সাত বছর পর সৌদি আরবে খুলল ইরানের দূতাবাস
দীর্ঘ সাত বছর কূটনৈতিক টানাপোড়েনের পর সৌদি আরবে আবারও দূতাবাস খুলেছে ইরান। সৌদি আরব ও ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা সাক্ষাৎও করেছেন। সৌদি আরবের আল-অ্যারাবিয়া টেলিভিশন এ তথ্য জানিয়েছে।
ইরানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী আলিরেজা বিগদেলি বলেছেন, দুই দেশের এই সম্পর্ক নতুন যুগে প্রবেশের এক চিহ্ন।
চীনের মধ্যস্থতায় পারস্য উপসাগরীয় দেশগুলো সম্পর্ক পুনরুদ্ধারে সম্মত হওয়ার তিন মাস পর ইরান সৌদি আরবে দূতাবাস খুলল।
এর আগে ২০১৬ সালে সৌদি আরবে এক শিয়া আলেমকে শিরশ্ছেদ করে। এতে তেহরানে অবস্থিত সৌদি দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ শুরু করে ইরানিরা। এর পরিপ্রেক্ষিতে সৌদি আরব তেহরানের দূতাবাসটি বন্ধ করে দেয়।
গত শুক্রবার কেপটাউনে সৌদি প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান আল সৌদের সঙ্গে এক বৈঠক করেছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আবদুল্লাহিয়ান। বৈঠকে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অগ্রগতি নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রিন্স ফারহানকে উদ্ধৃত করে আরও বলেছেন, তেহরানে সৌদি দূতাবাস পুনরায় খোলার সব প্রস্তুতি চলছে। বিষয়টিকে এগিয়ে নিতে প্রিন্স ফারহান শিগগিরই তেহরান সফরে যাবেন।
সৌদি আরব নিজেদের নেতৃস্থানীয় সুন্নি মুসলিম শক্তি হিসেবে দেখে এবং একই অঞ্চলের বৃহত্তম শিয়া মুসলিম দেশ ইরান কয়েক দশক ধরে আঞ্চলিক আধিপত্যের লড়াইয়ে আটকে আছে। কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ‘বদলি যুদ্ধের’ কারণে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা আরও তীব্র হয়েছে।
সৌদি আরব ২০১৫ সাল থেকে ইয়েমেনে হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে দেশটির সরকারপন্থী বাহিনীকে সমর্থন করে আসছে। এসব হুতি বিদ্রোহী সৌদি আরবের তেল সংশোধনাগারে মিসাইল ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে। হামলার পর সৌদি আরব দাবি করেছিল, হুতিদের অস্ত্র দিয়েছে ইরান। তবে ইরান এই অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে।
সৌদি আরব, লেবানন ও ইরাকে হস্তক্ষেপের অভিযোগ রয়েছে ইরানের বিরুদ্ধে, যেখানে ইরান সমর্থিত শিয়া মিলিশিয়ারা এই এলাকায় সামরিক ও রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করেছে।
তাঁরা উপসাগরে কার্গো ও তেল ট্যাংকার আক্রমণ, ২০১৯ সালে বড় সৌদি তেল স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন হামলার পেছনে ছিল। তবে ইরান এসব হামলায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে।
এদিকে সৌদি আরবে ইরান দূতাবাস খোলার পর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন সৌদি আরব সফর করেছেন।
স্থানীয় সময় বুধবার ব্লিনকেন সৌদিতে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে ইরান, তেলের দাম, এই অঞ্চলে চীন-রাশিয়ার প্রভাব, ইসরায়েল-সৌদি আরব সম্পর্ক, আর্থিক সহযোগিতা, ক্লিন এনার্জি ও প্রযুক্তিগত বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।