বাংলাদেশের কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালী ১১ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুনে দুই হাজারের বেশি ঘরবাড়ি ছাই হয়ে গেছে। আংশিক পুড়েছে ১০ ও ১২ নম্বর ক্যাম্প।
রোববার বেলা আড়াইটার দিকে লাগা এই আগুন দুই ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুনের এ ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে একজনকে আটক করা হয়েছে।
ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘প্রায় দুই ঘণ্টার বেশি সময় পর ক্যাম্পের আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। আমরা ক্ষতির তালিকা তৈরির কাজ শুরু করছি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, দুই হাজারের বেশি ঘরবাড়ি পুড়ে গেছে। তার মধ্যে ৩৫টি মসজিদ ও মাদ্রাসা রয়েছে।
‘এছাড়া হাসপাতাল ও হেলথ সেন্টারসহ ১৫টি প্রতিষ্ঠান পুড়েছে। কীভাবে আগুনের ঘটনা ঘটছে সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নাশকতার উদ্দেশ্যে কেউ আগুন লাগিয়েছে কিনা তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী জানান, রোববার বিকেলে বালুখালী ১১ নম্বর রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরের বি-ব্লকে আগুন লাগে। মুহূর্তের মধ্যে আগুন বিভিন্ন বসতঘরে ছড়িয়ে যায়। আগুন আশপাশের ১০, ১১ ও ১২ নম্বর আশ্রয় শিবিরেও ছড়িয়ে পড়ে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। প্রাথমিক তথ্যমতে, আগুনে দুই হাজারের বেশি বসতঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত উখিয়ার ক্যাম্পের বাসিন্দা শফিক উল্লাহ বলেন, ‘আগুনে সব পুড়ে যাওয়ায় নিঃস্ব হয়ে গেছি। এখানে বহু ঘরবাড়ি ও দোকানপাট পুড়ে গেছে। বেশ কিছু দোকানপাটও ছিল। এখানে বার বার আগুন লাগার পেছনে রহস্য রয়েছে। তাই ক্যাম্পে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা বন্ধ হচ্ছে না।’
কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক অতীশ চাকমা জানান, সন্ধ্যা ৬টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিস তিন ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
উখিয়ার পালংখালী ইউপি চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী জানান, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুনে পুড়ে যাওয়া অসহায় রোহিঙ্গাদের কেউ কেউ পার্শ্ববর্তী স্বজনদের বাসায় আশ্রয় নিয়েছেন। আর যেসব রোহিঙ্গা খোলা আকাশে নিচে রয়েছেন, তাদের আপাতত খালি স্কুল-মাদ্রাসায় থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
২০২১ সালের ২২ মার্চ রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছিল। ওই আগুনে ১০ হাজার ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ পুড়ে গিয়েছিল। দগ্ধ হয়ে মারা যান ১১ রোহিঙ্গা।