মোখায় বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের দুর্গতদের জন্য সাড়ে ৩৭ কোটি ডলার প্রয়োজন: জাতিসংঘ
মিয়ানমার ও বাংলাদেশে ঘূর্ণিঝড় দুর্গত এলাকার লাখ লাখ মানুষকে খাবার, ওষুধ ও অন্যান্য ত্রাণ সহায়তা দিতে সাড়ে ৩৭ কোটি ডলার প্রয়োজন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
গত ১৪ মে মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চল এবং প্রতিবেশী বাংলাদেশের তৎসংলগ্ন এলাকায় আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় মোখা। যা শতাধিক মানুষের প্রাণ কেড়ে নেয়। সম্পদেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, জাতিসংঘ মিয়ানমারের ঘূর্ণিঝড় দুর্গতদের জন্য বরাদ্দ ২১ কোটি ১০ লাখ ডলারের সঙ্গে বাড়তি আরো ১২ কোটি ২০ লাখ ডলারের আবেদন করেছে।
আর বাংলাদেশের জন্য আলাদা করে আরো চার কোটি ২০ লাখ ডলার প্রয়োজন বলে জানিয়েছে।
মিয়ানমারের জন্য জাতিসংঘের রেসিডেন্ট কোঅর্ডিনেটর রামানাথান বালাকৃষ্ণান বলেন, ‘‘আমরা এখন সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত সব মানুষকে নিরাপদ আশ্রয় প্রদান এবং পানিবাহিত রোগের বিস্তার রোধে কাজ করছি।”
এই ত্রাণ কার্যক্রমে সহায়তার জন্য দাতাদের ‘বড় অংকের অর্থ’ প্রদান প্রয়োজন বলেও জানান তিনি।
জাতিসংঘ এমন একটি সময়ে ত্রাণ সহায়তার আবেদন করেছে যখন নানা মানবিক সংগঠন ঘূর্ণিঝড়ে মিয়ানমারের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলগুলোতে ত্রাণ সহায়তা পৌঁছাতে রীতিমত লড়াই করছে। তাদেরকে দেশটির জান্তা সরকারের অনুমতির অপেক্ষাও করতে হচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন জ্যেষ্ঠ ত্রাণ কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার পর দুর্গত এলাকায় ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম চালাতে তারা এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে জান্তা শাসকদের অনুমতির অপেক্ষা করছেন। দেশটির বাণিজ্যিক রাজধানী ইয়াংগনের গুদামে ত্রাণ পড়ে আছে।
তিনি বলেন, ‘‘যদি আমাদের বিনা বাধায় পূর্ণ শক্তিতে ত্রাণ বিতরণের জন্য প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হত তবে এতদিনে আমরা গুদাম খালি করে ফেলতে পারতাম।”
সামরিক বাহিনী থেকে প্রতিরোধ আসতে পারে এই ভয়ে ত্রাণ সংস্থাগুলো বাইরে জনসম্মুখে কথা বলতে পারছে না বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে জানতে রয়টার্সের পক্ষ থেকে জান্তা শাসকদের মুখপাত্রের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তার সাড়া পাওয়া যায়নি।
ঘূর্ণিঝড়ের পর সেনাশাসকদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, মিয়ানমারে ঝড়ে ১৪৫ জন প্রাণ হারিয়েছে এবং তারা দুর্গত এলাকায় ত্রাণ পাঠিয়েছেন।
ঘূর্ণিঝড়ে মিয়ানমারের পাঁচটি অঞ্চলের প্রায় ১৬ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেগুলো হলো: চিন, সাগাইং, মাগওয়ে, কাচিন ও রাখাইন।
অন্যদিকে, বাংলাদেশে ‘অত্যাধুনিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা’ বহু মানুষের প্রাণ রক্ষা করেছে বলে মনে করেন ঢাকায় জাতিসংঘের রেসিডেন্ট কোঅর্ডিনেটর গুইন লুইস। তবে ঝড়ে অবকাঠামো ও বাড়িঘরের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।