আগ্রাসন শুরুর প্রথম সপ্তাহের পর চলতি মাসে সবচেয়ে বেশি রুশ সেনা ইউক্রেনে নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে কিয়েভ কর্তৃপক্ষ। তাদের তথ্য অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারি মাসে দিনে গড়ে ৮২৪ জন রুশ সেনা প্রাণ হারাচ্ছেন।
গত সপ্তাহে ইউক্রেনের বিদায়ী প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওলেক্সি রেজনিকভ জানিয়েছিলেন, ২৪ ফেব্রুয়ারির কাছাকাছি সময়ে একটি নতুন আক্রমণের আশংকা করা হচ্ছে। এক বছর আগে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রতিবেশী দেশ ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রুশ বাহিনী।
অভিযান শুরুর কয়েক মাসের মধ্যে ইউক্রেনের বিদ্রোহী অধ্যুষিত পূর্বাঞ্চলের কয়েকটি অঞ্চলের দখল নেয় রাশিয়ার সেনারা। এরপর ‘গণভোটের’ মাধ্যমে লুহানস্ক, দোনেৎস্কসহ চারটি অঞ্চলকে নিজেদের মানচিত্রে অন্তর্ভূক্ত করে নেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
যুদ্ধ শুরুর প্রথম বার্ষিকী ঘিরে রাশিয়া যে নতুন হামলা শুরু করবে, তা আগে ধারণা করেছিল ইউক্রেন ও তার পশ্চিমা মিত্র দেশগুলো। ক’দিন আগে লুহানস্ক এবং দোনেৎস্কের গভর্নরসহ কিছু স্থানীয় রাজনীতিবিদ দাবি করেছেন, আক্রমণ ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। দেশটির পূর্বে বাখমুতের চারপাশে তীব্র কয়েকটি লড়াইও হয়েছে।
রাশিয়ার ভাড়াটে বাহিনীর (ওয়াগনার) প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিন রোববার জানান, বাখমুতের কাছে একটি বসতি দখল করেছে তারা।
গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রতিবেশী দেশ ইউক্রেনে আক্রমণ চালায় রাশিয়া। সেনাবাহিনীর সঙ্গে আক্রমণে অংশ নিচ্ছে ওয়াগনার গ্রুপের যোদ্ধারা।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী ইয়েভজেনি প্রিগোজিনের নিয়ন্ত্রণাধীন ওয়াগনার গ্রুপের প্রায় ৫০ হাজার যোদ্ধা ইউক্রেনে লড়াই করছে। এদের অন্তত ৮০ শতাংশকে রাশিয়ার কারাগার থেকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
ইউক্রেনের তথ্য অনুসারে, ফেব্রুয়ারি মাসে দিনে গড়ে ৮২৪ জন রুশ সেনা নিহত হচ্ছে; যা জুন এবং জুলাই মাসের চেয়ে চারগুণেরও বেশি। সে সময়ে দিনে গড়ে ১৭২ জন রুশ সেনা নিহত হয়েছিল।
ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী দাবি করছে, পূর্ণ মাত্রায় আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর এ পর্যন্ত ১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৮০ জন রুশ সেনা নিহত হয়েছে।
গত নভেম্বরে দক্ষিণের প্রধান শহর খেরসন থেকে পশ্চাদপসরণ করার পর থেকে রুশ বাহিনী ইউক্রেনে সামান্য অগ্রগতি করেছে। গত মাসে তীব্র যুদ্ধের পর বাখমুতের উত্তরে সোলেদার শহর দখল করে রুশ সেনারা।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার প্রত্যাশিত আক্রমণ প্রতিহতে ভারী অস্ত্র চেয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর কাছে আবেদন করেছেন। এতে সায় দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। গত সপ্তাহে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পাঠাতে সম্মত হয়েছে বাইডেন প্রশাসন; যা ইউক্রেনকে তার আক্রমণের পাল্লা দ্বিগুণ করতে সাহায্য করবে।
তবে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি প্রধান চাওয়া এখন ফাইটার জেট। চলতি সপ্তাহে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে সফরের সময় তিনি বলেছিলেন, ‘শক্তিশালী ইংরেজ বিমানের জন্য আপনাদের সবাইকে আগাম ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’
সূত্র: বিবিসি