পূর্বাঞ্চলীয় বাখমুত শহরের কাছে একটি সেতু উড়িয়ে দিয়েছে ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এটি ইঙ্গিত দিচ্ছে ইউক্রেনীয় সেনারা অঞ্চলটি থেকে পিছু হটার। ইউক্রেনে আক্রমণের বর্ষপূর্তির আগে বাখমুত দখল রুশ সেনাদের মনোবল বাড়ানোর ক্ষেত্রে তাৎপর্যপূর্ণ হতে পারে।
ডনেস্কের একটি আঞ্চলিক সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, সোমবার সেনারা সেতুটি উড়িয়ে দিয়েছে। তবে ইউক্রেন বাখমুত ছাড়ার পরিকল্পনার কথা অস্বীকার করে আসছে। টানা ছয় মাস ধরে তুমুল লড়াই ও ভারী গোলাবর্ষণ করে আসছে রুশ সেনারা।
২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে আগ্রাসনের বর্ষপূর্তির আগেই বাখমুত দখলের জন্য সর্বোচ্চ মনোযোগ দিচ্ছে রাশিয়া। ইউক্রেন ও দেশটির পশ্চিমা মিত্ররা গত সপ্তাহ থেকে বলে আসছেন, রাশিয়া নতুন একটি আক্রমণ শুরু করেছে। বসন্তের আগে নতুন পশ্চিমা অস্ত্রের সরবরাহ পৌঁছার আগে তারা নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করতে চাইছে।
সোমবার ব্রাসেলসে সাংবাদিকদের বলেছেন, এটি স্পষ্ট যে আমরা সামরিক সরঞ্জামের প্রতিযোগিতায় রয়েছি।
টানা কয়েক মাস ধরে একাধিক ব্যর্থতার পর বাখমুত দখল করতে পারা রাশিয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য হবে। ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রিত আরও দুটি বড় শহর দখলের ভিত্তি হতে পারে শহরটি।
রুশ সেনারা বাখমুতের দক্ষিণ ও উত্তরের এলাকা দখল করে আছে। তারা চেষ্টা করে যাচ্ছে শহরটিতে ইউক্রেনীয় সেনাদের ঘিরে ফেলতে।
ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের সামরিক মুখপাত্র সেরহি চেরেভাটি বলেছেন, বাখমুতের কাছে থাকা রুশরা সাঁজোয়া যানের বদলে মানবশক্তির ওপর বেশি নির্ভরশীল। রুশরা ছোট কৌশলগত গ্রুপ পাঠাচ্ছে ইউক্রেনীয় সেনাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে। ভারী সরঞ্জাম দিয়ে হামলার চেষ্টা করা হচ্ছে না কারণ সেগুলোতে হামলা চালানোর সক্ষমতা রয়েছে ইউক্রেনের।
বাখমুত দখলে রাশিয়ার লড়াই শুরু হয়েছে জুন মাসে। এটি যুদ্ধের একটি রক্তাক্ত সংঘাতে পরিণত হয়েছে। শহরটি দখলে সামরিক শক্তি কেন্দ্রীভূত করেছে মস্কো।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পোস্টে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে, শহরটিতে ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী ব্যাপক হতাহতের শিকার হয়েছে। বিশেষ করে অক্টোবরে হাজারো নতুন সেনা রাশিয়া মোতায়েনের পর। ইউক্রেনের প্রকাশিত ড্রোন ফুটেজে রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে কবরস্থান দেখা গেছে। যা ইঙ্গিত দিচ্ছে রাশিয়ারও প্রাণহানি ব্যাপক।
সোমবার উড়িয়ে দেওয়া সেতুটি বাখমুত ও কস্টিয়ান্টিনিভকা শহরের মধ্যে অবস্থিত। সেতু উড়িয়ে দেওয়া ছাড়াও সাংবাদিকদের প্রবেশে নতুন বিধিনিষেধ জারি করেছে ডনেস্ক আঞ্চলিক প্রশাসন। তারা সতর্ক করে বলেছে, রুশ অগ্রবর্তী সেনাদল শহরে ঢুকে পড়ার চেষ্টা করছে।
এর আগে সোমবার রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বাখমুতের কাছে ক্রাসনা হোরা নামের একটি শহর দখলের দাবি করেছে। ইউক্রেনীয় কর্মকর্তা চেরেভাটি এমন দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন।