ইরানে মাশা আমিনির মৃত্যুর খবর করা ২ নারী সাংবাদিকের বিচার শুরু
তেহরানে পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু হওয়া কুর্দি তরুণী মাশা আমিনির খবর সংশ্লিষ্ট কয়েকটি অভিযোগে দুই নারী সাংবাদিকের বিচার শুরু করেছে ইরানের আদালত।
আট মাস ধরে জেলে থাকা সাংবাদিক নিলুফার হামেদি (৩০) ও সাংবাদিক এলাহেহ মোহাম্মাদির (৩৬) বিরুদ্ধে একই ধরনের অভিযোগ থাকলেও তাদের আলাদা আলাদা আদালতে বিচার হচ্ছে বলে জানিয়েছে প্যারিসভিত্তিক একটি বার্তা সংস্থা।
এ দুজনের মধ্যে এলাহেহের বিচার সোমবার থেকে শুরু হয়েছে। আর নিলুফার হামেদির রুদ্ধদ্বার বিচার মঙ্গলবার থেকে ইরানের একটি বিপ্লবী আদালতে শুরু হয়েছে বলে নিলুফারের স্বামী নিশ্চিত করেছেন, জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
নিরাপত্তা হেফাজতে মাশা আমিনির মৃত্যু গত বছর ইরানকে কয়েক মাস অস্থির করে রেখেছিল।
মুসলিম শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটিতে নারীদের ঘরের বাইরে কঠোর পোশাকবিধি মেনে চলতে হয়; ওই বিধি ভঙ্গের অভিযোগে ইরানের নীতি পুলিশ মাশা আমিনিকে আটক করেছিল, পরে তাদের হেফাজতে থাকা অবস্থাতেই ওই তরুণীর মৃত্যু হয়।
মাশার মৃত্যু ইরানের সর্বস্তরে ক্ষোভের সঞ্চার করে; এর ধারাবাহিকতায় দেশটিতে কয়েকমাস ধরে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ দেখা যায়, যা কয়েক দশকের মধ্যে দেশটির মোল্লাতন্ত্রকে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে।
সংস্কারপন্থি শার্ক ডেইলির জন্য তোলা নিলুফার হামেদির এক ছবিতে তেহরান হাসপাতালে মাশার বাবা-মাকে একে অপরকে জড়িয়ে ধরে থাকতে দেখা গেছে, ওই হাসপাতালেই তখন তাদের মেয়ে কোমায় ছিলেন।
২২ বছর বয়সী মাশার অবস্থা যে ভালো নয়, সেই ছবিই প্রথম বিশ্বকে জানায়।
“মঙ্গলবারের বিচারিক অধিবেশন দুই ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে শেষ হয়। তার (নিলুফার) আইনজীবীরা তার পক্ষে কিছু বলার সুযোগ পায়নি, তার পরিবারের সদস্যদের আদালতে উপস্থিতি থাকার অনুমতিও ছিল না,” টুইটারে এমনটাই বলেছেন নিলুফারের স্বামী মোহাম্মদ হোসেইন আজরলু।
“নিলুফার তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং সে যে আইনের ভিত্তিতে সাংবাদিক হিসেবে নিজের দায়িত্বটুকুই পালন করেছিল, তা জোর দিয়ে বলেছে,” বলেন আজরলু।
মাশা আমিনির মৃত্যুর খবর করায় কর্তৃপক্ষ নিলুফার এবং এলাহেহের বিরুদ্ধে ‘বৈরি শক্তির সঙ্গে যোগসাজশসহ’ একাধিক অভিযোগ এনেছে।
ইরানের গোয়েন্দা মন্ত্রণালয় গত বছরের অক্টোবরে এই দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ এনেছিল।
ইরানের শাসকগোষ্ঠী গত বছরের বিক্ষোভের জন্য যুক্তরাষ্ট্রসহ একাধিক দেশকে দায় দিয়ে বলেছিল, ইসলামী প্রজাতন্ত্রটিকে অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যেই সরকারবিরোধী ওই বিক্ষোভ উসকে দেওয়া হয়েছিল।