ইউক্রেইনের শস্য নিষিদ্ধ: পোল্যান্ড-হাঙ্গেরির সিদ্ধান্তে নাখোশ ইইউ
কৃষকদের আন্দোলনের মুখে ইউক্রেইন থেকে সস্তা শস্য আমদানি নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পোল্যান্ড ও হাঙ্গেরি। যা নিয়ে দেশ দুটিকে সতর্ক করে দিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) বলেছে, বাণিজ্য নিয়ে কোনও সদস্য রাষ্ট্রের এমন একতরফা সিদ্ধান্ত অগ্রহণযোগ্য।
ইইউ-র সদস্য যে কোনও দেশে উৎপাদিত খাদ্যশস্যের তুলনায় ইউক্রেইনে খাদ্যশস্যের দাম কম। গত বছর ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেইনে রুশ আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর কৃষ্ণ সাগরে দেশটির কয়েকটি বন্দর দিয়ে পণ্য রপ্তানি সম্ভব হচ্ছে না। রুশ বাহিনী ওইসব বন্দর দখল করে আছে।
যার ফলে লজিস্টিক জটিলতায় ইউক্রেইনের অনেক শস্য এবং খাদ্যপণ্য মধ্য ইউরোপের দেশগুলোতে পৌঁছানোর পর আটকে যাচ্ছে। যা স্থানীয় বাজারে প্রভাব ফেলছে। সেখানে শস্য ও কিছু কিছু খাদ্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক রকম কমে গেছে। যাতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন স্থানীয় কৃষকরা।
ফলে পোল্যান্ড, হাঙ্গেরি ও রোমানিয়াসহ কয়েকটি দেশে কৃষকরা পণ্যের ন্যায্য মূল্যের দাবিতে আন্দোলন করেছেন।
পোল্যান্ডে এ বছর জাতীয় নির্বাচন। দেশটির ক্ষমতাসীন ল অ্যান্ড জাস্টিস (পিআইএস) পার্টি ভোটের বছরে ভোটারদের একটি বড় অংশকে ক্ষুব্ধ করতে চাইছে না। সাধারণত পোল্যান্ডের গ্রামগুলোতেই পিআইএস সমর্থন জোরাল। তাই কৃষকদের খুশি করতে দেশটির সরকার ইউক্রেইন থেকে সে দেশে খাদ্য পণ্য প্রবেশ নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। হাঙ্গেরি সরকারও পরে একই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
এ বিষয়ে ই-মেইলে পাঠানো এক বিবৃতিতে ইউরোপিয়ান কমিশনের একজন মুখপাত্র বলেন, ‘‘আমরা ইউক্রেইন থেকে শস্য এবং অন্যান্য কৃষি পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত পোল্যান্ড এবং হাঙ্গেরির ঘোষণা সম্পর্কে জানতে পেরেছি।
‘‘এই প্রেক্ষাপটে এটা আবারও স্মরণ করে দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ যে, বাণিজ্য নীতির বিষয়ে যে কোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা কেবল ইইউ’র রয়েছে। এখানে একতরফা সিদ্ধান্ত গ্রহণযোগ্য নয়। তার উপর এমন চ্যালেঞ্জিং সময়ে ইইউর সদস্যরাষ্ট্রগুলোর মধ্যে যে কোনও সিদ্ধান্তে সমন্বয় এবং শৃঙ্খলা থাকা খুবই জরুরি।”
পোল্যান্ড এবং হাঙ্গেরির সঙ্গে ব্রাসেলসের দ্বন্দ্ব অবশ্য নতুন নয়। বরং ওই দুই দেশ বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং এলজিবিটি অধিকারসহ নানা ইস্যুতে ব্রাসেলসের সাথে দীর্ঘস্থায়ী দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছে এবং আইনের শাসন নিয়ে উদ্বেগের কারণে উভয় দেশের তহবিলই আটকে রাখা হয়েছে।