আমাদের রাজ্যের অন্যতম ব্যস্ত রেল স্টেশন হল হাওড়া স্টেশন। শুধু কলকাতা বা পশ্চিমবঙ্গেই নয়, গোটা দেশের মধ্যেই এটা একটি গুরুত্বপূর্ণ রেল স্টেশন। এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাওয়ার জন্য প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ মানুষ এই স্টেশনে আসেন। কারণ, হাওড়া স্টেশন থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাওয়ার ট্রেন ছাড়ে।
এই স্টেশনটি আমাদের কাছে খুব চেনা হলেও, এই স্টেশন ঘিরে রয়েছে নানান রকম অবাক করা ইতিহাস। যেগুলি অনেকের কাছেই অজানা। যেমন, এই স্টেশনটি অত্যন্ত বড় হওয়ায় এখানে প্ল্যাটফর্ম সংখ্যাও অনেক। ১ থেকে ১৫ নম্বর প্ল্যাটফর্ম রয়েছে ওল্ড কমপ্লেক্সে।
পাশাপাশি ১৭ থেকে ২৩ নম্বর প্ল্যাটফর্ম রয়েছে নিউ কমপ্লেক্সে। অর্থাৎ, ১৬ নম্বর প্ল্যাটফর্মটি নেই। কেন নেই? এর পিছনে রয়েছে একটি ইতিহাস। আসলে ১৬ নম্বর প্ল্যাটফর্মটির জায়গায় রয়েছে পণ্য পরিবহণের একটি ডেডিকেটেড লাইন। যেটাকে ‘জিরো মাইল’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
জানা গেছে, ১৮৫৪ সালের ১৫ আগস্টে এই ‘জিরো মাইল’ থেকেই বাংলার প্রথম ট্রেন পাড়ি দিয়েছিল হুগলির উদ্দেশ্যে। ঠিক ছিল, সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ ওই ট্রেন হাওড়া থেকে ছেড়ে হুগলি পৌঁছবে এবং দুপুর একটার মধ্যে ট্রেনটি হাওড়ায় ফিরে আসবে।
যদিও, প্রথম সফরে ওই ট্রেনটি প্রায় দু’ঘণ্টা লেট করেছিল। শুধু তাই নয়, জীবনে প্রথম একটা স্টিম ইঞ্জিনকে ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে মাঠঘাট পেরিয়ে ছুটতে দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিলেন সবাই। পাশাপাশি বহু লোক ওই ট্রেনটাকে ‘আগুনের রথ’ নামেও ডাকতে শুরু করেছিলেন।
সেই ‘রথ’-এ চেপেই এক শিক্ষিত বাঙালি ভদ্রলোক দাবি করেছিলেন, এই ভাবে ছ’দিনের পথকে মাত্র ৬ ঘণ্টায় অতিক্রম করলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস, এইভাবে যাতায়াত করে যেটুকু সময় মানুষ বাঁচাচ্ছেন, সেটুকু সময় তাঁদের আয়ু থেকে নিশ্চয়ই বাদ হয়ে যাবে।
যেহেতু ১৬ নম্বর প্ল্যাটফর্মটি সাধারণ যাত্রীদের জন্য নয়, শুধুমাত্র পণ্য পরিবহন করা হয়, তাই লাইন পাতা থাকলেও, ১৬ নম্বর প্ল্যাটফর্ম কিন্তু হাওড়া স্টেশনে নেই।