ভারতকে সিরিজ হারিয়ে ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে অস্ট্রেলিয়া
পেন্ডুলামের মতো দুলছিল ম্যাচ। একবার ভারতের দিকে তো, ক্ষণিক পরই অস্ট্রেলিয়ার দিকে। তবে শেষ পর্যন্ত ২১ রানের রোমাঞ্চকর এক জয় পেল সফরকারীরাই। তিন ম্যাচ সিরিজে ২-১ ববধানে জয়ে একদিনের ক্রিকেটের র্যাঙ্কিংয়েও শীর্ষে ওঠে এসেছে স্টিভ স্মিথরা।
অন্যদিকে, চার বছর পর দেশের মাটিতে ওয়ানডে সিরিজ হারের তেতো স্বাদ পেল ভারত। এর আগে সবশেষ ২০১৯ সালে অস্ট্রেলিয়ার কাছেই পাঁচ ম্যাচের সিরিজ ৩-২-এ হেরেছিল তারা।
যদিও আড়াইশো ছাড়ানো রান তাড়ায় জয়ের পথেই ছিল ভারত। তবে বিরাট কোহলির আউটের পরপরই পথ হারিয়ে ফেলে স্বাগতিকরা। শেষ দিকে অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়ার প্রাণপণ চেষ্টাও কোনো কাজে আসেনি।
বুধবার (২২ মার্চ) চেন্নাইয়ে টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। শুরুটাও খুব ভাল করেছিল দুই ওপেনার মিচেল মার্শ ও ট্রাভিস হেড। দ্রুত রান করছিলেন তারা। বেশি আক্রমণাত্মক দেখাচ্ছিল মার্শকে। বিশাখাপত্তনমে যেখানে শেষ করেছিলেন চেন্নাইয়ে সেখান থেকেই শুরু করেছিলেন যেন।
ভারতকে খেলায় ফেরান হার্দিক। বল করতে এসে প্রথম ওভারেই তার বলে হেডের ক্যাচ ফেলেন শুভমন গিল। কিন্তু সেই ওভারেই ৩৩ রানের মাথায় হেডকে আউট করেন হার্দিক। পরের ওভারে তিনি ফেরান অজি অধিনায়ক স্টিভ স্মিথকে। নিজের তৃতীয় ওভারে ভয়ঙ্কর দেখানো মার্শকে আউট করে অস্ট্রেলিয়াকে বড় ধাক্কা দেন হার্দিক। মার্শ ৪৭ রান করে আউট হন।
৩ উইকেট পড়ার পরে জুটি বাঁধার চেষ্টা করেন ডেভিড ওয়ার্নার ও মার্নাশ লাবুশেন। ওয়ার্নার ২৩ ও লাবুশেন ২৮ রান করেন। অ্যালেক্স ক্যারেও ৩৮ রান করে আউট হন। নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট পড়ছিল। হার্দিকের পরে বল হাতে চমক দেন কুলদীপ যাদব। অস্ট্রেলিয়ার মিডল অর্ডারকে ফেরান তিনি। শেষ দিকে শন অ্যাবট ২৬ রান করেন। ৪৯ ওভারে ২৬৯ রানে অলআউট হয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। ভারতীয় বোলারদের মধ্যে হার্দিক ও কুলদীপ ৩টি করে উইকেট নেন। মোহাম্মদ সিরাজ় ও অক্ষর প্যাটেল নেন ২টি করে উইকেট।
রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভাল করেছিলেন রোহিত ও শুভমন। যে মিচেল স্টার্ক আগের দুই ম্যাচে নতুন বলে ভারতকে সমস্যায় ফেলেছিল সেই স্টার্কের বিরুদ্ধে আগ্রাসী শট খেলছিলেন তারা। দেখে মনে হচ্ছিল দিনটা ভারতের। কিন্তু খেলার গতির বিপরীতে আউট হয়ে যান রোহিত। ১৭ বলে ৩০ রান করে অ্যাবটের বলে বড় শট মারতে গিয়ে আউট হন তিনি। তার কিছু পরেই ৩৭ রান করে আউট হন শুভমন।
দুই উইকেট পড়ার পরে জুটি বাঁধেন বিরাট কোহলি ও লোকেশ রাহুল। বিরাট সাবলীল খেলছিলেন। রাহুল শুরুতে একটি ধীরে খেললেও পরের দিকে হাত খোলা শুরু করেন। ৬৯ রানের জুটি হয় তাদের মধ্যে। ৩২ রানের মাথায় বড় শট খেলতে গিয়ে আউট হন রাহুল। তার পরেই খেই হারায় ভারত। দ্রুত রান করার জন্য অক্ষরকে আগে নামালেও কোহলির সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে ২ রানেই সাজঘরে ফেরেন তিনি।
রোহিতদের সব থেকে বড় ধাক্কা দেন অ্যাগার। পর পর দু’বলে বিরাট ও সূর্যকুমারকে আউট করেন তিনি। ৫২ রান করে আউট হন বিরাট। এই সিরিজ়ের তিনটি ম্যাচেই প্রথম বলে শূন্য রানে আউট হলেন সূর্য। ১৮৫ রানে ৬ উইকেট পড়ে যায় ভারতের।
তখনই ক্রিজে ছিলেন হার্দিক ও জাদেজা। হার্দিককে সাবলীল দেখাচ্ছিল। চাপে পড়লেও সাবলীল ব্যাটিং করছিলেন তিনি। এই জুটির উপরেই ভারতের জয় নির্ভর করছিল। কিন্তু ৪০ রানের মাথায় জাম্পার বলে আউট হন হার্দিক। জাদেজাকেও সাজঘরে পাঠান অজি স্পিনার। ৪ উইকেট নেন জাম্পা। সেখান থেকে আর ফেরার সম্ভাবনা ছিল না ভারতের। শেষ পর্যন্ত ২৪৮ রানে শেষ হয়ে যায় রোহিতদের ইনিংস। ২১ রানে ম্যাচ হারে ভারত।