তিউনিসিয়া উপকূলে অভিবাসনবাহী নৌকা ডুবে ৪ মৃত্যু, নিখোঁজ ২৩
তিউনিসিয়ার পূর্ব উপকূলের কাছে অভিবাসন প্রত্যাশীবোঝাই দুটি নৌকা ডুবে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। দুটি নৌকার অর্ধশতাধিক অভিবাসন প্রত্যাশীকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হলেও, এখনও আরও ২৩ জন নিখোঁজ, বলেছে বিবিসি।
এর মধ্যে প্রথম নৌকাটি শুক্রবার ৩৭ জনকে নিয়ে তিউনিসিয়া থেকে ইতালির উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিল; ডুবে যাওয়া এই নৌকার ১৭ জনকে জীবিত পাওয়া গেলেও ২০ জন এখনও নিখোঁজ, জানিয়েছেন স্ফ্যাক্স শহরের এক আদালতের মুখপাত্র ফাউজি মাসমুদি।
তিনি বলেন, দ্বিতীয় নৌকাটি ডুবে যাওয়ার পর শনিবার একটি সমুদ্রসৈকত থেকে ৪ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। ওই নৌকাটির ২৬ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে, তিনজন নিখোঁজ। দুটো নৌকাই টিনের ছিল বলেও জানিয়েছেন ফাউজি।
মার্চের শুরু থেকে এ পর্যন্ত তিউনিসিয়া উপকূলের কাছে এ ধরনের আরও অন্তত ৭টি নৌকাডুবির ঘটনায় মৃত্যু ও নিখোঁজ ১০০ ছাড়িয়ে গেছে।
তিউনিসিয়ার উপকূলরেখার কিছু অংশ থেকে ইতালির দ্বীপ লাম্পেদুসার দূরত্ব মাত্রা দেড়শ কিলোমিটার। মূল ভূখণ্ডে যেতে এই দ্বীপটিকে প্রায়ই ক্রসিং পয়েন্ট হিসেবে কাজে লাগানো হয়।
দারিদ্র্য, সংঘাতকে পেছনে ফেলে ইউরোপে উন্নত জীবনের আশায় মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকা থেকে ছোটা মানুষজনের আগে প্রথম পছন্দ ছিল লিবিয়া, কিন্তু লাম্পেদুসা তুলনামূলক কাছে হওয়ায় ওই রুট বদলে এখন তিউনিসিয়াই হয়ে দাঁড়িয়েছে ইউরোপগামীদের প্রথম পছন্দ।
চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে তিউনিসিয়া থেকে ইউরোপে পৌঁছানোর চেষ্টা করা ১৪ হাজারের বেশি অভিবাসন প্রত্যাশীকে আটকানো গেছে বলে জানিয়েছে উত্তর আফ্রিকার দেশটির কোস্টগার্ড। এই সংখ্যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় পাঁচ গুণ বেশি।
তিউনিসিয়া রুট ব্যবহার করা বেশিরভাগ অভিবাসন প্রত্যাশীই সাব-সাহারা অঞ্চলের বাসিন্দা। অনিরাপদ নৌযানে চেপে ইউরোপে পৌঁছাতেও অভিবাসন প্রত্যাশীরা মানব পাচারকারীদেরকে বিপুল পরিমাণ অর্থ দেয়।
এই পাচারকারীদের ধরতে পারলেই তিউনিসিয়া হয়ে নৌকায় অবৈধপথে ইউরোপ যাত্রা কমে আসবে বলে ধারণা স্ফ্যাক্স আদালতের মুখপাত্র মাসমুদির।
নৌকাডুবির দুটি ঘটনার তদন্তের ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, “মূল উদ্দেশ্যে হচ্ছে টিনের নৌকা করে সমুদ্র পাড়ি দেওয়ার চেষ্টার মূল হোতাদের ধরা। এইসব নৌকা ন্যূনতম নিরাপত্তা দেয় না, কিন্তু কাঠের নৌকার চেয়ে এগুলো বানানোর খরচ কম।”