গত কয়েক সপ্তাহ ধরে শুষ্ক শীতকালীন আবহাওয়া ও আল্পস পর্বতে তুষারপাত স্বাভাবিকের তুলনায় অর্ধেকেরও কম হওয়ায় ইতালি আরেকটি খরার মুখোমুখি হতে পারে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এর জেরে জোয়ারের জেরে ভেনিসে পানির স্তর অস্বাভাবিক নিচে নেমে গেছে। এ কারণে শহরটির বিখ্যাত কিছু খাল দিয়ে গন্ডোলা, ওয়াটার ট্যাক্সি ও অ্যাম্বুলেন্সের চলাচল অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। প্রতিবেদনে বলা হয়, বৃষ্টির অভাব, বায়ুমণ্ডলীয় চাপ, পূর্ণিমা ও সমুদ্রের স্রোতের কারণে ভেনিসে সংকট সৃষ্টি হয়েছে।
সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) পরিবেশবাদী সংগঠন লেগাম্বিয়ান্তে জানিয়েছে, ইতালির নদী ও হ্রদগুলো পানির অভাবে মারা যাচ্ছে। সংগঠনটি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, দেশের উত্তরাঞ্চলে এ ধরনের সমস্যা বেশি দেখা যায়।
তারা বলছে, আল্পস থেকে অ্যাড্রিয়াটিক সাগর পর্যন্ত বহমান ইতালির দীর্ঘতম নদী “পো” বছরের এই সময়ে তার স্বাভাবিক স্তরের ৬১% নীচে নেমে গেছে।
২০২২ সালের জুলাই মাসে ইতালি “পো” অববাহিকায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে। ইতালির প্রায় এক তৃতীয়াংশ কৃষিপণ্য এই অববাহিকায় উৎপাদিত হয়। ওই সময় নদীটি ৭০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ খরার মুখোমুখি হয়েছিল।
এছাড়া উত্তর ইতালির লেক গার্ডায় পানির স্তর রেকর্ড সর্বনিম্নে নেমে এসেছে। এতে হ্রদটির মধ্যবর্তী ছোট দ্বীপ সান বিয়াজোতে হেঁটেই যাওয়া যাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত ১১৫ দিন ধরে একটি বায়ুমণ্ডলীয় উচ্চ চাপ পশ্চিম ইউরোপের আবহাওয়া নিয়ন্ত্রণ করছে। এটি হালকা তাপমাত্রার দিকে পরিচালিত করে, যা সাধারণত বসন্তের শেষের দিকে দেখা যায়।
তবে, সাম্প্রতিক আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আগামী দিনে আল্পস পর্বতে তুষারপাত এবং সংলগ্ন এলাকায় বৃষ্টির ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।
ইতালির বিজ্ঞান গবেষণা ইন্সটিটিউট সিএনআর এর আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ মাসিমিলিয়ানো পাসকুই বলেছেন, “আমরা একটি জল সংকটের মধ্যে আছি যা ২০২০-২০২১ সালের শীতকাল থেকে ধীরে ধীরে তীব্রতর হচ্ছে। এটি কাটিয়ে উঠতে আমাদের উত্তর-পশ্চিমে ৫০ দিনের মধ্যে ৫০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের প্রয়োজন।”