পাল্টা আক্রমণের প্রস্তুতি ইউক্রেনের
রাশিয়ার সেনাদের বিরুদ্ধে যে কোনো সময় বহুল কাঙ্খিত পাল্টা আক্রমণ শুরু করবে ইউক্রেনের সেনারা। কিয়েভের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে তাদের প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন।
ইউক্রেনের সেনারা যখন পাল্টা আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন ঠিক তখনই রুশ বাহিনীর মধ্যে কিছু বিশৃঙ্খলা পরিলক্ষিত হচ্ছে।
পাল্টা আক্রমণের জন্য ইউক্রেন যে বেশ ভালোই প্রস্তুতি নিয়েছে সেটি এখন পরিস্কার। বর্তমানে যুদ্ধের সম্মুখভাগে ইউক্রেনের সাঁজোয়া যানের আনাগোনা বেড়েছে। এছাড়া রুশ সেনাদের গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান এবং অবকাঠামো লক্ষ্য করে প্রায়ই কামান হামলা চালাচ্ছে তারা।
ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, তাদের প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে আছে। অপরদিকে প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি নিশ্চয়তা দিয়েছেন, পাল্টা আক্রমণ হবে। তবে তারা কেউই নির্দিষ্ট তারিখ বলেননি।
ইউক্রেনীয় সেনারা যখন আক্রমণের প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখন বসে নেই রাশিয়ার সেনারাও। গত বছর ইউক্রেনীয়দের চমকপ্রদ পাল্টা আক্রমণের পর খারকিভ ও খেরসনের বিস্তৃত অঞ্চল থেকে পিছু হটতে বাধ্য হয় রুশ বাহিনী। নতুন করে যেন এ ধরনের পরিস্থিতিতে পড়তে না হয়, সেজন্য গত সাত মাস ধরে নিজেদের অবস্থান শক্ত করার সব ধরনের চেষ্টা তারা করেছে, বিশেষ করে জাপোরিঝিয়া অঞ্চলে।
স্যাটেলাইট থেকে তোলা সর্বশেষ ছবিতে দেখা গেছে রুশ সেনারা জাপোরিঝিয়ায় বড় জায়গাজুড়ে দুর্গ গড়েছেন। এসবের মধ্যেই রুশ বাহিনীর মধ্যে বিশৃঙ্খলার কিছু আলামত পাওয়া গেছে।
প্রথমত গত ২৮ এপ্রিল রাশিয়ার উপপ্রতিরক্ষামন্ত্রীকে বহিষ্কার করার ঘটনা ঘটে। যুদ্ধের লজিস্টিকের বিষয়টি দেখাশুনা করতেন বহিষ্কৃত উপপ্রতিরক্ষামন্ত্রী মিখাইল মিজিন্তসেভ।
মিখাইলকে অনেকটা চুপিসারে সরিয়ে দেওয়া হয়। তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে এমন কোনো ঘোষণা না দিয়ে শুধু বলা হয়, মিখাইলের জায়গায় উপপ্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন আলেক্সি কুজমেনকোভ।
ইউক্রেনের সম্ভাব্য পাল্টা হামলার মতো এমন গুরুত্বপূর্ণ সময়ে মিখাইলকে সরিয়ে দেওয়ার বিষয়টি বিশৃঙ্খলার নির্দেশই করছে।
অপরদিকে কুখ্যাত ভাড়াটে সেনাবাহিনী ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভগিনি প্রিগোজিন সাম্প্রতিক সময়ে আবারও রাশিয়ার সেনাবাহিনী ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সমালোচনা করেছেন। এটিও বিশৃঙ্খলার ইঙ্গিত।
কয়েকদিন আগে গ্রিগোজিন হুমকি দিয়েছেন, তিনি ডনবাসের বাখমুত থেকে নিজ সেনাদের সরিয়ে নেবেন। কারণ তার সেনারা যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার মতো পর্যাপ্ত অস্ত্র পাচ্ছে না।
এছাড়া পাল্টা আক্রমণের আগে ইউক্রেনের সেনাদের মধ্যে কাজ করছে উদ্যোম। অপরদিকে রুশ সেনাদের মনোবল রয়েছে তলানিতে। আর তাদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব দিনকে দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সূত্র: সিএনএন