সুদানে যুদ্ধবিরতির মধ্যেও থেমে নেই লড়াই
সুদানে ৭২ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতিতেও খার্তুমসহ আশপাশের বেশ কিছু জায়গায় গোলাগুলির খবর পাওয়া গেছে। টিভি ও রেডিও ভবনের কাছে লড়াইয়ের কথা জানিয়েছেন বিবিসির সাংবাদিক মোহাম্মদ ওসমান জানান।
শহরগুলোতে তীব্র জ্বালানি, খাবার এবং তারল্য সংকটেও সংঘর্ষ থেমে নেই সেনা ও বেসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সের (আরএসএফ)। যদিও এ বিষয়ে তাদের প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
চুক্তি অনুযায়ী সুদানে আগামী শুক্রবার ৭২ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি শেষ হতে যাচ্ছে। এ অবস্থায় মানবিক কারণে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়ানোর আবেদনে অনুমোদন দিয়েছে সেনাবাহিনী।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান আঞ্চলিক আফ্রিকান ব্লক ইন্টারগভর্নমেন্টাল অথরিটি অন ডেভেলপমেন্টের (আইজিএডি) প্রস্তাবে প্রাথমিক অনুমোদন দিয়েছেন। প্রস্তাবটির বিষয়ে সেনা ও আরএসএফের প্রতিনিধিদের মধ্যে আলোচনা চলছে বলে জানা গেছে।
চলমান যুদ্ধবিরতি গত সোমবার মধ্যরাত থেকে কার্যকর হয়েছে বলে জানান মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।
ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে পুরনো দ্বন্দ্ব গত (১৫ এপ্রিল) নতুন করে শুরু হয় সেনা ও আরএসএফের মধ্যে। যা রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ে রূপ নিয়েছে। এতে ক্ষয়ক্ষতি যেমন বাড়ছে, তেমনি বেসামরিক মানুষের মৃত্যু বাড়ছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে জানা গেছে, লড়াইয়ের কবলে পড়ে গত ১১ দিনে প্রায় সাড়ে ৪০০ মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত হন ৪ হাজারের বেশি। তবে প্রকৃত নিহতের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ওসমান বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসকে বুধবার বলেন, খার্তুম ও ওমদুরমানে বিশুদ্ধ পানি এবং খাবার খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। কিছু কেনার জন্য নগদ টাকা নেই। ব্যাংক বা কোনও আর্থিক প্রতিষ্ঠান নেই যেখান থেকে টাকা সংগ্রহ করা যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, যুদ্ধবিরতি চলা অবস্থায়ও বিস্ফোরণ ও গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। আমাদের জন্য ঘুমানো খুবই কঠিন। ভয় পাচ্ছি আমরা। শিশুরাও খুব ভয় পাচ্ছে, কারণ চারপাশে বড় ধরনের বিস্ফোরণ ও গুলি শব্দ পেয়েছে তারা। আমরা মাটিতে শুয়ে আছি। তবে সত্যি বলতে, গত কয়েকদিনের চেয়ে পরিস্থিতি ভালো। কিছু জায়গা থেকে সেনা প্রত্যাহার হয়েছে।
জাপানের সংবাদমাধ্যম এনইএচকে ওয়ার্ল্ড এক প্রতিবেদন জানিয়েছে, রাজধানী খার্তুমের কয়েকটি জেলায় বুধবারও সংঘর্ষ হয়েছে।
গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ভবনগুলো দুইপক্ষই নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে বলে দাবি করছে। এর মধ্যে বিমানবন্দর, সেনা সদর দফতরও রয়েছে। ইন্টারনেটের কোনও সংযোগ নেই, মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্কের অবস্থাও খুবই খারাপ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, খাবার, সুপেয় পানির সংকট এবং চিকিৎসার অভাবে অসুস্থ হয়ে আরও মানুষ মারা যেতে পারে। যুদ্ধবিরতি চলা অবস্থায় সুদানে থাকা নাগরিক এবং কূটনীতিকদের সরিয়ে নিচ্ছে বিভিন্ন দেশ।
যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব, পাকিস্তান, ভারত, যুক্তরাজ্যসহ অনেক দেশ তাদের নাগরিকদের সরিয়ে নিয়েছে। আরও কয়েকটি দেশ তাদের নাগরিকদের উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে। সূত্র: বিবিসি, এনএইচকে ওয়ার্ল্ড