মিয়ানমারে বিরোধীদের সঙ্গে সংঘর্ষে তিন দিনে ২৬ সেনা নিহত
মিয়ানমারজুড়ে সেনাশাসনবিরোধী পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস (পিডিএফ’এস) ও আদিবাসী সশস্ত্র সংস্থার (ইএও) একের পর এক হামলায় তিন দিনেই অন্তত ২৬ সেনা হারিয়েছে দেশটির ক্ষমতাসীন জান্তা।
এসব হামলায় বিরোধীদের এক যোদ্ধাও নিহত হয়েছে বলে পিডিএফ’এস ও ইএও এর বরাত দিয়ে জানিয়েছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ইরাবতী।
বাগো অঞ্চলে জান্তা সমর্থিত বাহিনীর সঙ্গে গোলাগুলির পর একটি কারাগার থেকে সেনাশাসনবিরোধী ১০ রাজনৈতিক যোদ্ধা পালিয়েছে। জান্তা সমর্থিত একটি টেলিগ্রাম চ্যানেলও ওই ১০ বন্দির পালানোর খবর দিয়েছে।
এর বাইরে সশস্ত্র বিরোধীরা মাগোয়ে, মান্দালয়, সাগাইং অঞ্চল ও মোন রাজ্যে জান্তার সেনাদের ওপর হামলা চালিয়েছে।
হামলা এবং ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে সেনাবাহিনীর কাছ থেকে কিছু জানা যায়নি। ইরাবতীও স্বতন্ত্রভাবে এসব খবর যাচাই করতে পারেনি।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার বাগোর টাউনগো এলাকার কারাগার থেকে জান্তাবিরোধী ১০ রাজবন্দি পালিয়ে যান।
চিত মিন থু-র নেতৃত্বে ওই দলটি পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছ থেকে দুটি অস্ত্র চুরি করে পালায় বলে জানিয়েছে জান্তাসমর্থিত টেলিগ্রাম চ্যানেল নিউজ অব মিয়ানমার।
ওই বন্দিদেরকে আদালতে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতির সময় এ ঘটনা ঘটে, বলেছে তারা।
পালাতে উদ্যত ওই বন্দিদের ধরতে গিয়ে গোলাগুলিতে সামরিক বাহিনীর এক সার্জেন্ট নিহত এবং জান্তার আরেক সেনা আহত হয়েছে; গোলাগুলির পর জান্তাবিরোধী বন্দিরা সেনাদের দুটি অস্ত্রও নিয়ে যায়, বলেছে জান্তাসমর্থিত সংবাদমাধ্যম।
ইয়েসাগিয়ো পিডিএফ জানিয়েছে, মাগোয়ে অঞ্চলে বুধবার তাদের হামলায় জান্তা সেনা ও পিউ হতি মিলিশিয়ার অন্তত ৮ জন নিহত হয়েছে।
তিনটি যানে চেপে যাওয়া জান্তাসমর্থিত ৮০ সেনার ওপর অতর্কিতে চালানো এ হামলায় ১০টি ল্যান্ডমাইন ব্যবহারের কথাও জানিয়েছে তারা।
জান্তাসমর্থিত গ্রাম জি ত থেকে সিন চুয়াং গ্রামে যাওয়ার পথে সেনাদের বহরের ওপর ওই হামলা হয়।
একইদিন কিউন হ্লা পিডিএফ ও কানবালু জেলা পিডিএফ কিউন হ্লা এলাকার কাই কোন গ্রামে জান্তাসমর্থিত একটি মিলিশিয়া গ্রুপের ওপর হামলা চালিয়ে তাদের নেতা মিইন্ট নাইংসহ চারজনকে হত্যা করেছে বলে জানিয়েছে জান্তাবিরোধীরা।
পাল্টা হামলায় জান্তাসমর্থিত গোষ্ঠীটির নেতা নাইংয়ের স্ত্রী ও তার সন্তানও নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে তারা। এই অভিযানে পিডিএফের এক যোদ্ধাও নিহত হয়েছে।
জান্তাবিরোধীদের ভাষ্য, ওই এলাকায় নির্যাতন-নিপীড়ন ও চাঁদাবাজিতে নাইংয়ের কুখ্যাতি আছে। জান্তাসমর্থিত এই মিলিশিয়া নেতা সেনাদের ডেকে এনে ওই এলাকার বিভিন্ন গ্রামে লুটপাট চালাত ও বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিত।
বৃহস্পতিবার মান্দালয়ের মাদায়া এলাকার পশ্চিমে সেনাবাহিনীর একটি দলের ওপর অতর্কিতে হামলা চালিয়ে দুই সৈন্যকে হত্যা করার দাবি করেছে স্থানীয় সশস্ত্র গোষ্ঠী তাওগি মোয়ায় বুয়ে।
একইদিন মোন রাজ্যের বিলিন এলাকায় নাল চার গ্রামের কাছে কারেন ন্যাশনাল আর্মিসহ (কেএনএলএ) জান্তাবিরোধী বিভিন্ন গোষ্ঠীর সদস্যরা একত্রে জান্তার ১০০ সেনার একটি দলের ওপর হামলা চালালে সংঘর্ষ বেধে যায়। ওই সংঘর্ষে জান্তার অন্তত তিন সেনা নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে হামলায় অংশ নেওয়া কায়াখতো রেভ্যুলেশনারি ফোর্স।