যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে রহস্যময় গোয়েন্দা বেলুন নিয়ে মুখ খুলেছে চীন। মন্টানাতে এই বেলুন দেখা যায়। এটি আলাস্কার আল্যাউ আইল্যান্ডস ও কানাডার পথে ছিল। বৃহস্পতিবার মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, তারা নিশ্চিত যে এই গোয়েন্দা বেলুনটি এসেছে চীন থেকে।
এক সংবাদ সম্মেলনে পেন্টাগনের মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল প্যাট্রিক রাইডার বলেছেন, বেলুনটি বাণিজ্যিক বিমান চলাচল সীমার উপরে রয়েছে। ভূমিতে থাকা মানুষের জন্য সামরিক বা শারীরিক কোনও হুমকি নয় তা।
ঘটনা যাচাইয়ের আগে জল্পনার বিষয়ে সতর্ক করেছে চীন। চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, তারা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করছে। উভয়পক্ষকে শান্ত ও সতর্ক থাকারও আহ্বান জানানো হয়েছে।
চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং বলেছেন, গোয়েন্দা বেলুন নিয়ে প্রতিবেদন যাচাইয়ের চেষ্টা করছে বেইজিং। তথ্য স্পষ্ট হওয়ার আগে জল্পনা ও অতিরঞ্জিত করা সঠিকভাবে বিষয়টি সমাধানে সহযোগিতা করবে না।
মুখপাত্র আরও বলেন, চীন একটি দায়িত্বশীল দেশ এবং সবসময় কঠোরভাবে আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলে। কোনও সার্বভৌম দেশের ভূখণ্ড বা আকাশসীমা লঙ্ঘন করার কোনও ইচ্ছা আমাদের নেই।
তবে শুক্রবার রাতে এক বিবৃতিতে মার্কিন আকাশসীমায় থাকা বেলনুটিকে বেসামরিক উল্লেখ করে দুঃখ প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে গোয়েন্দা বেলুন বলে যেটিকে সন্দেহ করা হচ্ছে তা মূলত একটি বেসামরিক উড়োজাহাজ। যা আবহাওয়া বিষয়ক গবেষণার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে।
চীনা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, এই উড়োজাহাজের গতি সীমিত এবং বাতাসের কারণে পরিকল্পিত রুট থেকে বিচ্যুত হয়ে পড়েছে।
বেলুনটি শনাক্ত করেছে নর্থ আমেরিকান অ্যারোস্পেস ডিফেন্স কমান্ড (নোরাড)। যদিও কর্তৃপক্ষ বেলুনটির নির্দিষ্ট অবস্থান জনগণের জন্য প্রকাশ করেনি।
মন্টানাতে ম্যাল্মস্টর্ম বিমানঘাঁটি রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের যে তিনটি বিমানঘাঁটিতে মিনিটম্যান থ্রি আন্তমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনা করা হ,য় ম্যাল্মস্টর্ম সেগুলোর একটি। এর ফলে জল্পনা ছড়িয়েছে, বেলুনটি হয়তো ক্ষেপণাস্ত্রের ওপর নজর রাখছে।
গোয়েন্দা বেলুনটির হুমকি নিয়ে আলোচনার জন্য বুধবার বৈঠক করেছেন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তা জেনারেল মার্ক মাইলি।
ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, জনগণের কাছে বেলুনটির অস্তিত্বের কথা জানান দেওয়ার বেশ কয়েক দিন আগে থেকেই এটির ওপর নজর রাখছিল কর্তৃপক্ষ। বেলুনটিকে গুলি করে ভূপাতিত করার কথা বিবেচনা করা হয়েছিল। কিন্তু প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে পরামর্শ দেওয়া হয়, এতে মাটিতে থাকা মানুষেরা ধ্বংসাবশেষে আহত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
সূত্র: নিউজউইক, বিবিসি, আল জাজিরা