এবার ইসরায়েল-ফিলিস্তিন শান্তি আলোচনা এগিয়ে নেওয়ার ঘোষণা চীনের
দীর্ঘ প্রায় আট বছর পর কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠার বিষয়ে সম্মত হয়েছে সৌদি আরব ও ইরান। মধ্যপ্রাচ্যের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী এই দুই দেশকে একে অপরের কাছে আনার ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে চীন। তবে এশিয়ার পরাশক্তি এই দেশটি এখানেই থামছে না।
ইরান-সৌদির পর এবার ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে শান্তি আলোচনা এগিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বেইজিং। এর মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যে আরও বড় ভূমিকা রাখতে চলেছে দেশটি। মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে শান্তি আলোচনা এগিয়ে নিতে চীন প্রস্তুত বলে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানিয়েছেন। চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম সিনহুয়া মঙ্গলবার এই তথ্য সামনে আনে।
এএফপি বলছে, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন গ্যাং ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনি শীর্ষ কূটনীতিকদের সঙ্গে পৃথক ফোন কলে কথা বলেন এবং সেসময়ই শান্তি আলোচনা নিয়ে একথা বলেন। বেইজিং নিজেকে আঞ্চলিক মধ্যস্থতাকারী হিসাবে অবস্থান পোক্ত করার লক্ষ্যে সম্প্রতি বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে এবং এর মধ্যেই ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের সংকট নিরসনে শান্তি আলোচনা এগিয়ে নেওয়ার ঘোষণা এলো।
সিনহুয়া এক সারসংক্ষেপে জানিয়েছে, ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এলি কোহেনের সাথে সোমবারের ফোন কলে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন ‘শান্তি আলোচনা পুনরায় শুরু করার পদক্ষেপগুলো’ শুরু করতে উৎসাহিত করেছেন এবং বলেছেন, ‘চীন এর জন্য প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা প্রদান করতে প্রস্তুত’।
অন্যদিকে কিন ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিয়াদ আল-মালিকিকে বলেছেন, বেইজিং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আলোচনা পুনরায় শুরু করাকে সমর্থন করে।
উভয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ফোন কলে ‘দ্বি-রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান’ বাস্তবায়নের ভিত্তিতে শান্তি আলোচনার জন্য চীনের আগ্রহের ওপর পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন গ্যাং জোর দিয়েছেন বলে সিনহুয়া জানিয়েছে।
মূলত মধ্যপ্রাচ্যের চিরবৈরী দুই প্রতিদ্বন্দ্বী সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বরফ গলানোয় সরাসরি অবদান রেখেছে চীন। এর ফলে প্রতিদ্বন্দ্বী এই দুই দেশের মধ্যে আবার বাণিজ্য এবং নিরাপত্তা সহযোগিতাও শুরু হবে।
সেই সাথে দুই মাসের মধ্যে দু’দেশ পরস্পরের রাজধানীতে তাদের দূতাবাসও খুলবে। যা পশ্চিম এশিয়ার এই অঞ্চলের ভূ-রাজনীতিকে নতুন আকার দিতে পারে। এশিয়ার সুপার পাওয়ারখ্যাত চীনের মধ্যস্থতায় সৌদি আরব এবং ইরানের মাঝে এই সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের ঘোষণায় পাল্টে যেতে পারে মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি।
আর এবার ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে সংকট নিরসনে চীনের ভূমিকা ভালো কোনও ফল বয়ে আনলে সেটিকে চীনের জন্য বেশ বড় অর্জনই বলতে হবে। যদিও ২০১৪ সাল থেকে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন শান্তি আলোচনা কার্যত স্থবির হয়ে আছে।