ছায়াযুদ্ধ
নিভে আসা উনুনে কতটা জল, আর
কতটাই বা ভাত
সে বিতর্কে না গিয়ে বরং
বুঝে নেওয়া যাক-
হাভাতের সংসারের উপপাদ্য।
বিষণ্ন রাতের নিস্তব্ধ মায়া ক্রমশ দীর্ঘতর হলে
প্রহরগুলো জানে শুধু ভুখাপেটের অধ্যাবসায়
আর প্রান্তরের শুকনো ঘাসের প্রতিবিম্ব।
ছায়াযুদ্ধের কোন তত্ত্বই মানতে চায় না
হোগলার ধূসর চালাঘর,
যেটুকু অবশিষ্ট আছে ছাইচাপা স্বরলিপি
ঘৃণা ও নিজস্ব দ্রোহের নিরূপিত আলোক প্রবাহে
ভেঙে যাবে সেই অদৃশ্য প্রস্তর।
অমৃতধারা
রাত্রি শুয়ে আছে রাত্রির মত
আর আমি ধ্রুবতারার আলো ধরে ধরে
এতটা পথ এসে দেখি
সামনে বহ্নির পারাবার
জ্বলন্ত ঋণের প্রান্তে নতজানু হই
কিছু ভেসে যায়…
কিছু থাকে অমৃতধারায়।
অক্ষরশরীর
পাতার আড়ালে যে বসন্ত ছিল
পড়ন্ত সন্ধ্যায় তার কোমলতা লেগে থাকে বুকে
আর কিছু জলরং
যেখানে স্নান সেরে নিলে
অবচেতনায় সবুজ পৃথিবী ফিরে আসে
পাহাড় থেকে ত্রস্ত পায়ে নামে বর্ষা
অক্ষর প্রেমে কিছু নুপুর জীবন।
সূর্য ডুবলে রাত্রির অলকবর্তনে
অনিবার্য রোদ লেগে থাকে অক্ষর শরীরে।
মিথোজীবী
ততটুকু নির্ভরতা পাক্ আমার আবেগ
যতটুকু গুল্ম হতে পেরে ধন্যবাদ দিতে পারে
লতাটুকু বৃক্ষরাজের বস্তুবাদী ডালে।
ঠিক ততটুকু কান্না ভরে দিও শিকড়ে
যতটা কান্নাকে চাতকীয় ভালোবাসা ভেবে
হৃদয়মথিত হয়
আমার দৈনন্দিন আনন্দ ও মৃত্যুর উদযাপন
লিখে যেতে পারি দিনের হিসাবে।
আসলে সবটাই মিথোজীবী জীবন।
হলুদবিকেল: ১
পিছনের দিকে ফিরে দেখলে
মনে হয় কতপথ হেঁটে এলাম
সামনে এখনো কিছু পথ আছে
হাঁটার…
মৈনাক পাহাড়ে রেখে এসেছি উচ্চতা
দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের পরিচয়
সমাহিত করে এসেছি ওখানে
চুল্লির নৈকট্য গার্হস্থ্য উত্তাপে।
সে বুঝি শুয়ে আছে
চৈত্রের হলুদ বিকেলে।
হলুদবিকেল: ২
মধ্যরাতে খিল খুলে দিলে
বৃষ্টিপতনের শব্দে অদ্ভূত শূন্যতা
ঘিরে ধরে।
এখন বৃষ্টিতে ভিজতে ভয় হয়
ঋতুচক্রে হৃদয়ে ভাসে কল্প প্রণয়
ভরাবর্ষা ইশারা দেয়,অথচ
খিল খোলা মানে আহ্বান নয়।