বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশসহ অনেক দেশই বড় ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। এ কারণে নতুন করে জলবায়ু শরণার্থী সৃষ্টি হতে পারে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।
তিনি বলেন, চীন, ভারত ও নেদারল্যান্ডস যেমন ঝুঁকিতে রয়েছে, তেমনই কায়রো থেকে জাকার্তা ও লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে কোপেনহেগেন পর্যন্ত প্রতিটি মহাদেশের মেগা-শহরগুলো বড় বিপর্যয়ের মুখোমুখি হবে।
এদিকে বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা জানিয়েছে, ঢাকা, মুম্বাই, সাংহাই, ব্যাংকক, জাকার্তা, মাপুতো, লাগোস, কায়রো, লন্ডন, কোপেনহেগেন, নিউইয়র্ক, লস অ্যাঞ্জেলেস, বুয়েনস আইরেস এবং সান্তিয়াগো সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে সবচেয়ে বেশি হুমকির মুখে পড়েছে।
মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) গ্লোবাল সি-লেভেল রাইজ অ্যান্ড ইমপ্লিকেশনস শিরোনামে এক প্রতিবেদনে এসব কথা জানানো হয়।
আন্তোনিও গুতেরেস জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে বলেন, কম উচ্চতার উপকূলীয় অঞ্চলে বসবাস করা প্রায় ৯০০ মিলিয়ন মানুষ এই বিপর্যয়ের সরাসরি শিকার হবে।
তিনি বলেন, অপেক্ষাকৃত নিচু দেশগুলো চিরতরে অদৃশ্য হয়ে যেতে পারে।
তিনি আরও বলেন, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে এটি শুধুমাত্র ছোট দ্বীপ রাষ্ট্রগুলিই ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত জাতিসংঘের আন্তঃসরকার প্যানেল (আইপিসিসি) বলছে, ১৯০০ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ১৫-২৫ সেন্টিমিটার বেড়েছে।
প্রাক-শিল্প যুগের তুলনায় যদি পৃথিবী মাত্র দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস উষ্ণ হয়, তবে ২১০০ সাল নাগাদ সেই স্তরগুলো আবার ৪৩ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পাবে।
আইপিসিসি বলছে, যদি এটি তিন বা চার ডিগ্রি সেলসিয়াস উষ্ণ হয়। তবে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ৮৪ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে।
জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, এই শতাব্দীর শেষ নাগাদ বিশ্বে তাপমাত্রা ২.৪-২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেতে পারে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, নদীভাঙন, ঘূর্ণিঝড় এবং লবণাক্ত পানির কারণে অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হওয়ার এবং জলবায়ু উদ্বাস্তু হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
২০২১ সালের বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০৫০ সালের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার অভ্যন্তরীণ জলবায়ু উদ্বাস্তুদের এক তৃতীয়াংশ বাংলাদেশে থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।