ইরানে মাহশা আমিনি হত্যার ঘটনায় আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে আন্তর্জাতিক দাবা প্রতিযোগিতায় হিজাব পরিধান না করায় নিজ দেশে ফিরতে পারছেন না দাবাড়ু সারা খাদেম।
ইরানে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। তিনি এখন স্বামী ও এক বছর বয়সী ছেলেকে নিয়ে স্পেনের দক্ষিণাঞ্চলে নির্বাসনে রয়েছেন।
এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
২৫ বছর বয়সী এই নারীকে বিশ্বের অন্যতম প্রতিশ্রুতিশীল দাবাড়ু হিসেবে বিবেচনা করা হয়। হিজাব না পরে খেলার সিদ্ধান্তের আগে ভেবেছিলেন হয়ত তাকে সতর্ক করা হবে। তবে পরিস্থিতি এত ভয়াবহ হতে পারে তা সম্পর্কে তার কোনো ধারণা ছিল না।
বিবিসি’র কাছে খাদেম ও তার পরিবার তাদের নির্দিষ্ট অবস্থানের কথা প্রকাশ না করার অনুরোধ করেছেন।
তাদের আশঙ্কা, ইরান থেকে হাজার মাইল দূরে হলেও ঠিকানা প্রকাশ হলে তাদের ওপর হামলা হতে পারে।
ইরানি নারীদের দেশে ও বিদেশে প্রকাশ্যে বের হওয়ার ক্ষেত্রে হিজাব পরা বাধ্যতামূলক। গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে পুলিশ হেফাজতে ২২ বছর বয়সী কুর্দি নারী মাহশা আমিনির মৃত্যুর পর ইরানে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এই বিক্ষোভের প্রতি সংহতি জানিয়ে দেশে ও বিদেশে অনেক ইরানি নারী হিজাব না পরেই প্রকাশ্যে বের হচ্ছেন।
গত বছর ডিসেম্বরে কাজাখস্তানে হিজাব না পরে আন্তর্জাতিক দাবা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন সারা খাদেম।
তিনি বলেছেন, হিজাব না পরার সিদ্ধান্তটি ধীরে ধীরে তার মনে স্থান নিয়েছে। ইরানি প্রতিযোগিরা শুধু ক্যামেরার সামনে হিজাব পরেন। এটিকে তার কাছে ভণ্ডামি মনে হয়েছে। ইরানে আন্দোলনে নারী ও মেয়েরা যে আত্মত্যাগ করছেন নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে, সেটির বিবেচনায় অন্তত হিজাব না পরে ক্যামেরার সামনে খেলার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
আট বছর বয়স থেকে দাবা খেলছেন সারা খাদেম। ইরানের কঠোর রক্ষণশীল পোশাকবিধি এর আগেও তিনি অমান্য করেছেন। ২০২০ সালে তেহরান বিমানবন্দরে ইউক্রেনের একটি যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ ভূপাতিত করে ইরান। এতে ১৭৬ জনের প্রাণহানি ঘটে। ওই সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি বলেছিলেন, জাতীয় দল ছেড়ে দেবেন।
গোল্ডেন ভিসা নিয়মের আওতায় তিনি ও তার পরিবার স্পেনে অবস্থান করতে পারছেন। এই আইনে প্রায় পাঁচ লাখ ডলার মূল্যের সম্পদ কিনলে স্পেনের বাসিন্দা হওয়া যায়।