সাত বছর পর ঘরের মাঠে ওয়ানডে সিরিজ হারলো বাংলাদেশ । বোলারদের ধারহীন বোলিংয়ের পর সিরিজ বাঁচানোর ম্যাচে জিততে হলে রেকর্ড ৩২৭ রান তাড়া করতে হতো বাংলাদেশকে। তবে বড় টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে সবকটি উইকেট হারিয়ে সর্বসাকুল্যে রান এলো ১৯৪। অন্যদিকে, ১৩২ রানের বিশাল জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ নিশ্চিত করল বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড।
তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে স্বল্প পুঁজি নিয়েও শেষ পর্যন্ত লড়াইটা চালাতে পারলেও সিরিজ বাঁচানোর ম্যাচে আজ তার ছিঁটেফোটাও দেখা যায়নি। ব্যাটিং-বোলিং কিংবা ফিল্ডিং তিন বিভাগেই মুখ থুবড়ে পড়েছে তামিম ইকবাল বাহিনী। প্রথম অ্যাসাইনমেন্টটা হার দিয়ে শুরু করলেন টাইগারদের নতুন কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে।
শুক্রবার (০৩ মার্চ) ছুটির দিনে দর্শকের কমতি ছিল না মিরপুর শের-ই বাংলায়। চার ছক্কা কিংবা প্রতিপক্ষের উইকেট শিকারে তারস্বরে রব উঠার চিত্রটা এখানে প্রায় নিয়মিতকার ঘটনা। তবে মিরপুরের গ্যালারিতে এমন উপলক্ষ্য খুব কমই পেয়েছে সমর্থকরা। জয়ের সাক্ষী হতে আসা দর্শকের চোখেমুখে এখন একরাশ হতাশা। নিজেদের চেনা আঙিনায় কদিন আগেও ভারতের মতো কঠিন প্রতিপক্ষকে বধ করা গেছে। তবে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের মোকাবিলায় যেন নেতিয়ে পড়েছে টিম টাইগার্স। যার প্রভাব পড়েছে হোম অব ক্রিকেটের গ্যালারিতেও।
টস জিতে প্রথম ফিল্ডিং বেছে নিয়েছিলেন টাইগার অধিনায়ক তামিম ইকবাল। তবে তার এ সিদ্ধান্ত যে কতটা ভুল ছিল তা প্রমাণ করতে বেশি সময় নিলেন না ইংলিশ ব্যাটাররা। বাংলাদেশের বোলারদের রীতিমতো তুলোধুনো করলেন সফরকারীরা। শুরুটা করেছিলেন ইংলিশ ওপেনার জেসন রয়। তার ঝোড়ো সেঞ্চুরির (১৩২) পর ব্যাট হাতে দাপট দেখালেন অধিনায়ক জস বাটলার (৭৬)। আর শেষ দিকে চড়াও হলেন মঈন আলি (৪২) ও স্যাম কারান (৩৩)। স্বাগতিক বোলারদের ব্যর্থতার দিনে নির্ধারিত পঞ্চাশ ওভার শেষে ৭ উইকেট হারিয়ে ৩২৬ রানের বড় সংগ্রহ দাঁড় করায় ইংলিশরা।
বড় রান তাড়া করে জেতা বাংলাদেশের জন্য সবসময়ই প্রায় অসাধ্য। আজও তার ব্যত্যয় ঘটল না। টার্গেট তাড়া করতে নেমে রানের স্তূপে চাপা পড়ে স্বাগতিকরা। অবশ্য ব্যাটিংয়ে মড়ক শুরু হয়েছিল ইনিংসের গোড়াতেই। ১ রানে দুই উইকেট কিংবা ৯ রানের মাথায় ৩ উইকেট হারানোর পর সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়াতে মিরাকল কিছুই করতে হতো বাংলাদেশকে।
মাঝে অভিজ্ঞ দুই টাইগার ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান (৫৮) ও তামিম (৩৫) মিলে ধ্বংসস্তূপে ফুল ফোটানোর চেষ্টা চালালেও দুজনই ফিরে গেছেন ক্রিজে সেট হয়ে। বরাবরের মতো ব্যর্থ বাকিরাও। শেষ দিকে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ কিছুটা চেষ্টা চালালেও যথেষ্ট ছিল না সেটি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ইংল্যান্ড : ৫০ ওভারে ৩২৬/৭ (রয় ১৩২, সল্ট ৭, মালান ১১, ভিন্স ৫, বাটলার ৭৬, জ্যাকস ১, মইন ৪২, কারান ৩৩, রশিদ ৬*; সাকিব ১০-০-৬৪-১, তাইজুল ১০-০-৫৮-১, তাসকিন ১০-০-৬৬-৩, মুস্তাফিজ ১০-০-৬৩-০, মিরাজ ১০-০-৭৩-০)
বাংলাদেশ : ৪৪.৪ ওভারে ১৯৪ (তামিম ৩৫, লিটন ০, শান্ত ০, মুশফিক ৪, সাকিব ৫৮, মাহমুদউল্লাহ , আফিফ ২৩, মিরাজ ৭, তাসকিন ২১, তাইজুল ১*, মুস্তাফিজ ০; কারান ৬.১-১-২৯-৪, সাকিব ৯-০-৪১-০, উড ৪-০-১৪-০, জ্যাকস ৬-০-২৭-০, মইন ৯-২-২৭-১, রশিদ ১০-০-৪৫-৪)
ফল : ইংল্যান্ড ১৩২ রানে জয়ী
সিরিজ : ৩ ম্যাচ সিরিজে ইংল্যান্ড ২-০ তে এগিয়ে
ম্যান অব দা ম্যাচ : জেসন রয়