়েছেন। ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশনের ভেতরের মিলনায়তনে সবার জায়গা না হওয়ায় অনেকে বাইরে অবস্থান নিয়েছেন।

- বিজ্ঞাপন -

সমাবেশ স্থলের বাইরে এবং আশেপাশের এলাকায় পুলিশ সদস্যদের সতর্ক অবস্থানে থাকতে দেখা গেছে।

প্রায় এক দশক পর ঢাকায় সমাবেশ করার অনুমতি পেয়েছে ধর্মভিত্তিক এই রাজনৈতিক দলটি। পুলিশের অনুমতি নিয়ে দলটি সর্বশেষ সমাবেশ করেছিল ২০১৩ সালের নয় ফেব্রুয়ারি।

তিনটি শর্তে জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখাকে ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশনের মিলনায়তনে সমাবেশের মৌখিক অনুমতি দেয়া হয়। এসব শর্তের মধ্যে রয়েছে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা যাবে না, যানজট সৃষ্টি করা যাবে না এবং মিলনায়তনের ভেতরেই সমাবেশ করতে হবে।

- বিজ্ঞাপন -
এক দশক পর ঢাকায় জামায়াতে ইসলামীর সমাবেশ
এই সমাবেশের মাধ্যমে জামায়াতে ইসলামী তুলে ধরতে চায় যে দল হিসেবে তারা এখনো ‘দুর্বল হয়নি’। ছবি সংগৃহীত

প্রথম দফায় গত ৫ই জুন সমাবেশ করতে চাইলেও সে অনুমতি মেলেনি পুলিশের তরফ থেকে। তারিখ পরিবর্তন করে ১০ই জুন বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে সমাবেশের অনুমতি চেয়েছে জামায়াতে ইসলামী।

তবে পুলিশ সেখানে অনুমতি না দিয়ে ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউটে সমাবেশের অনুমতি দেয়।

যে প্রতিনিধি দলটি ঢাকায় পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে গিয়েছিলেন, তাদের নেতৃত্বে ছিলেন আইনজীবী সাইফুর রহমান। তিনি বিবিসি বাংলাকে বলেন, পুলিশের অনুমতি পেলে সমাবেশে এতো লোকসমাগম হবে যেটি ‘আউট অব ইমাজিনেশন’ বা ধারণারও বাইরে।

গত বারো বছর যাবত বিভিন্ন সময় আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী ও সিনিয়র নেতারা দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করার পক্ষে কথা বলেছেন।

আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী এমন কথাও বলেছিলেন যে জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করা শুধু সময়ের ব্যাপার।

কিন্তু দৃশ্যত জাতীয় নির্বাচন ঘিরে জামায়াতে ইসলামী পুনরায় সরব হয়ে উঠেছে।

এই সমাবেশের মাধ্যমে জামায়াতে ইসলামী তুলে ধরতে চায় যে দল হিসেবে তারা এখনো ‘দুর্বল হয়নি’ এবং তাদের নেতা-কর্মীরা এখনো ‘সক্রিয় ও চাঙ্গা’ রয়েছে।

এক দশক পর ঢাকায় জামায়াতে ইসলামীর সমাবেশ
সমাবেশ স্থলের একটি চিত্র। ছবি সংগৃহীত

শনিবার সমাবেশস্থলে আসা জামায়াতে ইসলামীর একজন কর্মী বিবিসিকে বলেন, “১৫ বছর মিছিল-মিটিং করতে পারি নাই। স্থানীয়ভাবে ছোট পরিসরে রাজনৈতিক কার্যক্রম চালিয়ে গেছি। ধরপাকড়, হামলা-মামলা লেগেই ছিল আমাদের বিরুদ্ধে।”

“সামনে যেহেতু নির্বাচন, দেশের মানুষের ভোটাধিকার প্রয়োগের বিষয় রয়েছে। নির্বাচনকে সামনে রেখেই আমরা আবার সংগঠিত হতে পারবো বলে বিশ্বাস করি,” তিনি বলেন।

দলটির নেতারা বলছেন, গত ১৫ বছরে জামায়াতে ইসলামী রাজনৈতিকভাবে যে প্রতিকূল পরিস্থিতির মোকাবেলা করেছে সেটি তুলে ধরা হবে এই সমাবেশে।

২০১২ সালে যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরুর পর থেকে জামায়াত ইসলামী রাজনৈতিকভাবে কার্যত কোণঠাসা অবস্থায় রয়েছে। নির্বাচন কমিশনে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল হয়ে যাবার পর কোন নির্বাচনে দলীয়ভাবে অংশ নিতে পারেনি দলটি।

গত ১০ বছরের বেশি সময় ধরে ঢাকার মগবাজারে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় বন্ধ রয়েছে। জেলা কিংবা উপজেলা পর্যায়ে জামায়াতে ইসলামীর অফিসগুলোও বন্ধ রয়েছে।

গুগল নিউজে সাময়িকীকে অনুসরণ করুন 👉 গুগল নিউজ গুগল নিউজ

এই নিবন্ধটি শেয়ার করুন
একটি মন্তব্য করুন

প্রবেশ করুন

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন?

আপনার অ্যাকাউন্টের ইমেইল বা ইউজারনেম লিখুন, আমরা আপনাকে পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার জন্য একটি লিঙ্ক পাঠাব।

আপনার পাসওয়ার্ড পুনরায় সেট করার লিঙ্কটি অবৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বলে মনে হচ্ছে।

প্রবেশ করুন

Privacy Policy

Add to Collection

No Collections

Here you'll find all collections you've created before.

লেখা কপি করার অনুমতি নাই, লিংক শেয়ার করুন ইচ্ছে মতো!