পাকিস্তানে পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে বোমা হামলা, নিহত ৪
পাকিস্তানের কোয়েটা শহরে পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে ঘটানো বোমা বিস্ফোরণে চারজন নিহত ও ১৫ জন আহত হয়েছেন। সোমবার নগরীর একটি বাজারের কাছে এ হামলার ঘটনাটি ঘটে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
নগরীটিতে পুলিশের এক স্টেশন হাউজ অফিসারকে (এসএইচও) লক্ষ্য করে চালানো আরেকটি বোমা হামলায় আরও তিনজন আহত হন।
পুলিশ জানায়, সারিয়াব পুলিশ স্টেশনের এসএইচও এহাসানুল্লাহ মারওয়াত তার স্কোয়াড নিয়ে টহল দেওয়ার সময় হামলার ঘটনাটি ঘটে।
পুলিশের দলটি হামলা থেকে রক্ষা পেলেও তিন পথচারী আহত হন বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে নিশ্চিত করেছে পুলিশ।
এটি ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে কোয়েটায় পুলিশের ওপর হামলার তৃতীয় ঘটনা। কোয়েটা পাকিস্তানের দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ বেলুচিস্তানের রাজধানী। পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশের বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) এসব হামলার দায় স্বীকার করেছে।
এক বিবৃতিতে গোষ্ঠীটি বলেছে, তাদের হামলায় দুই পুলিশসহ চারজন নিহত হয়েছেন। বালুচ জনগণের বিরুদ্ধে হওয়া ‘সব নৃশংসতার’ জবাব দেওয়া হবে বলে বিবৃতিতে বলেছেন বিএলএর মুখপাত্র জিয়ান্দ বালুচ।
পুলিশের ঊধ্র্বতন কর্মকর্তা শাফকাত চিমা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, পুলিশের (তদন্ত) ভারপ্রাপ্ত এসপির গাড়ি লক্ষ্য করে প্রথম হামলাটি চালানো হয়েছে, সেটি নগরীর কান্দাহারি বাজারে পার্ক করা ছিল। গাড়িটির পেছনে রাখা একটি মোটরসাইকেলে ৪ থেকে ৫ কেজি ওজনের বোমাটি পাতা ছিল এবং দূর থেকে সেটির বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে।
নিহতদের মধ্যে গাড়িতে বসে থাকা দুই পুলিশ কর্মকর্তা আছেন বলে জানিয়েছেন পুলিশের আরেক ঊধ্র্বতন কর্মকর্তা।
কোয়েটা হাসপাতালের মুখপাত্র ওয়াসিম বাইগ জানিয়েছেন, এ হামলায় চারজন নিহত হওয়ার পাশাপাশি ১৫ জন আহত হয়েছেন।
সোমবারের এসব হামলার আগে রোববার অজ্ঞাত সশস্ত্র ব্যক্তিরা পুলিশের ঈগল স্কোয়াডের ওপর গুলিবর্ষণ করলে দুই কর্মকর্তা নিহত ও আরেকজন আহত হন। পুলিশের পাল্টা গুলিতে এক হামলাকারী নিহত হয়।
২২ কোটি জনসংখ্যার পারমাণবিক শক্তিধর দেশ পাকিস্তানে গত কয়েকমাস ধরে জঙ্গি হামলা বেড়ে চলেছে, বিশেষ করে গত বছর জঙ্গি গোষ্ঠী তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের সঙ্গে সরকারের আলোচনা ভেঙে যাওয়ার পর থেকে।
চলতি বছর এই গোষ্ঠীটি ও তাদের উপদলগুলো দেশটিজুড়ে হামলার ঢেউ বইয়ে দিয়েছে। এগুলোর মধ্যে পেশোয়ার শহরের একটি মসজিদে চালানো আত্মঘাতী বোমা হামলা অন্যতম। এ হামলায় শতাধিক মানুষ নিহত হয়, যাদের অধিকাংশ পুলিশ সদস্য।
পরিস্থিতি মোকাবেলায় অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকটের মধ্যেই দেশব্যাপী জঙ্গিবিরোধী নতুন সামরিক অভিযান শুরু করতে যাচ্ছে পাকিস্তান। ইসলামপন্থি জঙ্গিদের শিকড় উপড়ে ফেলার লক্ষ্য নিয়ে এ অভিযান শুরু হচ্ছে বলে শুক্রবার জানিয়েছে দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি।