বাফুফের সাধারণ সম্পাদকের ওপর ফিফার দুই বছরের নিষেধাজ্ঞা
বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন বিএফএফ-এর সাধারণ সম্পাদক এবং ফিফার ডিসপুট রেজ্যুলেশন চেম্বারের সাবেক সদস্য আবু নাঈম সোহাগের ওপর দুই বছরের জন্য নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ফিফা। আন্তর্জাতিক ফুটবল পরিচালনা সংস্থা ফিফার ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, বাফুফেকে দেয়া ফিফার টাকার হিসাব দেয়ার সময় মিথ্যা নথি দেয়ার কারণে ফিফার স্বাধীন নৈতিকতা বিষয়ক কমিটির অ্যাজুডিকেটরি চেম্বার তার উপর এই নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় আগামী দুই বছর ফুটবল বিষয়ক যে কোন ধরনের কার্যক্রমে তিনি অংশ নিতে পারবেন না। একই সাথে তাকে দশ হাজার সুইস ফ্র্যাঙ্ক অর্থাৎ বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, তদন্তকারী চেম্বার যেসব নথি-প্রমাণ সংগ্রহ করেছে তার পাশাপাশি শুনানি ও উপস্থিাপিত সাক্ষ্যপ্রমাণ যথাযথভাবে বিশ্লেষণের মাধ্যমে অ্যাজুডিকেটরি চেম্বার নিশ্চিত হয়েছে যে, মি. সোহাগ ফিফার ২০২০ সালের কোড অব ইথিকসের ১৩, ১৫ ও ২৪ ধারা লংঘন করেছেন।
এসব সিদ্ধান্ত সম্পর্কে মি. সোহাগকে আজ জানানো হয়েছে। আজ থেকেই এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে বলেও উল্লেখ করা হয় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।
চলতি বছর এপ্রিলের শুরু থেকেই বাংলাদেশের ফুটবল খারাপ সময় কাটাচ্ছে। এরআগে বাংলাদেশের নারী ফুটবল দলের মিয়ানমারে অলিম্পিকের বাছাইপর্বে খেলতে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বাফুফে দাবি করে যে অর্থের অভাবে তারা তাদেরকে পাঠাতে পারেনি।
বাফুফে সভাপতি কাজি সালাউদ্দিন এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, টাকার সংকট থাকার কারণে নারী ফুটবল দলকে পাঠানো যায়নি। এজন্য ২০ লাখ টাকার প্রয়োজন ছিল।
তিনি বলেন, বাফুফের খরচ বছরে কম করে হলেও ৬০ কোটি টাকা, কিন্তু রয়েছে ৩০ কোটির মতো। মিয়ানমার সফর বাদ হওয়ার পর নারী ফুটবলারদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ ছিল।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের এক সদস্য বিবিসি বাংলাকে বলেছিলেন, “খারাপ লাগার কথাই তো তাই না? এমন একটা টুর্নামেন্ট, এমন একটা সুযোগ হাতছাড়া হলে যে কারোরই খারাপ লাগবে।”
বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগও সম্প্রতি গণমাধ্যমে বলেছিলেন, “দল পাঠাতে বাফুফের হাতে প্রয়োজনীয় অর্থ নেই, তাই যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের কাছে আর্থিক সহায়তা চেয়েছিল বাফুফে, কিন্তু পর্যাপ্ত সাড়া পাইনি।”
মিয়ানমার সফর বাতিলের সিদ্ধান্তের পরপরই নারী ফুটবলাররা কিছু দাবি-দাওয়া নিয়ে আসেন বাফুফে প্রেসিডেন্টের কাছে, যার মধ্যে তিনি উল্লেখ করেন, “স্যালারি চেয়েছে ৫ গুণ বাড়াতে, বুট চেয়েছে, ম্যাচ ফি ও বোনাস চেয়েছে, খাবারের মান আরও ভালো চেয়েছে”।
পাঁচগুণ বেতন বাড়ানো বাদে বাকিগুলো যৌক্তিক বলে মনে করছেন, বাফুফে সভাপতি।
বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল চলতি মাসের ২৪ তারিখ এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনস – এফসি বাছাইপর্বে খেলতে সিঙ্গাপুর যাবে, তবে তার খরচ আসবে এএফসির তহবিল থেকে।
কাজী সালাউদ্দিন বলেন, “আমি ভেবেছিলাম নিশ্চয়ই অলিম্পিক কমিটি এটার (বাছাই পর্বে সফরের খরচ) ফাইনান্স করবে, কিন্তু পরে জানা গেলো অলিম্পিক কমিটি থেকে কোনও আর্থিক সহায়তা পাওয়া যাবে না।”