ওমান উপসাগরে যুক্তরাষ্ট্রগামী তেলবাহী ট্যাংকার জব্দ করেছে ইরান
‘পালানোর চেষ্টার’ সময় ওমান উপসাগরে একটি তেল ট্যাংকার আটক করেছে ইরান। ট্যাংকারটি কুয়েত থেকে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস রাজ্যের হিউস্টনের দিকে যাচ্ছিল। আটককৃত ওই তেল ট্যাংকারটি মার্শাল আইল্যান্ডের পতাকাবাহী এবং ঘটনার সময় ইরানের একটি নৌকাকে ধাক্কা দিয়ে ট্যাংকারটি পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল।
ইরানি নৌকার সাথে ওই সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন ক্রু আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। এছাড়া ইরানের হাতে তেল ট্যাংকার আটকের বিষয়টি মার্কিন নৌবাহিনীও নিশ্চিত করেছে।
আল জাজিরা বলছে, ইরানি নৌকার সঙ্গে সংঘর্ষের পর ওমান উপসাগরে মার্শাল আইল্যান্ডের পতাকাবাহী একটি তেল ট্যাংকারকে আটক করা হয়েছে বলে ইরানের সেনাবাহিনী জানিয়েছে। ওই সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন ক্রু আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রীয় মিডিয়া।
বৃহস্পতিবার ইরানি সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ওমান উপসাগরে ইরানি এক নৌকার সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়া এবং সেখান থেকে পালানোর চেষ্টা করার সময় মার্শাল আইল্যান্ডের পতাকাবাহী একটি তেল ট্যাংকারকে আটক করেছে পারস্য উপসাগরে থাকা ইরানি নৌবাহিনী।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘নৌকাটির সাথে জাহাজের সংঘর্ষের কারণে নৌকার ক্রুদের দুই সদস্য নিখোঁজ রয়েছেন এবং আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।’
এর আগে মার্কিন নৌবাহিনী জানায়, আন্তর্জাতিক জলসীমায় ওমান উপসাগরে ইরানি বাহিনী একটি ট্যাংকার আটক করেছে।
মেরিনট্র্যাফিক.কম থেকে পাওয়া জাহাজের স্যাটেলাইট ট্র্যাকিং ডেটা অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার বিকেলে ওমানের রাজধানী মাস্কটের ঠিক উত্তরে ওমান উপসাগরে ট্যাংকারটির অবস্থান দেখা যাচ্ছিল। সেখানে দেখা যায়, এটি সবেমাত্র কুয়েত থেকে এসেছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের হিউস্টনে ট্যাংকারটির গন্তব্য ছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
এর আগে জারি করা এক বিবৃতিতে মার্কিন নৌবাহিনী জানায়, অ্যাডভান্টেজ সুইট নামে একটি তেল ট্যাংকারকে আটক করেছে ইরানি নৌবাহিনী। আটক হওয়ার সময় ট্যাংকারটি ওমান উপসাগরে ‘আন্তর্জাতিক জলসীমা অতিক্রম করছিল’।
‘জাহাজগুলোতে অব্যাহত হয়রানি এবং আঞ্চলিক জলসীমায় নৌ চলাচলের অধিকারে ইরানের হস্তক্ষেপের’ নিন্দা জানিয়ে বাহরাইন-ভিত্তিক মার্কিন পঞ্চম নৌবহর তাদের বিবৃতিতে আরও বলেছে, ‘ইরান সরকারের অবিলম্বে তেল ট্যাংকারটি ছেড়ে দেওয়া উচিত।’
মার্কিন নৌবাহিনী জানিয়েছে, গত দুই বছরে ইরান বেআইনিভাবে মধ্যপ্রাচ্যে চলাচলকারী অন্তত পাঁচটি বাণিজ্যিক জাহাজ আটক করেছে।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন গত সোমবার তেহরানের কথিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের উল্লেখ করে ইরানের বিপ্লবী গার্ড কর্পসের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরও কঠোর করার পর তেল ট্যাংকার আটকের এই ঘটনা ঘটল।
এর আগে ২০১৯ সালের জুলাই মাসে একই জলপথে মাছ ধরার নৌকায় আঘাত করার অভিযোগে ব্রিটিশ পতাকাবাহী তেল ট্যাংকার স্টেনা ইম্পেরোকে আটক করেছিল ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনী। পরে অবশ্য দুই মাস পরে ট্যাংকারটিকে ছেড়ে দেয় তেহরান।