ফিলিস্তিনি বন্দি মৃত্যুতে পাল্টাপাল্টি হামলার পর যুদ্ধবিরতিতে ইসরায়েল-হামাসের
চলমান উত্তেজনা নিরসনে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে ইহুদিবাদী ইসরায়েলের সেনাবাহিনী ও ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস।
মঙ্গলবার (২ মে) ইসরায়েলের কারাগারে খাদের আদনান নামে আমরণ অনশনকারী এক ফিলিস্তিনি বন্দি মারা যান। এর জবাবে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় হামাস ও ইসলামিক জিহাদ গ্রুপ। এরপর এদিন রাতের বেলা গাজা উপত্যকায় বিমান হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। তবে এই হামলা ও পাল্টা হামলা যেন বড় আকার ধারণ না করে সেজন্য আপাতত যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছেছে তারা।
বুধবার (৩ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
অপরদিকে বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে একটি সূত্র জানিয়েছে, মিসর, কাতার এবং জাতিসংঘের কর্মকর্তাদের মধ্যস্থতায় বুধবার রাত ৩টা ৩০ মিনিট থেকে এ যুদ্ধবিরতি শুরু হয়।
বিবৃতিতে হামাস জানিয়েছে, তারা ‘গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন’ বন্ধে মিসর, কাতার ও জাতিসংঘের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে।
বিবৃতিতে সশস্ত্র গোষ্ঠীটি আরও জানিয়েছে, তাদের নেতা ঈসমাইল হানিয়ে এ দুটি দেশ এবং জাতিসংঘের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা করেন।
আল জাজিরা অ্যারাবিককে ফিলিস্তিনের একটি সূত্র জানিয়েছে, গাজায় যেন ইসরায়েল আর কোনো হামলা না চালায় সেটির আলোচনার ফলই এই যুদ্ধবিরতি। এছাড়া আদনানের মৃত্যুর পর ফিলিস্তিনের আরেকটি সশস্ত্র দল ইসলামিক জিহাদ গ্রুপ ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়ার বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছে হামাস।
এদিকে মঙ্গলবার ইসরায়েলি বন্দিদশায় মারা যান খাদের আদনান। ৯ সন্তানের এ জনককে মোট ১২ বার আটক করেছিল ইসরায়েল। ৪৫ বছর বয়সী আদনান তার জীবনের আট বছর কাটিয়েছিলেন কারাগারেই। যে ১২ বার তাকে আটক করা হয়েছিল সেগুলোর প্রায় সবগুলোই হয়েছিল কথিত ‘এডমিনিস্ট্রেটিভি ডিটেনশন’ আইনের অধীনে।
এই এডমিনিস্ট্রেটিভ ডিটেনশন আইনে যাদের আটক করা হয় তাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আনা হয় না এবং কোনো বিচার কার্যক্রম চালানো হয় না। তাদের শুধুমাত্র কারাগারে আটকে রাখা হয়।
এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে এ কালো আইনের অধীনে আবারও আদনানকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর প্রতিবাদে কয়েকদিন পরই অনশন শুরু করেন তিনি। সবমিলিয়ে ৮৭ দিন অনশন করার পর মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন এ ফিলিস্তিনি অধিকারকর্মী।
তার মৃত্যুর বিষয়টি সাধারণ ফিলিস্তিনিদের ক্ষুব্ধ করে তোলে। তারা রাস্তায় নেমে আসে। অপরদিকে ইসলামিক জিহাদ এবং হামাসের মতো সশস্ত্র দলগুলো ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে।
সূত্র: আল জাজিরা