পাকিস্তানে গোলাগুলিতে ৩ জঙ্গি ও নিরাপত্তা বাহিনীর ৩ সদস্য নিহত
জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি ঘোষিত সর্বাত্মক জঙ্গিবিরোধী অভিযান শুরুর আগেই পাকিস্তানে পৃথক তিনটি গোলাগুলির ঘটনায় নিরাপত্তা বাহিনীর তিন সদস্য ও তিন জঙ্গি নিহত হয়েছেন।
রোববার দেশটির বেলুচিস্তান ও খাইবার পাখতুনখওয়া প্রদেশে গোলাগুলির এসব ঘটনা ঘটেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, রোববার বেলুচিস্তানের কুচলাক জেলার কিল্লি স্পাইন এলাকায় স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় অজ্ঞাত হামলাকারীদের গুলিবর্ষণে দুই পুলিশ সদস্য নিহত ও অপর একজন আহত হন।
পুলিশের ঈগল স্কোয়াডের সদস্যরা ওই এলাকায় মোটরসাইকেল যোগে টহল দেওয়ার সময় হামলাকারীরা নির্বিচার গুলিবর্ষণ করে, এতে তিনজন আহত হন। পুলিশের পাল্টা গুলিতে এক হামলাকারী নিহত হন কিন্তু অপরজন পালিয়ে যান।
আহত তিন পুলিশকে হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে দুইজনের মৃত্যু হয়।
কোয়েটার ডিআইজি গুলাম আজফার মাহেসের জানিয়েছেন, ‘সন্ত্রাসীরা’ পুলিশ সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করেছে। আহত হওয়ার পরও পুলিশ সদস্যরা পাল্টা গুলি চালিয়ে এক হামলাকারীকে হত্যা করেছে।
পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর গণমাধ্যম শাখা রোববার জানিয়েছে, খাইবার পাখতুনখওয়ার ওয়াজিরিস্তানে অভিযান চলাকালে পৃথক দুটি গোলাগুলির ঘটনায় নিরাপত্তা বাহিনী দুই জঙ্গিকে হত্যা করেছে।
পাকিস্তান সামরিক বাহিনীর আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ (আইএসপিআর) শনিবার এক বিবৃতিতে বলেছে, “উত্তর ওয়াজিরিস্তান জেলার রাজমাক এলাকায় সেনাদের সঙ্গে জঙ্গিদের গুলি বিনিময় হয়। সেনারা জঙ্গিদের অবস্থান শনাক্ত করে গুলি চালালে এক জঙ্গি নিহত হয়।”
নিহত জঙ্গির কাছ থেকে অস্ত্র ও গুলি জব্দ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা।
আইএসপিআর জানিয়েছে, দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানের কারামা এলাকায় আরেকটি ‘তীব্র’ গোলাগুলির ঘটনায় সেনারা আরেক জঙ্গিকে হত্যা করে। কিন্তু এখানে গোলাগুলি চলাকালে এক সেনাও নিহত হন।
অন্য জঙ্গিদের খোঁজে ওই এলাকা ঘেরাও করে তল্লাশি চালানো হলেও কাউকে পাওয়া যায়নি।
২২ কোটি জনসংখ্যার পারমাণবিক শক্তিধর দেশ পাকিস্তানে গত কয়েকমাস ধরে জঙ্গি হামলা বেড়ে চলেছে, বিশেষ করে গত বছর জঙ্গি গোষ্ঠী তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তানের সঙ্গে সরকারের আলোচনা ভেঙে যাওয়ার পর থেকে।
চলতি বছর এই গোষ্ঠীটি ও তাদের উপদলগুলো দেশটিজুড়ে হামলার ঢেউ বইয়ে দিয়েছে। এগুলোর মধ্যে পেশোয়ার শহরের একটি মসজিদে চালানো আত্মঘাতী বোমা হামলা অন্যতম। এ হামলায় শতাধিক মানুষ নিহত হয়, যাদের অধিকাংশ পুলিশ সদস্য।
পরিস্থিতি মোকাবেলায় অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকটের মধ্যেই দেশব্যাপী জঙ্গিবিরোধী নতুন সামরিক অভিযান শুরু করতে যাচ্ছে পাকিস্তান।
ইসলামপন্থি জঙ্গিদের শিকড় উপড়ে ফেলার লক্ষ্য নিয়ে এ অভিযান শুরু হচ্ছে বলে শুক্রবার জানিয়েছে দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি।
এর আগে ২০১৪ সালে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে সর্বশেষ সর্বাত্মক অভিযান পরিচালনা করেছিল পাকিস্তান। তখন এর পেছনে কয়েক শত কোটি ডলার ব্যয় হয়েছিল আর অভিযানের ফলে ১০ লাখেরও বেশি লোক বাস্তচ্যুত এবং কয়েকশ মানুষ নিহত হয়েছিল।