ঘূর্ণিঝড় মোখায় মিয়ানমারে ক্ষতিগ্রস্ত ৮ লাখ মানুষ
মিয়ানমারে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার তাণ্ডবে প্রায় আট লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জাতিসংঘ জানিয়েছে। এদের সবার জরুরি খাদ্য ত্রাণ ও অন্যান্য সাহায্য দরকার বলে জানিয়েছে বিশ্ব সংস্থাটি।
এক সপ্তাহেরও বেশি সময় আগে মোখা ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৯৫ কিলোমিটার বাতাসের বেগ নিয়ে মিয়ানমারের পশ্চিম উপকূলীয় রাজ্য রাখাইনে আঘাত হানে, এখানে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর পর ঝড়টি প্রতিবেশী চীন রাজ্য এবং সাগাইঙ্গ ও মাগউই অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যায়।
এই ঘূর্ণিঝড়ে ১৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে মিয়ানমারের জান্তা সরকার জানিয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন গণমাধ্যম ও বেসরকারি সংস্থা মৃত্যুর সংখ্যা কয়েকশ হবে বলে জানিয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় মোখা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে যে এলাকাগুলো দিয়ে গিয়েছে সেখানে সবকিছু লণ্ডভণ্ড করে দিয়ে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ঘটিয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের খাদ্য কর্মসূচী (ডব্লিউএফপি); খবর ইরাবতী নিউজের ।
রাখাইনের উদ্বাস্তু শিবিরগুলোতে লাখ লাখ মুসলিম রোহিঙ্গা বসবাস করে, যারা কয়েক দশকের জাতিগত ও সাম্প্রদায়িক হানাহানিতে ঘরবাড়ি হারিয়েছে।
ডব্লিউএফপির এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের সহকারী পরিচালক অ্যান্থিয়া ওয়েব বলেছেন, “ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে ঘরবাড়ি মাটিতে মিশে গেছে, উপড়ে পড়া গাছে রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে, হাসপাতাল ও স্কুল ধ্বংস হয়ে গেছে আর টেলিযোগাযোগ ও বৈদ্যুতিক লাইনও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।”
তিনি বলেন, “সেখানে অন্তত ৮ লাখ মানুষের জরুরি ভিত্তিতে খাদ্য সহায়তা দরকার।”
“আমরা বিভিন্ন এলাকায় প্রবেশ করার পর আরও খাদ্য, আশ্রয়, পানি, স্বাস্থ্য ও মানবিক সহায়তার প্রয়োজন দেখা দেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে,” বলেছেন তিনি।
ওয়েব জানান, মোখার আঘাত হানার আগে থেকেই ডব্লিউএফপি এই নিয়ে কাজ শুরু করে দিয়েছিল আর ঝড়টি পার হয়ে যাওয়ার পরপরই সংস্থাটি রাখাইন ও প্রতিবেশী মাগউই অঞ্চলে আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে অবস্থানরত পরিবারগুলোকে জরুরি খাদ্য সহায়তা দিতে শুরু করেছে।
তিনি আরও জানান, তাদের সংস্থা মিয়ানমারের রাখাইন ও চীন রাজ্য এবং মাগউই অঞ্চলের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর অন্তত ৮ লাখ মানুষকে প্রাথমিকভাবে তিন মাসের জন্য সব ধরনের সহায়তার লক্ষ্য নিয়েছে। এদের প্রায় অর্ধেকই আগে থেকেই উদ্বাস্তুর জীবযাপন করছে।
মোখায় ক্ষতিগ্রস্ত ৮ লাখ সহ মিয়ানমারে অভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তুতে পরিণত হওয়া ২১ লাখ মানুষের জরুরি সহায়তার জন্য জাতিসংঘের ৬ কোটি ডলার দরকার বলে জানিয়েছেন তিনি।